তবুও, জিম্বাবুয়ের কাছে শেখার আছে বাংলাদেশের

জিম্বাবুয়ে বড় দলগুলোর একটি নয়, কিন্তু তাঁরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং ধীরে ধীরে ফিরে আসছে। বাংলাদেশ চাইলেই জিম্বাবুয়ের কাছে থেকে এই শিক্ষাটা নিতে পারে। আরেকটা ব্যাপার হলো তাঁরা কখনো হাল ছাড়ে না। যেকোনো প্রতিপক্ষের বিপক্ষে, যেকোনো পরিস্থিতিতে তাঁরা নিজেদের সেরা নিংড়ে দেয়। বড় টুর্নামেন্টে ভালো করতে গেলে এই জিনিসটা ভীষণ জরুরি এবং বাংলাদেশ চাইলেই এই শিক্ষাটা নিতে পারে

গত কয়েকবছরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একপ্রকার বলেকয়ে জিতলেও সাম্প্রতিক সময়ে সেটা আর হচ্ছে না ক্রিকেতখেলুড়ে দেশগুলোর জন্য। এবারের বিশ্বকাপেই যেন অন্য এক জিম্বাবুয়েকে দেখছে গোটা ক্রিকেটবিশ্ব, পাকিস্তানকে হারিয়ে পুরো বিশ্বকে চমকে দিয়েছেন রাজা-মুজারাবানিরা।

বাংলাদেশের বিপক্ষেও তাঁরা ম্যাচে টিকে ছিলেন শেষ বল পর্যন্ত, যেখানে নো বল নাটকের পর তিন রানের জয়ে শেষ হাসিটা বাংলাদেশেরই। তবে ম্যাচ জয়ের পরও জিম্বাবুয়ের কাছে থেকে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের শেখার আছে অনেককিছুই, এমনটা জানিয়েছেন জাতীয় দলের নির্বাচক খোদ হাবিবুল বাশার।

ক্রিকেটে জিম্বাবুয়ের স্বর্ণালি দিন ফুরিয়েছে অনেক দিন। একসময় বিশ্ব ক্রিকেটের পরাশক্তিদের চোখে চোখ রেখে লড়াই করা জিম্বাবুয়ে মাঝে খেলার সুযোগ পায়নি বিশ্বকাপেও, বাদ পড়েছে বাছাইপর্বেই। তবে সাবেক ক্রিকেটার ডেভ হটন কোচ হিসেবে দায়িত্ব পাবার পর থেকেই যেন দিন বদলের শুরু। একঝাক তরুণ ক্রিকেটারদের সাথে অভিজ্ঞদের মিশেলে দারুণ এক দল হিসেবে গড়ে উঠছে জিম্বাবুয়ে। কোনো তারকা নন, বরং একতাবদ্ধ হয়ে দাঁতে দাঁত চেপে ম্যাচের শেষ বল পর্যন্ত লড়ে যাওয়াই তাঁদের লক্ষ্য। 

বিশ্বকাপের মূলপর্বের প্রথম ম্যাচটা বৃষ্টিতে ভেসে গেলেও দ্বিতীয় ম্যাচেই পাকিস্তানকে এক রানে হারিয়ে নিজেদের উত্থানের জানান দিয়েছিল তাঁরা। বাংলাদেশের বিপক্ষেও লড়াই করেছেন নিজেদের সর্বোচ্চটা দিয়ে, একটুর জন্য হারতে হয়েছে মাত্র তিন রানে।

অন্যদিকে ম্যাচ জিতলেও এবারের বিশ্বকাপে নিজেদের সেরা প্রদর্শনীটা দেখাতে পারছে না বাংলাদেশ। নেদারল্যান্ডস-জিম্বাবুয়ে দুই দলের বিপক্ষেই জয়টা এসেছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। অথচ গত কয়েক বছরের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় অপেক্ষাকৃত দুর্বল এই দলের বিপক্ষে হেসে খেলেই জেতার কথা সাকিব-লিটনদের।

জাতীয় দলের নির্বাচক হাবিবুল বাশার তাই মনে করেন জিম্বাবুয়ের কাছে থেকে অনেক কিছু শেখার আছে বাংলাদেশের। মাঠে আরো আত্নবিশ্বাসী হওয়ার পাশাপাশি ক্রিকেটারদের আরো দায়িত্ব নিয়ে খেলা উচিত বলে মনে করেন তিনি। প্রতিপক্ষের দিকে না তাকিয়ে যেকোনো পরিস্থিতিতে নিজেদের সেরাটা দিয়ে শেষপর্যন্ত লড়ে যাবার উদাহরণটা চাইলে বাংলাদেশ নিতে পারে জিম্বাবুয়ের কাছে থেকেই। তাঁরা হাল না ছেড়ে বরং চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত উন্নতি করার।

তিনি বলেন, ‘আপনাকে আরো আত্নবিশ্বাসের সাথে ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করে যেতে হবে। হ্যাঁ, কয়েকজন ভালো ক্রিকেটার জরুরি যারা দলের জন্য নিয়মিত পারফর্ম করবে এবং দলের জন্য সুফল বয়ে আনবে। আমাদের একে অন্যের উপর ভরসা রাখতে হবে এবং নিজেদের সর্বোচ্চটা মাঠে ঢেলে দিতে হবে। বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে এই জিনিসগুলো ভীষণ জরুরি। আপনি অন্য দলগুলোর কাছে থেকে অনেককিছু শিখতে পারেন।’

হাবিবুল আরো বলেন, ‘জিম্বাবুয়ে বড় দলগুলোর একটি নয়, কিন্তু তাঁরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং ধীরে ধীরে ফিরে আসছে। বাংলাদেশ চাইলেই জিম্বাবুয়ের কাছে থেকে এই শিক্ষাটা নিতে পারে। আরেকটা ব্যাপার হলো তাঁরা কখনো হাল ছাড়ে না। যেকোনো প্রতিপক্ষের বিপক্ষে, যেকোনো পরিস্থিতিতে তাঁরা নিজেদের সেরা নিংড়ে দেয়। বড় টুর্নামেন্টে ভালো করতে গেলে এই জিনিসটা ভীষণ জরুরি এবং বাংলাদেশ চাইলেই এই শিক্ষাটা নিতে পারে।’

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয়ের পর বাংলাদেশের সামনে উঁকি দিচ্ছে সেমির স্বপ্ন। যদিও পথটা বন্ধুর, তবুও স্বপ্ন দেখতে দোষ কি! হারাতে হবে ভারত এবং পাকিস্তানকে। এমনকি এক জয়েও ভাগ্যের মারপ্যাঁচে খুলে যেতে পারে শেষ চারের দরজা। এখন দেখার বিষয় হাবিবুল বাশারের পরামর্শ কাজে লাগিয়ে শেষ দুই ম্যাচে বিশ্ববাসীকে চমক দেখাতে পারেন কিনা সাকিব-তাসকিনরা।

 

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...