চিন্নাপ্পামপট্টির মিরাকল ম্যান

নটরাজন ভেবেছিলেন এখানেই হয়ত ক্যারিয়ার শেষ। কিন্তু সাবেক তামিলনাড়ুর অধিনায়ক সুনিল সুব্রামানিয়াম তামিলনাড়ু ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনে নটরাজনকে নিয়ে গেলেন। সেখানেই তাঁর অ্যাকশন ঠিক করে ফেলেন সুনিল। সাবেক ভারতীয় উইকেটরক্ষক ভরত রেড্ডিও অবশ্য বেশ সাপোর্ট দিয়েছিলেন নটরাজনকে। ধীরে ধীরে সব বাঁধাই টপকে যান এই তরুণ পেসার। রান-আপ ঠিক করলেন, অ্যাকশনে খানিকটা পরিবর্তন হল। প্রায় মাস দুয়েকের মত গায়ে দড়ি বেঁধে দৌড়েছেন তিনি।

চেন্নাই থেকে ৩৭৫ কিলোমিটার দূরে তামিলনাড়ুর গ্রাম চিন্নাপ্পামপট্রি। থেকে ট্রেনে লম্বা সময় পাড়ি দেওয়ার পর সালেম স্টেশন থেকে বাসে আরও কিছুটা পথ। ওমালুর বাস স্টেশন থেকে ট্যাক্সিতে পৌঁছাতে হয় চিন্নাপ্পামপট্রি গ্রামে। ওমালুর থেকেও এর দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার! হ্যাঁ, বেশ অপরিচিত এক গ্রাম। তবে বেশ কিছু সময় ধরেই এটি এখন প্রায় সবার পরিচিত। এই এলাকা এখন থাঙ্গারাসু নটরাজনের নামেই পরিচিত। এখান থেকেই উঠে এসে আইপিএল ও ভারত জাতীয় দলে খেলছেন এই তরুণ পেসার।

গ্রামে মাত্র দু’টি স্কুল। একটি সরকারি, আরেকটি বেসরকারি। সরকারি স্কুল থেকেই পড়াশোনা করেছিলেন নটরাজন। গ্রামে কোনো কলেজ নেই। কলেজে ভর্তি হতে হলে সেখান থেকে যেতে হবে শহরের দিকে।

নটরাজনের নতুন বাড়িটা বেশ সুন্দর করেই সাজানো। এক রুমে ট্রফিগুলো সাজানো। এর মধ্যে কিছু জিতেছেন আইপিএলে, কিছু আবার লোকাল টুর্নামেন্টে। সাবেক ভারতীর তারকা ওপেনার বীরেন্দ্র শেবাগের সাথে ছবিটা দেওয়ালে বাঁধিয়ে রেখেছেন রুমের এক পাশের দেওয়ালে। ২০১৭ আইপিএলে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবে শেবাগই দলে ভিড়িয়েছিলেন নটরাজনকে।

জরাজীর্ণ এক রুমে পরিবারের আট সদস্য বাস করতেন। অনেক সময়ই অর্থাভাবে থেকেছেন না খেয়ে। সেখান থেকেই ঘুরে দাঁড়ায় নটরাজনের ক্যারিয়ার। আইপিএলের সফলতা তাঁকে টেনে নেয় ভারত জাতীয় দলে। চিন্নাপ্পামপট্রিতে শূন্য থেকে তিনি এখন সবচেয়ে বড় তারকা।

সেই জরাজীর্ণ রুমটা এখনও আছে। পুরনো সিলিং ফ্যান এখনও ঝুলছে। নিজস্ব বাথরুম ছিল না। রাস্তা ঘাটের অবস্থাও সেখান বেহাল দশা, বেশ সরু সরু রাস্তা; চলাচলের জন্যও বেশ ঝুঁকিপূর্ণ।

রাস্তার পাশেই দেখা যায় একটি স্যালুন; সেখানেই ছেলেবেলার অনেকটা সময় পার করেছেন এই পেসার। বাসায় টিভি না থাকায় স্যালুনেই টিভি দেখে সময় পার করতেন তিনি। টিভি তো দূর ঘরে কারেন্টও থাকতো না প্রায়ই। কারেন্ট না থাকলে সন্ধ্যায় স্যালুনের সামনে এসেই পড়াশোনা করতেন তিনি।

