তিন সেঞ্চুরির আক্ষেপের পরও স্মরণীয় দিন

সেই হিসেবে সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম তিন দিনে বাংলাদেশের পারফরম্যান্সে আশা করার যথেষ্ট সুযোগ আছে। তৃতীয় দিনে তিন জন ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরির কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলেন। তিনজনের কেউই সেঞ্চুরির দেখা না পেলেও, বাংলাদেশের লিড প্রায় শতরান ছুঁয়ে গেছে। ফলে, টেস্টটা এখনও বেশ ভাল ভাবেই আছে বাংলাদেশের হাতে।

মাউন্ট মঙ্গানুইতে তৃতীয় দিনশেষে শক্ত অবস্থানেই আছে বাংলাদেশ। তৃতীয় দিন শেষে মাহমুদুল হাসান জয়, মুমিনুল হক সৌরভ ও লিটন দাসের তিন হাফ সেঞ্চুরিতে ছয় উইকেটে ৪০১ রান সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ। সেঞ্চুরির কাছে যেয়ে বিদাগ নেন মুমিনুল-লিটনরা। বোল্ট-ওয়াগনারের জোড়া তিন উইকেট শিকারের পরেও প্রথম ইনিংসে এখন পর্যন্ত ৭৩ রানে এগিয়ে আছে সফরকারীরা।

আগের দিনের ২ উইকেটে ১৭৫ রান নিয়ে তৃতীয় দিনের শুরুতেই ফিরে যান আগের দিনে মেইডেন ফিফটি করা মাহমুদুল হাসান জয়। ৭৮ রানের ইনিংসের পর নিল ওয়াগনারের তৃতীয় শিকার হয়ে বিদায় নেন তিনি। এরপর মুশফিকের সাথে জুটি বাঁধেন অধিনায়ক মুমিনুল। তবে খুব বেশি সময় থিতু হতে পারেননি মুশি। মাত্র ১২ রান করে ট্রেন্ট বোল্টের বলে বোল্ড হয়ে ফিরলে ২০৪ রানে ৪ উইকেট হারায় সফরকারীরা।

পঞ্চম উইকেটে লিটন দাশকে নিয়ে আবার ইনিংস মেরামত শুরু করেন মুমিনুল। দু’জনের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে রানের চাকা এগোতে থাকে বাংলাদেশের। একপ্রান্তে ১৪৭ বলে মুমিনুল তুলে নেন ব্যক্তিগত ফিফটি। শুরুর দিকে কিছুটা নড়বড়ে হলে ধীরে ধীরে সেট হয়ে যান বাংলাদেশ অধিনায়ক। আরেক প্রান্তে লিটন সাদা পোশাকে নিজের ফর্ম ধরে রেখে রান তুলতে থাকেন। পঞ্চম উইকেটে দু’জনের সেঞ্চুরি জুটির পথে লিটন দাশ তুলে নেন ক্যারিয়ারের ১১তম ফিফটি। ৪ উইকেটে ৩০৭ রান নিয়ে চা-বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।

এরপর দিনের শেষ সেশনে ব্যাট করতে নেমে দু’জনে মিলে দেড়শো রানের জুটি পূর্ণ করেন। আর এই জুটির পথে প্রথমবারের মতো এশিয়ার বাইরে লিড নেয় বাংলাদেশ। এরপর দলীয় ৩৬১ রানে সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ১২ রান দূরে থাকতে বোল্টের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন মুমিনুল! অল্প সময়ের ব্যবধানে বোল্টের কাছে ধরা পড়ে ব্যক্তিগত ৮৬ রানে শেষ লিটন দাশও! ৩৭০ রানে ৬ উইকেট হারায় সফরকারীরা।

এরপর ষষ্ঠ উইকেটে ইয়াসির আলি রাব্বি ও মেহেদি মিরাজের ব্যাটে চারশোর কোটা পার করে বাংলাদেশ। ৬ উইকেটে ৪০১ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শেষ করে সফরকারীরা।

নিউজিল্যান্ডের মাটিতে এমনিতেই বাংলাদেশের পারফরম্যান্স সুবিধাজনক না কখনোই। এর বড় একটা কারণ হল ওখানকার কন্ডিশন। নিউজিল্যান্ডে এটি পাঁচ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের চতুর্থ সফর। এই সফরগুলোতে তো বটেই, সব মিলিয়ে নিউজিল্যান্ডে তাদের বিপক্ষে তিন সংস্করণ মিলিয়ে ৩২ ম্যাচ খেলে সব হেরেছে বাংলাদেশ।

সেই হিসেবে সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম তিন দিনে বাংলাদেশের পারফরম্যান্সে আশা করার যথেষ্ট সুযোগ আছে। তৃতীয় দিনে তিন জন ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরির কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলেন। তিনজনের কেউই সেঞ্চুরির দেখা না পেলেও, বাংলাদেশের লিড প্রায় শতরান ছুঁয়ে গেছে। ফলে, টেস্টটা এখনও বেশ ভাল ভাবেই আছে বাংলাদেশের হাতে।

  • সংক্ষিপ্ত স্কোর

নিউজিল্যান্ড (প্রথম ইনিংস) – ৩২৮/১০ (১০৮.১ ওভার); কনওয়ে ১২২(২২৭), হেনরি নিকোলস ৭৫ (১২৭), উইল ইয়ঙ ৫২(১৩৫); শরিফুল ২৬-৭-৬৯-৩, মিরাজ ৩২-৯-৮৬-৩, মুমিনুল ৪.১-০-৬-২

বাংলাদেশ (প্রথম ইনিংস) – ৪০১/৬ (১৫৬ ওভার); মুমিনুল ৮৮(২৪৪), লিটন ৮৬(১৭৭), শান্ত ৬৪(১০৯); বোল্ট ৩০-১১-৬১-৩, ওয়াগনার ৩৮-৯-৯৮-৩।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...