ট্যাকটিক্যাল রিটায়ারমেন্ট, টি-টোয়েন্টির নয়া অস্ত্র

ক্রিকেটে আইনে ‘ট্যাকটিক্যাল রিটায়ারমেন্ট’ বলে কোনও শব্দ নাই। তবে চলতি দুই কাণ্ডে এটাকে এই নামকরণ করা হয়েছে।

টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টে এক ম্যাচে দু-দুটো ট্যাকটিক্যাল রিটায়ারমেন্ট হয়। কিছু দিন আগে আইপিএলেও রবিচন্দ্রন অশ্বিন এই কাজটা করেন। ক্রিকেটে আইনে ‘ট্যাকটিক্যাল রিটায়ারমেন্ট’ বলে কোনও শব্দ নাই। তবে চলতি দুই কাণ্ডে এটাকে এই নামকরণ করা হয়েছে।

ক্রিকেটীয় আইনের মধ্যেই এটা আছে। বল ডেড হওয়ার পর কোনও ব্যাটসম্যান চাইলে মাঠ ছেড়ে চলে যেতে পারেন। ‘law 25’ অনুযায়ী। তবে এর আবার দুইটা ভাগ রয়েছে।

প্রথম পার্ট – কোনও ব্যাটসম্যান যদি ব্যথা পান, অসুস্থ বোধ করেন, কিংবা গুরতর ইনজুরিতে পড়েন তাইলে তিনি মাঠ ছেড়তে পারেন। এটাকে বলা হয় ‘রিটায়ার্ড আউট – নট আউট’। আমরা টেলিভিশনে যেটা আসলে রিটায়ার্ড আউট হিসাবে দেখি। এই ক্ষেত্রে ব্যাটসম্যানের ইনিংসটা নটআউট হিসাবে গণ্য হবে। এবং ব্যাটসম্যান সুস্থ বোধ করলে আবার মাঠে ফিরতে পারেন।

এই আইনের দ্বিতীয় পার্ট হচ্ছে- একজন ব্যাটসম্যান এমনিও খেলা ছেড়ে যেতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে তাঁর রিটায়ার্ড হওয়াটা রিটায়ার্ড আউট হিসেবে গণ্য হবে। এবং প্রতিপক্ষ ক্যাপ্টেন চাইলেই তিনি আবার মাঠে আসতে পারেন। তা না হলে তার ইনিংস ঐ পর্যন্ত।

আন্তজার্তিক ক্রিকেটে এই রিটায়ার্ড আউটের ঘটনা দুইবার ঘটছে। শেষবারেরটা ঘটে আমাদের বাংলাদেশের সাথে ২০০১ সালে শ্রীলংকা সাথে টেস্টে মারভান আত্তাপাত্তু এবং মাহেলা জয়বর্ধনে এই কাজটা করেন। ট্যাকটিক্যাল কিছুই ছিলো না। বাংলাদেশকে একটু খাটো করাই লক্ষ্য ছিলো। এর জন্য তারা সমালোচিতও হন।

তবে সর্বপ্রথম এই ঘটনা ঘটান গর্ডন গ্রিনিজ। ১৯৮২-৮৩ সালে সিরিজে ১৫৬ রানে তিনি রিটায়ার্ড করেন। উদ্দেশ্য ছিলো হাসপাতালে তার মেয়েকে দেখতে যাওয়া। মানবিক কিংবা স্পিরিট অফ দ্য গেম থেকে এই ইনিংসটা নট আউটই রাখা হয়।

তবে রবি অশ্বিন হচ্ছেন অন্য রকম মস্তিষ্কের একজন ক্রিকেটার। তিনি ক্রিকেটে আর ১০ বছর থাকলে আপনার মনে হয় বিশ্ব ক্রিকেটকে সব আইনের সাথে উইজ টু করে দিয়ে যেতেন।

এবার ব্লাস্টে একটু ফিরে যাই। নটিংহাম শায়ার এবং ম্যাচে এই কাজটা হয়৷ প্রথমে রিটায়ার্ড আউট হন কার্লোস ব্রাথওয়েট। ব্যাটে বলে হচ্ছিলো না একদমই। রিডার্য়ড হওয়ার আগের লোপ্পা বলে ছয় না মারলে ইনিংসটা আরও বাজে দেখাইতো। যাই হোক দিন তার না বোঝার পরে চলে গেলেন। এবং পরে ৪ বল খেলে এলেক্স ডেভিস ১৪ রান করেন। যেটা ম্যাচ ডিসাইডিং হয়।

নটিংহাম টার্গেট চেজ কালীন শেষ দিকে এসে সামিত প্যাটেলও রিটার্য়ড আউট হন। শেষ স্কোর লেভেল করতে ২ রানের দরকার ছিলো। এবং সামিত প্যাটেলের পক্ষে এই রকম ক্রাঞ্চ মোমেন্টে ২ রানের জন্য দৌড়ানোটা কঠিন। তাই নতুন কাউকে ক্রিজে পাঠানো হয় যেন রানার হইতে পারে।

ইংলিশ ক্রিকেটার মার্ক বুচারের এই আইন খুব একটা পছন্দ না। তার মতে বোলিং টিম এর জন্য কি করতে পারে? তাদের জন্য তো কিছু নেই। তার মতে এইটা আরও কমপ্লিকেট হইতে পারে ক্রিকেটে।

এইটা ভালো না খারাপ। ফেয়ার না আনফেয়ার, স্পিরিট এই ব্যাপারগুলো নিয়ে আপনারাই আপনাদের মতামত দিন।

তবে ব্যক্তিগত ভাবে যেটা মনে করি। এই ট্যাকটিক্যাল রিটার্য়মেন্টে রিটায়ার্ড আউট হওয়ার ঘটনা সামনেও প্রচুর দেখবেন। টি২০ ক্রিকেটে এইটার ব্যবহার হয়তো বাড়বে। টি-টোয়েন্টিতে ১২০ বলই গুরুত্বপূর্ণ। সেই ক্ষেত্রে অনেক সময়ই অনেক ভালো ব্যাটসম্যানেরও ব্যাটে বলে একদমই হয় না। তো তাকে রিপ্লেস এভাবেই করতে পারে দলগুলো।

বাংলাদেশের মতো দল যারা ৮ ব্যাটসম্যান নিয়ে খেলে তাদের ক্ষেত্রে এই ফাঁক তো সোনায় সোহাগা।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...