স্যালুনের মালিকের নাম মুর্থি। মুর্থির কাছেই ছেলেবেলায় নটরাজন বাড়ি থেকে ব্লেড নিয়ে হাতে ধরিয়ে বলতেন চুল ফেলে দিতে। নটরাজনের উপর কখনোই রাগ হতেন না তিনি। নটরাজন সম্পর্কে মুর্থির বর্তমান অভিমত – ‘নটরাজন এখন ভারত দলে খেলে। অনেক বড় হয়েছে তবে সে অতীত ভুলে যায়নি।’

হ্যাঁ, কথা সত্যি। নটরাজন অতীত ভুলেননি।

বাবা থাঙ্গারাসু ছিলেন একজন দিনমজুর, মা শান্তা সেই জরাজীর্ণ টিনের ঘরের সাথেই চিকেন পাকোড়া বিক্রি করতেন। আইপিএলে ইয়র্কার দিয়ে দুর্দান্ত এক মৌসুম পার করার পরেও অবশ্য এই ব্যবসা চালু রেখেছিলেন নটরাজনের মা।

শান্তা বলছিলেন, ‘ছেলে উইকেট পেলেও হাসে, মার খেলেও হাসে। সে এটা কখনো পরিবর্তন করেনি। আমাদের পরিবার খুব কঠিন অবস্থার মধ্যে দিয়ে গেছে। আমি পাকোড়া বিক্রি করতাম। নাতনি হবার পর কাজ ছেড়ে দেই। এখন আমি ছেলের মেয়েকেই দেখাশোনা করি।’

স্কুলে থাকাকালীন টিফিনের বিরতিতে মায়ের জন্য মাংস কিনে আনতেন তিনি। স্কুল ছুটির দিনে বিভিন্ন সাইডে ছোট ছোট কাজ করতেন নটরাজন। বড় ভাই শক্তি একটি গ্রোসারি দোকানে কাজ করতেন। অবশ্য সেই দিন পালটে গেছে। ভাইকে এখন গ্রামেই একটি গ্রোসারি দোকান করে দিয়েছেন তিনি।

অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের পর ট্রফিটা নটরাজনের হাতে তুলে দেন বিরাট কোহলি। হার্দিক পান্ডিয়া নিজের প্লেয়ার অব দ্যা সিরিজের ট্রফিটাও তুলে দেন এই পেসারের হাতে। খুশিতে গ্রামবাসীরা মিলে প্রায় ঘন্টা পাঁচেকের মত সেদিন উৎসব-উদযাপনে মেতে ছিল। ছোট্ট গ্রামের জরাজীর্ণ টিনের ঘরে থাকা সেই ছেলেটি এখন ‘সুপারস্টার’ – গ্রামবাসীর জন্য এর চেয়ে গর্বের বিষয় আর কি হতে পারে?

শুধু চিন্নাপ্পামপট্রি নয়, ওই জেলায় গত এক দশকে খুব বড় তারকার দেখা মেলেনি। হ্যাঁ, একজন বড় তারকা অবশ্য আছেন নাম – মারিয়াপ্পান থাঙ্গাভেলু। প্যারালিম্পিক হাই-জাম্প স্বর্ণপদক জয়ী এই তারকা পেরিয়াভাদাগামট্টি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন; তর্কযোগ্যসাপেক্ষে সালেম জেলার সবচেয়ে বড় তারকা হিসেবেই তিনি পরিচিত। তবে সালেম জেলাকে এখন অনেকেই নটরাজনের নামে চিনে।

আরও এক দশক আগে টেনিস বল ক্রিকেট বেশ জনপ্রিয় ছিল সালেম শহরে। ছয় ওভারের ইনিংসে ব্যাটারদের কাছে দেখা মিলত ছক্কা বৃষ্টির। বোলারদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ ছিল ইয়র্কার ডেলিভারি। টেনিস বল ক্রিকেটে বেশ ভাল পারফরম করেন নটরাজন। দুর্দান্ত ইয়র্কারে ব্যাটারদের ভড়কে দিতেন তিনি।

