বিজয়ের অপচয়

লম্বা সময় জাতীয় দলের ভাবনায় না থাকা বিজয় আবার ডাক পেলেন। এর আগে এনামুল হক বিজয় বাংলাদেশের হয়ে শেষ খেলেছিলেন ২০১৫ সালে। এরপর ঘরোয়া লিগে টুকটাক রান করেছেন। তবে তা জাতীয় দলে ফেরার জন্য যথেষ্ট ছিল না। এছাড়া বাংলাদেশও আর কখনো বিজয়কে প্রয়োজন মনে করেনি। কেননা এরপর দেশের ক্রিকেট তামিমের সাথে লিটন, সৌম্যদের মত ওপেনারদের পেয়েছে।

ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে ব্যাট হাতে কী দুরন্ত ফর্মই না দেখালেন। এক মৌসুমে এক হাজারের বেশি রান। নতুন এক রেকর্ড। এনামুল হক বিজয়কে থামাতে পারেন এমন কোন বোলারই যেন দেশে নেই। প্রায় প্রতিটা ম্যাচে রান করেছেন। তবে জাতীয় দলের হয়ে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে একেবারেই ব্যর্থ বিজয়। সেই ব্যর্থতার দায় কী শুধুই বিজয়ের নাকি তারচেয়ে অনেক বেশি.

লম্বা সময় জাতীয় দলের ভাবনায় না থাকা বিজয় আবার ডাক পেলেন। এর আগে এনামুল হক বিজয় বাংলাদেশের হয়ে শেষ খেলেছিলেন ২০১৫ সালে। এরপর ঘরোয়া লিগে টুকটাক রান করেছেন। তবে তা জাতীয় দলে ফেরার জন্য যথেষ্ট ছিল না। এছাড়া বাংলাদেশও আর কখনো বিজয়কে প্রয়োজন মনে করেনি। কেননা এরপর দেশের ক্রিকেট তামিমের সাথে লিটন, সৌম্যদের মত ওপেনারদের পেয়েছে।

ফলে বিজয়ের জন্য জাতীয় দলে ফেরাটা যেন প্রায় অসাধ্যই হয়ে যায়। আর এবার ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে সেই অসাধ্যটাই সাধন করলেন। জাতীয় দলেও ডাক পড়লো। বলা বাহুল্য বিজয় তাঁর এই অবিশ্বাস্য ফর্ম দেখিয়েছেন ওয়ানডে ফরম্যাটে। তবে জাতীয় দলে তাঁকে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দুই ফরম্যাটের দলেই ডাকা হলো।

অথচ টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে সাম্প্রতিক সময়ে কোথাওই পারফর্ম করেননি তিনি। বাংলাদেশ এই ফরম্যাটে ওপেনার খুঁজে পাচ্ছেনা বলে বিজয়কে নামিয়ে দেয়া হলো। এর আগে অবশ্য ঘটনা আরো আছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দলের জন্য ডাকা হয়েছিল তাঁকে। তবে এরপর হঠাত করে টেস্ট ম্যাচও খেলানো হলো তাঁকে।

অথচ বিজয় এর আগে সাদা পোশাকের ক্রিকেট খেলেছিলেন আট বছর আগে। এমনকি শেষ ঘরোয়া মৌসুমেও লাল বলের ক্রিকেটে বেশ বাজে সময় পার করেছেন তিনি। তবুও বাংলাদেশ দল টেস্ট ক্রিকেটে তাঁকে নামিয়ে দিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের কন্ডিশনে। স্বাভাবিক ভাবেই বিজয় নিজেকে প্রমাণ করতে পারেননি।

এরপর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেও খেলানো হলো এনামুল হক বিজয়কে। এক দুইটা ম্যাচ নয়, এবার দলে ফেরার পর মোট সাতটা ম্যাচ খেলেছেন তিনি। এমনকি এশিয়া কাপের দলেও তাঁকে রাখা হলো। আর এই ফরম্যাটেও বিজয় নিজেকে প্রমাণ করতে পারেননি। এই সাত টি-টোয়েন্টি ম্যাচের কোন ম্যাচেই বিজয়ের ব্যাট থেকে প্রত্যাশিত রান আসেনি।

এই সাত ম্যাচ থেকে বিজয় সর্বসাকুল্যে করেছেন ৯০ রান। সর্বোচ্চ ২৬ রানের ইনিংস এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে। এই সাত টি-টোয়েন্টি ম্যাচে তাঁর ব্যাটিং গড় ১২.৮৫ এবং স্ট্রাইকরেট ৯৫.৭৪। ফলে কোনকিছুই আসলে বিজয়ের পক্ষে কথা বলছেনা। যতটুকু জানা যায় এই ফরম্যাটে আপাতত আর বিবেচিতও হবেন না তিনি।

তবে বিজয়ের এই ব্যর্থতার দায় কী শুধুই তাঁর নিজের। নাকি কোনরকম পক্রিয়া ছাড়া বিজয়কে বাইশ গজে নামিয়ে দেয়ার দায়টা সবচেয়ে বাংলাদেশ দলের। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে কোনরকম প্রমাণ না করা একজন ব্যাটসম্যানকে হঠাত করে নামিয়ে দিয়ে বরং তাঁকে চাপেই ফেলা হলো।

এছাড়া যে ফরম্যাটে পারফর্ম করে বিজয় জাতীয় দলে ফিরলেন সেই ফরম্যাটেই তাঁকে নামানো হলো সবার পরে। ওয়ানডে ফরম্যাটে নিজের পাওয়া সুযোগটা ভালো ভাবেই কাজে লাগিয়েছেন বিজয়। তিন ম্যাচের মধ্যে দুটিতেই হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন।

অথচ, এর আগে বিজয়ের উপর বাড়তি চাপ তৈরি করার জন্য সবই করেছে বাংলাদেশ দল। টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ব্যর্থ হবার পর ওয়ানডেতে পারফর্ম করাটা তাঁর জন্য কঠিনই ছিল। তবুও বিজয় নিজেকে এই ফরম্যাটে প্রমাণ করেছেন। তাঁর সেই ফর্ম যে ভুল ছিল না সেই বার্তাটা দিয়ে গেলেন।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...