সেই দেখা শেষ দেখা নয়!
তখন ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাস। ফিদেল এডওয়ার্ডসের বয়সটা তখন ৩৯, কিন্তু বোলিংয়ে ধার কমেনি! আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ছিলেন না ৯ বছর, বয়স বেড়েছে তবু ধরে রেখেছেন ফিটনেস ৷ ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে গতির ঝড় তুলে নির্বাচকদের বাধ্য করলেন জাতীয় দলে ফের নাম তুলতে। যে বয়সে সবাই অবসরে গিয়ে কমেন্ট্রি কিংবা কোচিংয়ের দিকে ঝোঁকেন সে বয়সে গতির ঝড় তুলে গায়ে জড়ালেন জাতীয় দলের জার্সি।
তখন ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাস। ফিদেল এডওয়ার্ডসের বয়সটা তখন ৩৯, কিন্তু বোলিংয়ে ধার কমেনি! আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ছিলেন না ৯ বছর, বয়স বেড়েছে তবু ধরে রেখেছেন ফিটনেস৷ ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে গতির ঝড় তুলে নির্বাচকদের বাধ্য করলেন জাতীয় দলে ফের নাম তুলতে। যে বয়সে সবাই অবসরে গিয়ে কমেন্ট্রি কিংবা কোচিংয়ের দিকে ঝোঁকেন সে বয়সে গতির ঝড় তুলে গায়ে জড়ালেন জাতীয় দলের জার্সি।
হ্যাঁ, বলছিলাম নয় বছর পর জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া ইনজুরি আর অধারাবাহিক এক ক্যারিবিয়ান গতিরাজ ফিদেল এডওয়ার্ডসের কথা।
নয় বছর পর ২০২১ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি দলে ডাক পান ফিদেল। সর্বশেষ ২০১২ সালে খুলনায় বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলেছিলেন শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ! এরপর ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে তাঁকে দেখা গেলেও জাতীয় দলের ধারে কাছে আর যেতে পারেননি। তবে কোনো কিছুই যে অসম্ভব নয় সেটাই প্রমাণ করে দেখালেন ফিদেল, কঠোর পরিশ্রম আর পারফরম্যান্স শেষ পর্যন্ত তাঁকে পুনরায় ফিরিয়ে আনলো জাতীয় দলে।
প্রায় ৯ বছর পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেছেন ফিদেল। দীর্ঘ বিরতির পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার তালিকায় অবশ্য সবার উপরে নাম লেখাতে পারেননি তিনি। এই তালিকায় সবার উপরে আছেন লিয়াম প্লাংকেট, ৯ বছর ২৬৯ দিন পর জাতীয় দলের টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডে ফিরেছিলেন তিনি। এরপর আছেন আরেক ইংলিশ ব্যাটসম্যান জো ডেনলি, যিনি ৮ বছর ২৪৯ দিন পর জাতীয় দলে ফিরেছিলেন। এবং তিন নম্বরেই আছেন ফিদেল এডওয়ার্ডস! যিনি ৮ বছর ১৫৫ দিন পর টি-টোয়েন্টিতে জাতীয় দলে পা দিয়েছেন।
টানা সবচেয়ে বেশি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ মিস করার তালিকায় অবশ্য সবার উপরেই রয়েছেন ফিদেল এডওয়ার্ডস। ওয়েস্ট ইন্ডিজের খেলা সর্বশেষ টানা ৮৫ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ছিলেন না ফিদেল। তারপর জো ডেনলি ৭৯ ও লিয়াম প্লাঙ্কেট রয়েছেন টানা ৭৪ ম্যাচ মিসের তালিকায়।
টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক হয় ২০০৩ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে, একই বছর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হয় ওয়ানডে অভিষেক। তবে ইনজুরিতে ক্যারিয়ারের অনেকটা সময়ই বাইরে কাটাতে হয় তাকে। টেস্ট অভিষেকেই প্রথম ইনিংসে লঙ্কানদের বিপক্ষে নেন ৩৬ রানে ৫ উইকেটে!
ওয়ানডেতেই সেই ধারা বজায় রাখেন এডওয়ার্ডস, হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মাত্র ২২ রানে ৬ উইকেট নিয়ে রেকর্ড গড়েন তিনি। ২০১৫ পর্যন্ত তিনি একমাত্র বোলার ছিলেন যে ওয়ানডে অভিষেকেই ৬ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েন। টনি ডোডেমেইডের পর তিনি একমাত্র বোলার হিসেবে টেস্ট ও ওয়ানডে দুই ফরম্যাটেই অভিষেকে ৫ উইকেট শিকার করেন।
সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছিলেন ২০১২ সালে তাহলে এই ৯ বছর তিনি কোথায় ছিলেন, কি করেছেন প্রশ্ন জাগার কথা। এই ৯ বছরের এডওয়ার্ডস নিজেকে নিয়ে কাজ করেছেন, খেলেছেন ঘরোয়া লীগ ও ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট। ২০১৩ সালে তিনি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএলে) রংপুর রাইডার্সের হয়ে খেলেন এছাড়া একই বছর ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএলে) তিনি রাজস্থান রয়েলসে খেলার সুযোগ পান।
ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (সিপিএলে) ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো রেড স্টিলের হয়ে ১৩-১৪ আসরে খেলেন। এরপর ইংল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেট কাউন্টিতে হ্যাম্পাশায়ের হয়ে ৫ বছর খেলেন! যদিও বর্তমানে লোনে তিনি বার্মিংহামে খেলছেন। এছাড়া ২০১৫ সিপিএলে সেন্ট লুসিয়া জুকস ও বিপিএলে সিলেট সুপার সিক্সের হয়ে খেলেন তিনি। চলতি বছরের টি-টেনে গতির ঝড় তুলে নয় বছর পর নির্বাচকদের নজর কেড়ে আবারো জাতীয় দলে জায়গা করে নেন ফিদেল।
ইনজুরিতে বার বার ছিটকে গেলেও দমে যাননি ৩৯ বছর বয়সী ফিদেল। নিজের প্রতিভা আর সামর্থ্যের উপর ভরসা রেখে করে গেছেন জাতীয় দলে ফেরার অদম্য চেষ্টা। এই বয়সেও তার নিখুঁত লাইন লেন্থ তিনি যে এখনো ফুরিয়ে যাননি সেটি প্রমাণ করে চলেছেন বার বার। পরে অবশ্য বিশ্বকাপটা আর খেলতে না পারলেও ফিরে এসে বুঝিয়েছেন লড়াইটা ভুলে যাননি তিনি।