চিন্নাপ্পামপট্রি ক্রিকেট ক্লাবের পরিচালক জয়প্রকাশের নজরে আসলেন অল্প বয়সী তিনি। পেস আর নিঁখুত ইয়র্কারে মুগ্ধ হয়ে জয়প্রকাশ পৌঁছে যান নটরাজনের বাড়ি। সেখানে তাঁর বাবা-মা’কে বোঝান ছেলেকে ক্রিকেটে ক্যারিয়ার গড়তে দেওয়ার জন্য। গরীবের জন্য ক্রিকেট তো এক বিলাসিতার নাম। তবে জয়প্রকাশের অনুরোধের ছেলেকে ক্রিকেটে দেন নটরাজনের বাবা-মা।

জয়প্রকাশের হাত ধরেই সালেমের এভিএস কলেজে পড়ার সুযোগ পান নটরাজন। সেখান থেকে সালেম ইউনিভার্সিটি ও সালেম জেলার হয়ে খেলেন তিনি। এরপর জয়প্রকাশই নটরাজনকে চেন্নাই নিয়ে যান। সেখানে চতুর্থ ডিভিসন ক্রিকেট লিগে খেলার সুযোগ করে দেন। লিগামেন্ট ইনজুরিতে বেশ সমস্যার মধ্যেই ছিলেন জয়প্রকাশ। ইনজুরি ঘাড়ে করে নিয়েই নটরাজনের সাথে চেন্নাই যান তিনি!

ট্রেনে মাত্র একটি সিট পাওয়া গেল। নিজে না বসে নটরাজনকেই বসালেন জয়প্রকাশ; খেলতে হলে যে প্রয়োজন পর্যাপ্ত বিশ্রামের। প্রায় সাত ঘন্টার লম্বা জার্নিতে পুরোটা সময়ই দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি।

চেন্নাইতে প্রথম ডিভিশন লিগে প্রায় দুই বছর খেললেন। সেখানে তাঁর দুর্দান্ত পারফরম্যান্স নজর এড়ায়নি রাজ্য ক্রিকেট নির্বাচকদের। ২০১৫-১৬ রঞ্জি ট্রফিতে পেয়ে গেলেন সুযোগ। বাংলার বিপক্ষে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেকও হল এই পেসারের।

কিন্তু স্বপ্ন দেখার আগেই যেন থমকে গেল সব। অবৈধ বোলিং অ্যাকশন সন্দেহে সাময়িক সময়ের জন্য নিষিদ্ধ হলেন। সুযোগ পাওয়ার পর কেউ অভিনন্দন না জানালেও, অবৈধ অ্যাকশন সন্দেহের কথা শুনলেই নটরাজনকে নিয়ে অনেকেই উপহাস করতে লাগলেন।

নটরাজন ভেবেছিলেন এখানেই হয়ত ক্যারিয়ার শেষ। কিন্তু সাবেক তামিলনাড়ুর অধিনায়ক সুনিল সুব্রামানিয়াম তামিলনাড়ু ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনে নটরাজনকে নিয়ে গেলেন। সেখানেই তাঁর অ্যাকশন ঠিক করে ফেলেন সুনিল। সাবেক ভারতীয় উইকেটরক্ষক ভরত রেড্ডিও অবশ্য বেশ সাপোর্ট দিয়েছিলেন নটরাজনকে। ধীরে ধীরে সব বাঁধাই টপকে যান এই তরুণ পেসার। রান-আপ ঠিক করলেন, অ্যাকশনে খানিকটা পরিবর্তন হল। প্রায় মাস দুয়েকের মত গায়ে দড়ি বেঁধে দৌড়েছেন তিনি।

মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন, তবে নিজের উপর বিশ্বাসটা ছিল। আর সেই বিশ্বাস থেকেই কঠিন পথ পাড়ি দিয়ে আবার ঘুরে দাঁড়ান নটরাজন।

