ব্রাভো, ডোয়াইন ব্রাভো!

দশ দলের ক্রিকেটীয় লড়াই নিয়ে মাঠে গড়িয়ে পড়েছে এবারের আইপিএল। প্রথম ম্যাচেই চেন্নাই সুপার কিংস মুখোমুখি হয়েছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। আর সেই ম্যাচেই চেন্নাইয়ের অলরাউন্ডার ডোয়াইন ব্রাভো আইপিএলের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারিতে পরিণত হয়েছেন। সেদিন নিতিশ রানার উইকেট নেয়ার পরেও দেখা মিলে ব্রাভোর সেই নাচ।

ক্যারিবীয় ক্রিকেটারদের উপস্থিতি কিংবা উদযাপন সবসময়ই ক্রিকেট মাঠে বাড়তি সৌন্দর্য্য ছড়ায়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের অলরাউন্ডার ডোয়াইন ব্রাভোও তাঁর ব্যতিক্রম নন। বিশেষ করে উইকেট পাবার পর তাঁর নাচ আইপিএলের অন্যতম ট্রেডমার্ক দৃশ্য। তবে এসবের মাঝেও লুকিয়ে আছে বিরাট এক সৌন্দর্য্য। যেভাবে তিনি উইকেট নেয়াটাকে একটা শিল্পে পরিণত করেছেন।

দশ দলের ক্রিকেটীয় লড়াই নিয়ে মাঠে গড়িয়ে পড়েছে এবারের আইপিএল। প্রথম ম্যাচেই চেন্নাই সুপার কিংস মুখোমুখি হয়েছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। আর সেই ম্যাচেই চেন্নাইয়ের অলরাউন্ডার ডোয়াইন ব্রাভো আইপিএলের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারিতে পরিণত হয়েছেন। সেদিন নিতিশ রানার উইকেট নেয়ার পরেও দেখা মিলে ব্রাভোর সেই নাচ।

তবে সেদিনের নাচের, উদযাপনের আরো বিশেষত্ব ছিল। মোট ১৭০ উইকেট নিয়ে এখন তিনি আইপিএলের ইতিহাসের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি। আইপিএলে তাঁর সমান ১৭০ উইকেট নিয়েছেন লাসিথ মালিঙ্গাও।   নাচ, গানে, উদযাপনে মেতে থাকা একজন ক্রিকেটার। বিশ্বের প্রায় সব ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগেই খেলে বেড়ান। তবে সবচেয়ে বড় লিগ আইপিএলেই এই অনন্য কীর্তিটা করে ফেললেন ব্রাভো। প্রতিনিয়িত প্রমাণ করে চলেছেন বল হাতে তিনি কতটা কার্য্যকর।

এছাড়া গত কয়েক বছরে হলুদ জার্সিতে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য বোলারও তিনি। দলটির অধিনায়ক ছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনির মত একজন। ধোনিও চাপের মুখে সবসময় ব্রাভোর হাতেই বল তুলে দিয়েছেন। ধোনিও ব্রাভোর উপর সেই বিশ্বাসটা রাখতেন এবং অধিকাংশ সময়ই সেই বিশ্বাস্যের প্রতিদান দিয়েছেন এই ক্রিকেটার।

তবে ব্রাভোর ক্রিকেট ক্যারিয়ারটা বদলে গিয়েছিল ২০০৬ সালে। ব্রায়ান লারা শেষ ওভারে ব্রাভোর হাতে বল তুলে দিয়েছিলেন। ক্রিজে থাকা যুবরাজের শেষ ছয় বলে প্রয়োজন মাত্র দশ রান। সেই ওভারে যুবরাজকে আউট করে ব্রাভোর সেকি উদযাপন। দুই হাত প্রসারিত করেছিলেন পাখার মত। সেই উদযাপন এখনো ক্রিকেটপ্রেমীদের চোখে ভাসে।

তবে ব্রাভোর প্রতিটা বলই একেকটা শিল্পের মত। যদি মিল খুঁজতে হয় তাহলে হয়তো লাসিথ মালিঙ্গার সাথে তাঁর বোলিং এর কিছুটা মিল খুঁজে পাওয়া যায়। কব্জিটা খুব করে ব্যবহার করেন। যদিও মালিঙ্গা তাঁর অ্যাঙ্গেল ও পেসের জন্য বাড়তি সুবিধা পেতেন। ব্রাভোর এগুলো কিছুই সেভাবে নেই। তবুও ব্রাভোর ডেলিভারিগুলোও হয়ে উঠেছে দারুণ কার্যকর।

এই দুজনই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের অন্যতম সফল পেসার। যদিও তাঁদের সামনে কোন রোল মডেল ছিল না। ফলে এই ফরম্যাটে কীভাবে তাঁরা টিকে থাকবেন সেটা তাঁদের নিজেদেরই আবিষ্কার করতে হয়েছে। তাঁদের সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে কতগুলো বল করবেন, কোথায়, কখন করবেন। তবে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের মডেলটা সবচেয়ে ভালো ভাবে আয়ত্ব করতে পেরেছেন ব্রাভোই।

কিংবদন্তি ক্যারবীয় পেসার মাইকেল হোল্ডিং তাদের সময়ের বোলিং নিয়ে বলেছিলেন, ‘আমরা যখন বোলিং করতাম তখন আমাদের ভাবনা থাকতো শুধু একটা ভালো রান আপ এবং জোরে বল করা। অনেকে এটাই মনে করে। কিন্তু আমি বলি সেখানে কতগুলো এলবিডব্লিউ ছিল, বোল্ড ছিল সেগুলো দেখতে। আমাদেরও বল করার সময় পরিকল্পনা করতে হয়তো, ভাবতে হতো।’

একটা ব্যাপার ঠিক যে, ব্রাভোর বয়স হয়েছে। তারপরও বয়স জয় করে লড়াইটা চালিয়ে যাচ্ছেন। আর সব বয়সে সব কিছু তো আর মানায় না। তবে, টি-টোয়েন্টির সাথে নিজেকে সমন্বয়ের কাজটা ঠিকঠাক মতই করতে পারছেন। আর এখানেই তাঁর স্বার্থকতা।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...