ভারতের ‘অল ফরম্যাট’ নেতা

মহেন্দ্র সিং ধোনির আগে যেহেতু টি-টোয়েন্টি ছিলো না, তাই বাকি অধিনায়কদের আসলে সুযোগই ছিলো না তিন ফরম্যাটে অধিনায়কত্ব করার। ফলে ধোনি এবং এখনকার তিন ফরম্যাটের অধিনায়ক বিরাট কোহলির নামটা অনুমান করা যায়। কিন্তু এর মধ্যে আছেন আরও দু’জন।

ভারতের ক্রিকেট অধিনায়ক কত জন?

আঙুল গুনে বের করতে সময় লাগবে। আর আজকাল তিনটে ফরম্যাট বলে অধিনায়ক আরও বেড়ে গেছে। সেই সি কে নাইডু থেকে বিরাট কোহলি পর্যন্ত কত অধিনায়ক এসেছেন। কিন্তু এর মধ্যে চার জন অধিনায়ক বিশেষ আলোচনার দাবি রাখেন।

এই চার জন অধিনায়কই কেবল ভারতকে সব ফরম্যাটে নেতৃত্ব দিতে পেরেছেন। মহেন্দ্র সিং ধোনির আগে যেহেতু টি-টোয়েন্টি ছিলো না, তাই বাকি অধিনায়কদের আসলে সুযোগই ছিলো না তিন ফরম্যাটে অধিনায়কত্ব করার। ফলে ধোনি এবং এখনকার তিন ফরম্যাটের অধিনায়ক বিরাট কোহলির নামটা অনুমান করা যায়। কিন্তু এর মধ্যে আছেন আরও দু’জন। সবমিলিয়ে তালিকাটা আকর্ষনীয়ই বটে।

  • বীরেন্দ্র শেবাগ

বীরেন্দ্র শেবাগ বিনা তর্কে ভারতের ইতিহাসের সবচেয়ে হার্ড হিটার ব্যাটসম্যান। তিনি ব্যাট হাতে যেকোনো সংস্করণেই একাই খেলার ফলাফল পরিবর্তন করতে পারতেন। জাতীয় থাকাকালীন সময়ে ভারতীয় ব্যাটিং লাইন আপের গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার তিনি।

খুব অল্প সময়ের জন্য হলেও জাতীয় দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি। অধিনায়ক হিসেবে খেলেছেন ৪ টেস্ট, ১২ ওয়ানডে এবং এক টি-টোয়েন্টি। ৪ টেস্টে দলকে এনে দিয়েছিলেন ২ জয় এবং ১ ড্র। নিয়মিত অধিনায়ক না থাকায় দেশের মাটিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এবং দেশের বাইরে বাংলাদেশ,অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এছাড়াও ১২ ওয়ানডেতে দলকে জিতিয়েছেন ৭ ম্যাচ। সাফ্যল্যের হার ৫৮.৩৩ শতাংশ। ভারতের ইতিহাসের প্রথম টি-টুয়েন্টিতে নেতৃত্ব দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরেছিলেন।

  • মহেন্দ্র সিং ধোনি

ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা অধিনায়ক। তিনি দলকে জিতিয়েছেন রঙ্গিন পোষাকের সকল বৈশ্বিক শিরোপা। একমাত্র অধিনায়ক যিনি আইসিসির সকল শিরোপা জিতিয়েছেন দলকে। দলকে পরিচালনায় খুবই দক্ষ ছিলেন ধোনি। ঠান্ডা মাথায় সিদ্ধান্ত নিতে পটু ছিলেন।

দলকে ৬০ টেস্টে নেতৃত্ব দিয়ে জিতিয়েছেন ২৭ টেস্ট। তার নেতৃত্বে ভারত ড্র করেছে ১৮ টেস্ট। ড্রেসিং রুমে সিনিয়র-জুনিয়রদের এক সুতোয় গেথে রেখেছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। তাই তার সাফল্য পেতে বেগ পেতে হয়নি। ওয়ানডেতে ২০০ ম্যাচ নেতৃত্ব দিয়ে ১১০ ম্যাচে জয়লাভ করে ভারত। এখানেও সাফল্যের হার ঈর্ষণীয়। সাফল্যের হার ৫৯.৫২ শতাংশ।

১১০ ম্যাচের মধ্যে ছিলো দুইটি বৈশ্বিক টুর্নামেন্টের ফাইনাল। অধিনায়ক হিসেবে আস্থা রেখেছিলেন রোহিত,কোহলিদের মত তরুণদের উপর। যারা কিনা ধোনিকে এনে দিয়েছে বড় সাফল্য। ক্রিকেটের ক্ষুদ্রতম সংস্করণেও সফল ক্যাপ্টেন কুল। অধিনায়ক হিসেবে খেলেছেন ৭২ ম্যাচ। ৫৯.২৪ শতাংশ ম্যাচ জিতে এখানেও রেখেছেন নিজের সফল অধিনায়কত্বের ছাপ।

  • বিরাট কোহলি

অধিনায়কত্বের রিলে দৌড়ে অধিনায়কের দায়িত্ব পেয়েছেন ক্যাপ্টেন কুলের কাছ থেকে,২০১৪ সালে। এখন পর্যন্ত অধিনায়ক হিসেবে ৫৫ টেস্টে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার মধ্যে জিতেছেন অধিনায়ক হিসেবে সর্বোচ্চ ৩৩ টেস্ট। জানান দিচ্ছেন পূর্বসূরির থেকে কোনো অংশেই কম নন তিনি। চাপের সময় দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়ার গুণ তাকে নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়।

বিরাট ভারতীয় দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন ৮৯ ওয়ানডেতে।  দল জয় পেয়েছে ৬২ ওয়ানডেতে। কিন্তু বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে দলকে এখনো কোনো সাফল্য এনে দিতে পারেননি বিরাট। টি-টুয়েন্টিতে অধিনায়ক হিসেবে আরো দূর্দান্ত কোহলি। ৩৭ টি-টুয়েন্টিতে জয় সংখ্যা ২২। সাফল্যের হার রীতিমত ৭১.৮৩ শতাংশ।

  • অজিঙ্কা রাহানে

রাহানে মূলত বিকল্প অধিনায়ক। তিনি ভারতীয় দলকে সকল সংস্করনেই নেতৃত্ব দিয়েছেন। চলমান অস্ট্রেলিয়া সিরিজেও অধিনায়ক কোহলি অনুপস্থিতিতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন দলকে। ২০১৭ এবং ২০১৮ সালে ২  টেস্টে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন রাহানে। জিতেছেন শতভাগ ম্যাচ। রাহানের অধিনায়কত্বে ব্রিসবেন টেস্টের আগ পর্যন্ত ভারত কোনো টেস্টে হারের মুখ দেখেনি।

রাহানে এখন পর্যন্ত ৩ ওয়ানডে এবং ২ টি-টুয়েন্টিতেও দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ওয়ানডেতে জয়ের রেকর্ড শতভাগ। কিন্তু হেরেছেন মাত্র ১ টি টি-টুয়েন্টি ম্যাচ।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...