২০১৬ সালে সুযোগ পেলেন তামিলনাড়ু প্রিমিয়ার লিগে খেলার। দুর্দান্ত ইয়র্কারে নজরকাড়েন সবার। পাঁচ মাস বাদেই ২০১৭ আইপিএলের নিলামে ভিত্তিমূল্য ১০ লাখ রুপিতে আইপিএলে দল পান তিনি। এক রুমের সেই বাসাতেই সবাই মিলে যেন আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠলেন।

নটরাজনের মাথায় তখন আবার ভিন্ন চিন্তা। আইপিএলের মঞ্চে কি তিনি পারবেন নিজের সেরাটা দিতে? সেখানে ইংরেজীতে কথা বলতে হবে – তিনি ইংরেজীও জানেন না। তামিল ছাড়া কথাই বলতে পারতেন না তিনি। তবে সব বিপত্তি পেরিয়ে সেবার আইপিএলে ৬ ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি। পুরো আসরেই ছিলেন স্নায়ুচাপে। সামান্য ইনজুরিও ছিল। যদিও সবার মতে তিনি বেশ ভাল পারফরমই করেছেন; তবু নটরাজনের মনে হচ্ছিল সামর্থ্যের হয়ত পঞ্চাশ ভাগ তিনি দিতে পেরেছেন।

পরের বার ২০১৮ আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের হয়ে দল পান তিনি। ৪০ লাখ রুপিতে তাকে দলে নেয় হায়দ্রাবাদ। তবে ভুবনেশ্বর কুমার, খলিল আহমেদ, সিদ্ধার্থ কৌল, বাসিম থাম্পিদের ভীড়ে পুরো আসরেই ছিলেন একাদশের বাইরে। পরের আসরেও ছিল একই চিত্র – কোনো ম্যাচেই খেলার সুযোগ পেলেন না।

এরপর ২০২০ আইপিএল আশীর্বাদ হয়ে আসে নটরাজনের জীবনে। করোনার প্রকোপে আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত ওই আসরে সুযোগ পেলেন খেলার। হায়দ্রাবাদের জার্সি গায়ে ৭১টি ইয়র্কার দিয়ে সবার নজর কাড়েন তিনি।

সেখান থেকে অস্ট্রেলিয়া সিরিজে ডাক পেলেন নেট বোলার হিসেবে। তবে ভাগ্য সহায় হওয়ায় বরুণ চক্রবর্তীর ইনজুরিতে ডাক পেলেন টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডে। ওয়ানডে সিরিজ শুরুর ঘন্টা কয়েক আগে যুক্ত করা হল ওয়ানডে স্কোয়াডেও। অভিষেকেই টি-টোয়েন্টি সিরিজে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি ছিলেন তিনি।

টেস্ট সিরিজের আগে নেট বোলার হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন তিনি। কিন্তু একাধিক ইনজুরিতে সাদা পোশাকেও দলে সুযোগ পান তিনি। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেই টেস্টেও অভিষেক হয় এই পেসারের।

অনেকটা স্বপ্নের মতই আইপিএল থেকে নেট বোলার আর নেট বোলার থেকে তিন ফরম্যাটেই অভিষেক হয় নটরাজনের। ফেরার পর তাঁর গ্রামে বাঁধভাঙ্গা উল্লাস। চিন্নাপ্পামপট্রির সবচেয়ে বড় তারকা বনে যান এই তরুণ পেসার। বদলে যায় জীবনের চিত্র। জীবনে খুঁজে পান সুখের ছোঁয়া। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছবি তোলার জন্য শ’য়ে শ’য়ে ভক্তরা আসছে, কারো চাই অটোগ্রাফ। এক ভক্ত তো নটরাজন ফেরার দুই দিন আগে কেরালা থেকে এসে উপস্থিত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হাজার হাজার ভক্তের মাঝে দেখা পাননি নটরাজনের।

জীবনের চিত্র পাল্টালেও অতীত ভুলেননি তিনি। যার হাত ধরে এত দূর আসা সেই জয়প্রকাশকে উপহার দিলেন নিজের অভিষেক টেস্ট জার্সি। যাতে লিখা ছিল, ‘আমার জীবনের ভালবাসা জয়প্রকাশ, আমি তোমাকে ভালবাসি।’

