ভরসার রান বরষা

তেমনি ওয়ানডেতে প্রথম ক্রিকেটের হিসেবে ১০০ ম্যাচের মাইলফলক ছুয়েছিলেন রিচার্ড হ্যাডলি। হ্যাডলির স্বদেশী আরেকজন পরবর্তীতে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে টেস্ট, ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি এই তিন ফরম্যাটেই আলাদাভাবে ১০০ টি করে ম্যাচ খেলার গৌরব অর্জন করেন। আশ্চর্য হলেও এটাই সত্য সেই ক্রিকেটার ক্রিকেটে আসার আগে ছিলেন একজন হকি প্লেয়ার। বলছিলাম দেড় দশক ধরে নিউজিল্যান্ডের মিডল অর্ডারের দায়িত্ব সামলানো একজন রস টেইলরের কথা।

যেকোনো প্রথমই সবসময় স্পেশাল কিছু। এর পর আরো অনেকেই সেই একই কাজ করলেও প্রথমটির সেই আবেদন থেকেই যায়। টেস্ট ক্রিকেটে ১০০ টেস্ট অনেকেই খেলেছে কিন্তু প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে সবার আগে ১০০ টেস্ট খেলার কীর্তি গড়েছিলেন ইংল্যান্ডের কলিন কাউড্রি। তাই ১০০ তম টেস্টের কথা আসলেই লোকে সবার আগে কলিন কাউড্রির কথায় বলবে।

তেমনি ওয়ানডেতে প্রথম ক্রিকেটের হিসেবে ১০০ ম্যাচের মাইলফলক ছুয়েছিলেন রিচার্ড হ্যাডলি। হ্যাডলির স্বদেশী আরেকজন পরবর্তীতে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে টেস্ট, ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি এই তিন ফরম্যাটেই আলাদাভাবে ১০০ টি করে ম্যাচ খেলার গৌরব অর্জন করেন। আশ্চর্য হলেও এটাই সত্য সেই ক্রিকেটার ক্রিকেটে আসার আগে ছিলেন একজন হকি প্লেয়ার। বলছিলাম দেড় দশক ধরে নিউজিল্যান্ডের মিডল অর্ডারের দায়িত্ব সামলানো একজন রস টেইলরের কথা।

জাতীয় দলে আসার আগে খেলেছেন নিউজিল্যান্ডের বয়সভিত্তিক দলে। ২০০২ সালের অনুর্ধ-১৯ বিশ্বকাপে ছিলেন দলের অধিনায়ক। এর চার বছর পর ২০০৬ সালের মার্চে দেশের মাটিতে ওয়ানডে অভিষেক। ম্যাকলিন পার্কে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেই ম্যাচে ১৫ রানে আউট হলেও সেই ম্যাকলিন পার্কে ক্যারিয়ারের তৃতীয় ম্যাচেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অপরাজিত ১২৮ রানের ইনিংস খেলে নিজের সামর্থ্যের জানান দিয়েছিলেন ভালমতোই।

এরপর থেকে এখন পর্যন্ত ২৩২ টি ওয়ানডে খেলে ৪৮.৪৪ ব্যাটিং গড়ে ৮,৫৭৪ রান সংগ্রহ করেছেন। ২১ টি সেঞ্চুরি এবং ৫ ১টি হাফ সেঞ্চুরির সাহায্যে তিনি এই রান সংগ্রহ করেছেন। ওডিআই ক্রিকেটে নিউ জিল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তিনি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮,০০৭ রান করেছেন স্টিফেন ফ্লেমিং। টেস্ট ক্রিকেটেও ব্ল্যাক ক্যাপসদের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান টেইলরের । অন্যদিকে ১০২ টেস্টে ৪৬.০৫ ব্যাটিং গড়ে ১৯টি শতক ও ৩৩টি অর্ধশতকের সাহায্যে ৭,২৭৬ রান করেছেন। আছে তিনটি ডাবল সেঞ্চুরিও।

যেকোনো স্পোর্টসম্যানের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে উপযুক্ত সময় ধরা হয় একটু পরিণত হবার হবার। এবার চাইলে টেইলরের পরিসংখ্যান দিয়ে কথাটি মিলিয়ে নেওয়া যায়। ২০১৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ১০৩ ওয়ানডেতে ১৩টি শতক এবং ২৭টি অর্ধশতকের সাহায্যে ৬১.২৬ ব্যাটিং গড়ে ৪,৬৫৬ রান সংগ্রহ করেন তিনি।

শেষ চার বছরে গড়টা লক্ষ করুন। ২০১৭ সালে রান করেছেন ৬০.৫০ গড়ে ২০১৮ তে গড় দাঁড়িয়েছে ৯১.২৯। এরপর ২০১৯ সালে ২০ ইনিংসে প্রায় হাজারের কাছাকাছি (৯৪৩) রান করেছেন ৫৫. ৪৭ গড়ে। আর চলতি বছরে টেইলরের ওয়ানডে গড় ৯৯.০০।২০১৪ সালের পর থেকে কমপক্ষে চার হাজার রান করেছে এমন ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তার ব্যাটিং গড় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

দেড় দশক ধরে কিউইদের মিডল অর্ডারের সবচেয়ে বড় ভরসার নাম রস টেইলর। ওয়ানডেতে ১৭৮ ইনিংসে চার নাম্বার পজিশনে ব্যাট করেছেন ওয়ানডেতে এই ব্যাটিং পজিশনে তিনিই বিশ্বসেরা। ১৭৮ ইনিংস ব্যাট করে ১৯টি শতক এবং ৪৬টি অর্ধশতক হাঁকিয়ে ৫২.৪৪ ব্যাটিং গড়ে ৭,৬৫৭ রান সংগ্রহ করেছেন।

এই পজিশনে দ্বিতীয় সর্বাধিক ৬,৯৪৭ রান করেছেন শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তী ব্যাটসম্যান মাহেলা জয়াবর্ধনে। তিনি এ রান করেছেন ২১৯ ইনিংস ব্যাট করে। ওয়ানডেতে ২১ সেঞ্চুরির ১৯ টি করেছেন চার নাম্বারে ব্যাট করে। টেস্ট ক্রিকেটে চার নাম্বারে সবচেয়ে বেশি রান তোলা ব্যাটসম্যানদের তালিকায় টেইলর আছেন ছয় নাম্বারে।

কিউইদের ব্যাটিং লাইন আপের রস টেইলরের গুরুত্ব ঠিক কতখানি এই সংখ্যাগুলো সেটিই জানান দেয়। রান তাড়া করে জয় পাওয়া ম্যাচেও অনন্য রস টেইলর। এখন পর্যন্ত নিউজিল্যান্ড ওয়ানডে ছয়বার তিন শতাধিক রান তাড়া করে ম্যাচ জিতেছে। যার মধ্যে টেইলর পাঁচ ম্যাচে একাদশে ছিলেন এবং চার ম্যাচেই তিনি শতক হাঁকিয়েছেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সময়ের সাথে সাথে নিজেকে ছাপিয়ে যাচ্ছেন এই ব্ল্যাক ক্যাপ ব্যাটসম্যান। ৩৭ ছুইছুই রস টেইলর এখনও খেলে যাচ্ছে সমান তালে। কোথায় গিয়ে থামবেন সেটা আপাতত তোলা রইল সময়ের কাছে।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...