ইয়ান বোথাম, এক থেকে দশ

১৯৮১ সালে অ্যাশেজ সিরিজের তৃতীয় টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ডের অবস্থা তখন ৭ উইকেটে ১৩৫ রান। তখনো ৯২ রান পিছিয়ে ইংলিশরা। সেখান থেকে বোথামের ২৭ চার ও ৬ ছক্কায় ১৪৯ রানের হার না মানা ইনিংসে পালটে যায় ম্যাচের চিত্র! ওই টেস্টে বোথামের অবিশ্বাস্য ইনিংসে ১৮ রানের জয় পায় ইংলিশরা।

ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ক্রিকেটারের নাম আসলে ভিভ রিচার্ডস সে তালিকায় উপরের দিকেই আসবেন। ভিভ রিচার্ডসের মতো বিধ্বংসী ব্যাটিং করতেন আরেক ইংলিশ অলরাউন্ডার ইয়ান বোথাম। প্রতিপক্ষকে ব্যাট কিংবা বল হাতে একাই ধসিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখতেন এই ইংলিশ তারকা। ব্যাটিং, বোলিং – দুই বিভাগেই সমানতালে পারফরম করতে পারতেন।

তর্কযোগ্যসাপেক্ষে ইংল্যান্ডের ইতিহাসের সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডারও মানা হয় বোথামকে। আশির দশকটা ছিল পেস বোলিং অলরাউন্ডারদের দাপটের সময়। ভারতের কপিল দেব, পাকিস্তানের ইমরান খান কিংবা নিউজিল্যান্ডের স্যার রিচার্ড হ্যাডলির সাথে ছিলেন ‘বিফি’ খ্যাত ইংল্যান্ডের স্যার ইয়ান বোথাম। মাঠের বাইরের ব্যাড বয়, ঝাঁকড়া চুলের ছিপছিপে বোথাম একাই ইংল্যান্ডকে বহু ম্যাচে জিতিয়েছেন।

সেটা করতে গিয়ে ক্যারিয়ারে অসংখ্য মনে রাখার মত স্মৃতি রেখে গেছেন তিনি। ১৯৮১ সালে অ্যাশেজ সিরিজের তৃতীয় টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ডের অবস্থা তখন ৭ উইকেটে ১৩৫ রান। তখনো ৯২ রান পিছিয়ে ইংলিশরা। সেখান থেকে বোথামের ২৭ চার ও ৬ ছক্কায় ১৪৯ রানের হার না মানা ইনিংসে পালটে যায় ম্যাচের চিত্র! ওই টেস্টে বোথামের অবিশ্বাস্য ইনিংসে ১৮ রানের জয় পায় ইংলিশরা।

পরের টেস্টেই বার্মিংহামে মাত্র ১৫১ রানের টার্গেটে তখন ব্যাট করতে নামে অস্ট্রেলিয়া। বোথামের ম্যাজিকেল স্পেলে ১২১ রানেই গুড়িয়ে যায় অজিদের ইনিংস। মাত্র ২৮ বলের ব্যবধানে ১১ রানে ৫ উইকেট নেন বোথাম।

১৯৯২ বিশ্বকাপের ফাইনালে পাকিস্তানের কাছে ২২ রানে হেরে শিরোপা জয়ের স্বপ্নভঙ্গ হয় ইংলিশদের। পাকিস্তানের দেওয়ার ২৫০ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে সেদিন ওপেনিংয়ে শূন্য রানেই ফিরেন বোথাম। ওয়াসিম আকরামের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে আউট হন তিনি।

১৯৮২ সালে মেলবোর্নে চতুর্থ টেস্টে ইংল্যান্ডের দেওয়া ২৯২ রানের টার্গেটে ব্যাট করছিলো অস্ট্রেলিয়া। ২১৮ রানে ৯ উইকেট হারানোর পর শেষ উইকেটে অ্যালান বোর্ডার ও জেফ থমসনের ৭০ রানের জুটিতে তখন জয়ের দ্বারপ্রান্তে অজিরা! জয় থেকে মাত্র ৩ রান দূরে থাকতে বোথামের অসাধারণ এক ডেলিভারিতে এজ হয়ে আউট থমপসন! ৩ রানের শ্বাসরুদ্ধকর এক জয় তুলে নেয় ইংলিশরা।

১৯৮৬ সালে ব্রিসবেন টেস্টে মারভেন হিউজের এক ওভারে ২৪ রান নেন বোথাম। ওই ইনিংসে ১৩৮ রান করেন এই অলরাউন্ডার! এটিই ছিলো বোথামের ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট সেঞ্চুরি।

১৯৯২ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে বল হাতে ৩১ রানে ৪ উইকেট ও ব্যাট হাতে ৫৩ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলে দলকে ৮ উইকেটের জয়ে এনে দেন বোথাম। তাঁর ক্যারিয়ারের সেরা মুহূর্তগুলোর একটি ছিলো এই ম্যাচটি। ১৯৭৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অভিষেক টেস্টে ৭৪ রানে ৫ উইকেট শিকার করেন বোথাম। ওই টেস্টে ইংলিশরা জয় পায় সাত উইকেটের!

১৯৮৫ সালে অ্যাশেজে এক টেস্টে ব্যাট করতে নেমেই ক্রেইগ ম্যাকডারমটকে প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকান বোথাম। ১৯৮২ সালে ওভালে ভারতের বিপক্ষে টেস্টে পাঁচ নম্বরে ব্যাট করতে এসে ডাবল সেঞ্চুরি করেন বোথাম। তাঁর ২০৮ রানের সেই ইনিংসটি ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ইনিংস হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...