নটরাজন ও জয়প্রকাশে স্বপ্ন ছিল নিজেদের গ্রামে এক ক্রিকেট অ্যাকাডেমি গড়ে তোলার। ২০১৭ আইপিএল থেকে কামাই-রোজগার শুরু নটরাজনের। গ্রামে একটি টার্ফ উইকেটও বানিয়েছেন তিনি। যখনি গ্রামে থাকেন, কোচের সাথে তরুণ ক্রিকেটারদের সেখানে অনুশীলন করান এই পেসার। নটরাজনের সেই অ্যাকাডেমিতে এখন বেশ কিছু তরুণ প্রতিভাবান ক্রিকেটার আছেন।

পেরিযশ্বমী নামক এক পেসার আছেন যিনি অনেকটাই মালিঙ্গার মত অ্যাকশনে বল করেন। গ্রামে ছোট মালিঙ্গা হিসেবেই বেশ পরিচিত তিনি। খেলেছেন তামিলনাডু প্রিমিয়ার লিগেও। ডান চোখে ছোট থেকেই সমস্যা ছিল। তবুও ক্রিকেট ছাড়েননি। টেনিস বল ক্রিকেট থেকেই নটরাজনের সাথে পরিচয়। নটরাজনকে দেখে দিনে দিনে ক্রিকেটে আরও বড় স্বপ্ন লালন করছেন পেরিযশ্বমী। তাঁর মতই আরও বেশ কিছু তরুণ প্রতিভাবান শিখছেন নটরাজনের অ্যাকাডেমিতে।

ক্রিকেটে ক্যারিয়ার গড়ার স্বপ্ন থাকলেও অনেক ছেলেই অর্থাভাব কিংবা সুবিধা থাকায় স্বপ্ন পূরণ করতে পারতেন না। তবে এখন নটরাজনের অ্যাকাডেমিতে অনেক পরিবারই নিজ সন্তানদের ভর্তি করাচ্ছেন।

চিন্নাপ্পামপট্রিতে এখন নিজের একটি মাঠও তৈরি করছেন নটরাজন। তাঁর চাচাই সেটির দেখভাল করছেন, মাস ছয়েকের মাঝেই প্রস্তুত হওয়ার কথা। চেন্নাই থেকে আনা হয়েছে টার্ফ উইকেটও।

আইপিএলের পঞ্চদশ আসরের মেগা নিলামে আবারও নটরাজনকে দলে ভেড়ায় সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ। ৪ কোটি রুপিতে চড়ামূল্যেই বিক্রি হন এই পেসার। চতুর্দশ আসরে ইনজুরি আর করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় মাত্র দুই ম্যাচ খেলেন এই পেসার।

অন্তত নেট বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে থাকার স্বপ্ন দেখেছিলেন। ভেবেছিলেন পুরো আসরে পারফরম করলে জায়গা করে নিবেন দলের সাথে; কিন্তু সেটি হয়নি। করোনায় ছিটকে গেছেন তিনি। ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যাওয়ার স্বপ্নটা পূরণ হয়নি। সেটি পূরণ না হলেও নটরাজনের প্রত্যাশা এখন ২০২২ বিশ্বকাপ খেলা।

ক্যারিয়ারের এখনও মাত্র শুরু। এরই মধ্যে সফলতার কয়েক ধাপ পেরিয়ে গেছেন; স্বপ্নটা আরও উপরে। এক তামিল নায়ক তাঁর বায়োপিক নিয়েও কাজ করার আগ্রহ জানান। নটরাজন আপাতত স্রেফ ক্যারিয়ার নিয়েই ভাবতে চান। ফিটনেস ঠিক রেখে ফর্ম ধরে রাখতে চান। জাতীয় দলের হয়ে খেলতে চান লম্বা সময়। নিজের স্বপ্নকে ধীরে ধীরে পূর্ণতা দিতে চান সাফল্যের শীর্ষ মঞ্চে।

এবার সেই স্বপ্নটা চূড়ান্ত ভাবে সফল হোক, তাহলেই নটরাজনের গোটা জীবনের সংগ্রামটা সফল হবে।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...