সদ্য বাংলাদেশ জাতীয় দলের বোলিং কোচের দায়িত্ব পেয়েছেন সাবেক লংকান স্পিনার রঙ্গনা হেরাথ। আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত তার সাথে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এবং আসন্ন জিম্বাবুয়ে সফর থেকেই দলের সাথে যোগ দিবেন এই লঙ্কান গ্রেট।
জনপ্রিয় ক্রিকেট ভিত্তিক গণমাধ্যম ক্রিকবাজের সাথে এক সাক্ষাৎকারে নিজের পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেন হেরাথ।
আপনি কতটা খুশি বাংলাদেশের বোলিং কোচ হয়ে? এই ভূমিকাটা আপনার জন্য কেমন?
এটা আমার জন্য বেশ সম্মানের বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাথে কাজ করা। যেকোনো সাবেক ক্রিকেটারই চায় কোচিং করাতে। এটা আমার জন্য এক প্রকার স্বপ্ন ছিলো এমন একটা শীর্ষস্থানীয় দেশের সাথে কাজ করবো। এবং আমি বেশ সম্মানিত বিসিবির সাথে যুক্ত হতে পেরে। তিন বছর হয়েছে আমি ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছি এবং আমি চিন্তা করেছি আমি আমার জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা স্পিনারদের সাথে শেয়ার করতে পারবো। একই সময়ে, বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কার কন্ডিশন প্রায় একই, মাইন্ডসেট বলেন কিংবা সংস্কৃতি। আমি বাংলাদেশকে বেছে নেওয়ার একটা কারণ হলো মাইন্ডসেট, প্রস্তুতি এবং অনুশীলন সহ সবকিছুই। যেটা শ্রীলঙ্কার সাথে প্রায় একই।
আপনার সাথে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত চুক্তি করা হয়েছে। এই মেগা ইভেন্টকে সামনে রেখে আপনার মূল লক্ষ্য কি হবে?
যেমনটা আপনি বললেন আমার সাথে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত চুক্তি করা হয়েছে। এবং এর আগে আমাদের জিম্বাবুয়ে, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ডের সাথে সিরিজ আছে। এইক্ষেত্রে, আমি যেটা মনে করি বর্তমানে তাদের মেহেদি মিরাজ, সাকিব আল হাসান, তাইজুল ছাড়াও আরো বেশ কিছু ভালো স্পিনার আছে। আমি মনে করি তারা ভালো করছে। এবং আমি যেটা দেখি যে তারা নিয়মিত সুযোগ পাচ্ছে, যেটা একজন স্পিনারের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। যখন আপনি নিয়মিত সুযোগ পাবেন তখন আপনি আত্মবিশ্বাস তৈরি করতে পারবেন এবং সেই সাথে দলের মধ্যে ভালো পরিবেশও এবং মাইন্ডসেট। যেটা বেশ ভালো এবং আমি ভবিষ্যতেও সেটাই করবো।
আমি বলতে চাই আমরা জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সামনে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবো, সেখানে যদি আমাদের দল জেতার মানসিকতাটা তৈরি করতে পারে এবং এটা যদি অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ডের সাথেও ধরে রাখতে পারে এটা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে বেশ ভালো হবে। এটার প্রতিই ভবিষ্যতে আমাদের মনোযোগ দিতে হবে।
ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে একজন স্পিনারের ভূমিকা আপনি কিভাবে দেখেন?
এটা আসলে সবসময় সিচুয়েশনের উপর নির্ভর করে। একজন ক্রিকেটার হিসেবে বলবো আপনাকে অবশ্যই সিচুয়েশন দেখতে হবে এবং সচেতন থাকতে হবে। এটা অ্যাটাকিং রোলও হতে পারে আবার সমন্বিত হতে পারে।
কিন্তু এটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ পেসার এবং স্পিনারদের মধ্যে জুটি হিসেবে কাজ করা। এবং এটা সম্পূর্ণটাই সিচুয়েশনের উপর নির্ভর করে। আমি বলবো না যে এটা শুধু টি-টোয়েন্টির রোল এবং এটা অবশ্যই করা উচিত এমন কিছুনা। আমি বলতে চাই আমাদেরকে সিচুয়েশন নিয়ে এনালাইসিস করতে হবে এবং আমাদেরকে সচেতন থাকতে হবে। সিচুয়েশনের সাথে আমাদেরকে মানিয়ে নিতে হবে। সেখানে অ্যাটাকিং সিচুয়েশন হলে সেটাই করা লাগবে আবার একই সাথে রানও সেভ করতে হবে। আমাদেরকে পেসারদের সাথে একটা ইউনিট হিসেবে কাজ করতে হবে এবং যখন তারা একসাথে কাজ করবে আমি মনে করি আমরা অনেক দূর যেতে পারবো।
বাংলাদেশের স্পিনাররা রান আটকানোর জন্য বেশ পরিচিত। আপনি কি মনে করেন এই কৌশল কাজ করবে সব ফরম্যাটে?
এই ব্যাপারটা নিয়েই আমি বলছি যে আপনাকে আপনার রোলটা খুঁজে বের করতে হবে। এবং এটাই আমাদের দায়িত্ব যে আমারা যেটা আশা করছি সেই রোলটা সবাইকে বুঝিয়ে দেওয়া। আমাদেরকে অবশ্যই স্পিনারদের সাথে ভালো যোগাযোগ রাখতে হবে এবং হেড কোচের সাথে এক এক করে বা গ্রুপ করে সেটা করতে পারি। এবং তাদেরকে বুঝাতে পারি যে তাদের থেকে আমরা মূলত কি আশা করছি। আমি নিশ্চিত যে আমাদের মধ্যে যোগাযোগ সঠিকভাবে হয় আমরা আমাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারবো।
জাতীয় দলের স্পিনারদের বাইরেও বাকি যেসব স্পিনার আছে তাদের সাথে কি আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করার কোনো সুযোগ আছে?
আপনি জানেন আমি জাতীয় দলের সাথে প্রায় সাড়ে চার মাসের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। এবং আমাকে আরো বেশ কিছু সময় কাটাতে হবে স্পিনারদের সাথে। আশা করি পরবর্তীতে এই ব্যাপারটা নিয়ে একসাথে কাজ করতে পারবো। কোভিড-১৯ সিচুয়েশনে এবং বায়ো-বাবলে আসলে আমরা তো যেকোনো জায়গায় সহজে যেতে আসতে পারি না।
বাংলাদেশে বেশ কিছু ফিঙ্গার স্পিনার আছে। আপনি কি কোনো রিস্ট স্পিনারকে খুঁজে বের করবেন?
এটা ভালো প্রশ্ন। ভারতের দিকে তাকালে আমরা চাহাল এবং কুলদীপকে দেখতে পাবো এছাড়া রশিদ খান কিংবা আদিল রশিদও আছে। তারা বল হাতে খরুচে হতে পারে তবে তাদের মধ্যে উইকেট নেওয়ার এবিলিটি আছে। উইকেট নেওয়ার এবিলিটি থাকলে আমি মনে করি একজন রিস্ট স্পিনার অবশ্যই দরকার। কারণ তারা ম্যাচের বড় একটা ইমপ্যাক্ট ফেলতে পারে।