সিঙ্গাপুরের বর্তমান, অস্ট্রেলিয়ার ভবিষ্যৎ

বেশ প্রতিযোগিতামূলক হচ্ছে ক্রিকেট। তাইতো সহযোগী দেশগুলো থেকে উঠে আসা খেলোয়াড়রা পাচ্ছেন প্রাধান্য। বিশেষ করে যারা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের মেজাজ বুঝে ব্যাটিং-বোলিং করতে পারেন। তেমনই একজন খেলোয়াড় সিঙ্গাপুরের টিম ডেভিড। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) গেলবার রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর হয়ে কেবল একটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন ডেভিড।

চার-ছক্কা হইহই,

বল গড়ায় গেল কই?

ক্রিকেটের সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম সংস্করণ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের মূলমন্ত্রই যেন তাই। মাঠের চারিপাশে ছয় চারের বন্যা বয়ে যাবে। বল হারিয়ে যাবে। এসবই তো আরও বেশি সুন্দর ও উপভোগ করে তোলে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটকে। আর এই চাহিদা মেটাতে ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটগুলোতে চাহিদা বেড়েছে পেশিশক্তি রয়েছে এমন সব ব্যাটারদের। সে চাহিদাটা এখন অবশ্য জাতীয় দল অবধি ছড়িয়ে গেছে।

বেশ প্রতিযোগিতামূলক হচ্ছে ক্রিকেট। তাইতো সহযোগী দেশগুলো থেকে উঠে আসা খেলোয়াড়রা পাচ্ছেন প্রাধান্য। বিশেষ করে যারা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের মেজাজ বুঝে ব্যাটিং-বোলিং করতে পারেন। তেমনই একজন খেলোয়াড় সিঙ্গাপুরের টিম ডেভিড। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) গেলবার রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর হয়ে কেবল একটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন ডেভিড।

তবুও এবার তাঁর দাম উঠেছে ৮.২৫ কোটি রুপি। অথচ তাঁর ভিত্তিমূল্য ছিল মাত্র ৪০ লাখ রুপি। ২০ গুণ অধিক মূল্যে বিক্রি হয়েছেন ডেভিড। এ থেকে আন্দাজ করে নেওয়া যায় ডেভিড নিজের চাহিদাটা ঠিক কতখানি বাড়িয়ে নিয়েছেন, নিজের অভিজ্ঞতা আর যথাযথ পেশিশক্তির ব্যবহারে। এখন তো শোনা যাচ্চে অস্ট্রেলিয়া জাতীয় দলেও নাকি ডাক পেতে চলেছেন ডেভিড। তবে কি শুরু থেকেই এমন মসৃণ এক পথ পারি দিয়ে এসেছেন ডেভিড?

না, মোটেও না। এ পৃথিবীর ইতিহাসে খুব একটা মসৃণ পথ পার করে সাফল্য ছুঁয়ে দেখেছে এমন উদাহরণ খুঁজে পাওয়া দায়। ডেভিডও তাঁর ব্যতিক্রম না। প্রথম তিনি সিঙ্গাপুর জাতীয় ক্রিকেট দলে ডাক পান তাঁর জন্মসূত্রে। যেহেতু তাঁর জন্ম সিঙ্গাপুরে। বছর দুয়েক তিনি কাটিয়েছেন সেখানে। আর তাঁর বাবা-মা ছিলেন সাত বছর। এসব দিক বিবেচনায় সিঙ্গাপুরের হয়ে খেলতে ডেভিডে কোন বাঁধা ছিল না।

তবে ডেভিডের ক্রিকেটের হাতেখড়ি হয়েছে সেই অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে। তিনি যেন নতুন করে নিজেকে ফিরে পেলেন পাকিস্তান সুপার লিগে। দূর্দান্ত পারফর্ম করেছেন চ্যাম্পিয়ন দল লাহোর কালান্দার্সের হয়ে। এরপরই যেন তাঁর কদরটা বেড়ে যায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ‘পাওয়ার হিটার’ সংজ্ঞায় অনায়াসে বেঁধে ফেলা যায় তাঁকে।

দারুণ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করতে পারেন অসাধারণ সব বোলারদের বিপক্ষে। সাবলীল ব্যাটিং তাঁর। কোন ধরণের বাড়তি কষ্ট নিচ্ছেন তিনি তা দেখে বোঝার উপায় নেই। এমন সাবলীল একজন পাওয়ার হিটার যেকোন দলের প্রথম চাহিদা। সে সাথে মিডিয়াম পেস বোলিংটা যেন বাড়তি এক অস্ত্র। অথচ ছোট থাকতে তিনি ছিলেন বেশ স্বাস্থ্যবান একজন। কটু কথাও শুনতে হয়েছে তাঁকে।

স্কুল শেষ করে হাওয়া বদল করতে তিনি গিয়েছিলেন ইংল্যান্ডে। সেখানেই তিনি তাঁর ক্রিকেট দক্ষতা বিকশিত করেন। খেলেন ইংল্যান্ডের ‘সাউথ শিল্ড’ ও ‘নর্থ-ইস্ট লিগ’। সেখান থেকেই মানসিক ও শারীরিক পরিপক্কতা অর্জন করেন। ক্রিকেটের সব খুঁটিনাটি আয়ত্ত্ব করে ফেলেন তিনি। আর তাছাড়া নিজের অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে দারুণ এক শরীর তৈরি করে ফেলেন সব কটু কথা জবাব দেবেন বলে।

এরপর থেকে নিজেকে পাওয়ার হিটার হিসেবেই আবিষ্কার করতে শুরু করেন টিম ডেভিড। তারপর বিশ্বের নানা প্রান্তের ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেট খেলে নিজের অভিজ্ঞতা আরো পোক্ত করেন। বিগ ব্যাশ, ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (সিপিএল), পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) মতো বড় বড় ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটে নিজের শক্তিমত্তার প্রমাণ রাখেন। এত ভিন্ন কন্ডিশনে খেলেও তিনি তাঁর স্ট্রাইক রেট রেখেছেন প্রায় ১৬০-এর কাছাকাছি।

সময়ের সাথে তিনি হয়েছেন পরিপক্ক। আর নিজেকে নিয়ে যাচ্ছেন অনন্য এক উচ্চতায়। এখন দেখবার বিষয় তিনি আইপিএলের অন্যতম পছন্দের একজন হয়ে উঠতে পারন কিনা। সেই সাথে তাঁর মধ্যে থাকা সম্ভাবনা, সামর্থ্যের প্রমাণ রেখে অস্ট্রেলিয়ার মতো ক্রিকেট পরাশক্তির জার্সি গায়ে জড়িয়ে নামতে পারেন কিনা বাইশ গজে। সময়ের অপেক্ষা।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...