তাসকিন ডোমিনেটর্স

বল মাঠে গড়ানোর পর সেই উত্তেজনা যেন দ্বিগুন হল। প্রথম বলটা তাসকিন ফেললেন অফ স্ট্যাম্পের অনেকখানি বাইরে। তবে সেই বল একটা ফাঁদের মত। শুরুর মোয়েশ্চার ব্যবহার করে বলটা ছোবলের মত বাঁক খেয়ে বের হয়ে যাচ্ছিল। তামিম ইকবালও নিজের অভিজ্ঞতার প্রমাণ দিলেন। শেষ পর্যন্ত বলটার জন্য অপেক্ষা করলেন। তারপর আলতো করে ঠেলে দিয়ে একটা সিঙ্গেল।

খুলনা টাইগার্স ও ঢাকা ডোমিনেটর্সের ম্যাচের একেবারে প্রথম বল। খুলনার হয়ে স্ট্রাইক প্রান্তে আছেন তামিম ইকবাল। আর ঢাকার হয়ে বোলিং শুরু করবেন তাসকিন আহমেদ। ধারাভাষ্য কক্ষ থেকে শোনা গেল, ‘ইটস তামিম ভার্সেস তাসকিন।’ সত্যিই তো দেশের সেরা ব্যাটার আর সেরা পেসার যখন প্রথম বলেই একে অপরের মুখোমুখি হয় সেটা তো দেখার মতই ব্যাপার।

বল মাঠে গড়ানোর পর সেই উত্তেজনা যেন দ্বিগুন হল। প্রথম বলটা তাসকিন ফেললেন অফ স্ট্যাম্পের অনেকখানি বাইরে। তবে সেই বল একটা ফাঁদের মত। শুরুর মোয়েশ্চার ব্যবহার করে বলটা ছোবলের মত বাঁক খেয়ে বের হয়ে যাচ্ছিল। তামিম ইকবালও নিজের অভিজ্ঞতার প্রমাণ দিলেন। শেষ পর্যন্ত বলটার জন্য অপেক্ষা করলেন। তারপর আলতো করে ঠেলে দিয়ে একটা সিঙ্গেল।

তবে তামিমের দেখানো পথে হাঁটতে পারেননি আরেক ওপেনার শারজিল খান। তাসকিনের বলগুলোকে তিনি উল্টো চার্জ করতে চেয়েছেন। যদিও কোন বলই ব্যাটে লাগাতে পারেননি সেই ওভারে। আর তাসকিন আরেকবার দেখালেন নতুন বলে তাঁর ভয়ংকর রূপ। এমনকি টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটেও দুইজন স্লিপ নিয়ে বোলিং করেছেন এই পেসার। যেকোন ক্রিকেটপ্রেমীর জন্য তাসকিনের এই স্পেল হতে পারে চোখের শান্তি।

বলা হয় টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ব্যাটারদের খেলা। বোলারদের তেমন কিছুই করার থাকে না। তবে তাসকিন আহমেদরা এমন উক্তির প্রতিবাদ জানান প্রায়ই। এই যেমন আজ নজরটা কেড়ে নিলেন পুরোপুরি নিজের দিকে। কোন উইকেট পাননি, তবুও তাসকিন অসম্ভব সুন্দর।

তাসকিন নতুন বল হাতে কন্ডিশনকে কাজে লাগিয়েছেন, লাইন লেন্থে ছিলেন নিখুঁত। পাওয়ার প্লেতে করেছেন দুই ওভার। সেই ১২ টা বল দেখা, চার-ছয়ে ভরা একটা ইনিংস দেখার চাইতেও বেশি আনন্দদায়ক, শান্তির। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ব্যাটারদের খেলা হলেও আজ তাসকিনের ব্যাটিং নিঃসন্দেহে খুলনার ব্যাটিং এর থেকে অনেক বেশি উপভোগ্য ছিল।

অধিকাংশ বলেই চিত্রটা অনেকটা এমন। গুড লেন্থে পড়া বলগুলো মাটিতে পরে আরো বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে। আর ব্যাটার স্রেফ তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছেন। তাসকিন আহমেদ উইকেট পেতে পারতেন তামিম ইকবালেরও। সুযোগও তৈরি করেছিলেন।

তাসকিনের টানা ডট বলে অতিষ্ঠ হয়ে ডাউন দ্য উইকেটে এসে খেলতে চেয়েছিলেন তামিম। তবে সেই বলটাও ব্যাটে-বলে হয়নি। পরের বলেই সুযোগটা তৈরি হল। নিজের বলে নিজেই ক্যাচ নিয়ে নিতে পারতেন তামিম ইকবালের উইকেট। তবে ফলো থ্রুতে নিচু হয়ে আসা সেই ক্যাচ ধরা কঠিনই ছিল তাসকিনের জন্য।

নিজের প্রথম তিন ওভার বোলিং করে তাসকিন কোন উইকেট না পেলেও তাঁর টানা ডট বল করে গিয়েছেন। ফলে অন্য বোলারদের জন্য কাজটা সহজ হয়েছে। চাপে পড়ে ব্যাটাররা উইকেট দিয়েছেন আরাফাত সানি, নাসির হোসেনদের।

নিজের প্রথম তিন ওভারে তাসকিন রান দিয়েছেন মাত্র ৯। পাওয়ার প্লেতে বোলিং করলেও তাঁকে একটিও বাউন্ডারি মারতে পারেনি খুলনার ব্যাটাররা। ১৮ বলের ১০ টিই ছিল ডট। তাসকিন এতটাই নিখুঁত ছিলেন যে কোন এক্সট্রা রানও আসেনি তাঁর কাছ থেকে।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...