ভারতের অভিষিক্ত ‘বুড়ো’দের গল্প

প্রত্যেক ক্রিকেটারই শৈশব থেকেই স্বপ্ন দেখেন একদিন জাতীয় দলে খেলার, নিজের দেশকে প্রতিনিধিত্ব করার। তবে সবার কি আর সে ভাগ্য হয়! কেউ কেউ আবার শেষ বয়সে এসে জাতীয় দলে খেলার সৌভাগ্য অর্জন করেন। কেউ কেউ আজীবন ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলেই নিজের ক্যারিয়ার শেষ করেন। ব্যাট প্যাড তুলে রাখার বয়সে যারা ক্রিকেটে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়িয়েছেন তাঁরা নিশ্চয়ই সৌভাগ্যবান।

প্রত্যেক ক্রিকেটারই শৈশব থেকেই স্বপ্ন দেখেন একদিন জাতীয় দলে খেলার, নিজের দেশকে প্রতিনিধিত্ব করার। তবে সবার কি আর সে ভাগ্য হয়! কেউ কেউ আবার শেষ বয়সে এসে জাতীয় দলে খেলার সৌভাগ্য অর্জন করেন। কেউ কেউ আজীবন ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলেই নিজের ক্যারিয়ার শেষ করেন। ব্যাট প্যাড তুলে রাখার বয়সে যারা ক্রিকেটে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়িয়েছেন তাঁরা নিশ্চয়ই সৌভাগ্যবান।

ভারতের ক্রিকেট, বা বলা উচিৎ উপমহাদেশের ক্রিকেট বরাবরই দলগঠনে তরুণদের প্রাধান্য দেয়। তবে, কেউ কেউ এই অচলায়তন ভেঙে একটু বয়স করেই ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট খেলার সুযোগ পান। তেমনই কিছু ভারতীয়কে নিয়ে আমাদের এবারের আয়োজন।

  • সিকে নায়ডু: ৩৬ বছর ২৩৮ দিন

যে বয়সে ক্রিকেটাররা ব্যাট প্যাড তুলে রাখেন সেই বয়সে টেস্ট ক্রিকেটে ভারতের হয়ে খেলেন সি কে নায়ডু বা কোত্তারি কানাকাইয়া নায়ডু। ১৯৩২ সালে ভারতের প্রথম টেস্ট অধিনায়কও ছিলেন তিনি। মাত্র সাত টেস্ট খেললেও তাকে মনে করা হয় সেই যুগে ভারতীয় দলের ভিত্তি গড়ে দিয়েছিলেন তিনি।

তাঁর জন্য বয়স যেন ছিল স্রেফ একটা সংখ্যা। ক্যারিয়ারে যতদিন পর্যন্ত নিজের মধ্যে সম্ভাবনা দেখেছেন ততদিন তিনি খেলেছেন। সিকে নায়ডু প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে পদ্মা ভূষণ উপাধি পান। প্রথম সবকিছুই যেন অন্যরকম! ভারতের প্রথম টেস্ট অধিনায়ককে তাই বিশেষভাবেই মনে রাখা হয়।

  • শুঁটে ব্যানার্জি: ৩৭ বছর ১২৪ দিন

তাঁর প্রকৃত নাম হল শরবিন্দু নাথ ব্যানার্জি। ব্যানার্জির ভারতের হয়ে ৩৭ বছর বয়সে টেস্ট অভিষেক হয়। বাঙাল এই ক্রিকেট পুরো ক্যারিয়ারের মাত্র এক টেস্টেই খেলেছেন।

১৯৩৬ এবং ১৯৪৬ সালে ভারতের হয়ে ইংল্যান্ড সফরে গেলেও মূল একাদশে জায়গা পাননি তিনি। মাত্র এক টেস্ট খেললেও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১৩৮ ম্যাচে ৩৭১৫ রান করেছেন তিনি! সেই সাথে ৩৮৫ উইকেট নিজের নামে করেছেন তিনি।

  • কেকি তারাপোর – ৩৭ বছর ৩২৯ দিন

বাঁ-হাতি অর্থোডক্স বোলার কেকি খুরশেদজি টেস্ট ক্যারিয়ারে মাত্র এক ম্যাচ খেলেন! সেটিও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। ৪০টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ১৪৮ উইকেট শিকার করেন তিনি। কেকি তারাপোর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভারতের হয়ে বেশি ম্যাচ না পেলেও ভারতীয় দলে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

১৯৬৭ সালে ইংল্যান্ড ও ১৯৭১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ভারত দলের ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার বড় করতে না পারলেও তার সময়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অন্যতম সেরা বোলার ছিলেন তিনি।

  • কোটা রামাস্বামী – ৪০ বছর ৩৯ দিন

কোটা রামাস্বামী দ্বিতীয় বয়স্ক ক্রিকেটার হিসেবে ভারতের হয়ে খেলেছেন। বাঁ-হাতি এই ব্যাটসম্যান ক্যারিয়ারে দুই টেস্টে খেলেন। ৫৬.৬৬ গড়ে ১৭০ রান করেন তিনি! সর্বোচ্চ ৬০ রানের ইনিংস খেলেন। ৫৩টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ২৮.৯১ গড়ে ২৪০০ রানের পাশাপাশি ৩০ উইকেট শিকার করেন তিনি। রামাস্বামীকে একজন আগ্রাসী ব্যাটসম্যান হিসেবেই ধরা হতো। এই ক্যামব্রিজ ব্লু কেবল ক্রিকেট নয়, টেনিসও খেলতেন চুটিয়ে।

  • রুস্তমজি জামশেদজি – ৪১ বছর ২৭ দিন

৪১ বছর বয়সে কেউ ভারতের হয়ে খেলার স্বপ্ন আদৌ দেখতে পারে? হ্যাঁ, রুস্তমজি জামশেদজি সেই স্বপ্ন দেখেছেন এবং পূরণও করেছেন। ৪১ বছর বয়সে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তার টেস্ট অভিষেক হয়, সেটিই তার ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচও ছিল।

অভিষেক টেস্টেই ১৩৭ রানে ৩ উইকেট শিকার করেন তিনি। ভারত সেই ম্যাচে অবশ্য হেরে যায়। ২৯টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ২২.১২ গড়ে ১৩৪ উইকেট শিকার করেন রুস্তমজি।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...