বিশ্বজুড়ে ফিরতে শুরু করেছে ক্রিকেট। অনাকাঙ্খিত বিরতি শেষে আসছে জুলাইয়ে শুরু হবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটও। ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা কিংবা আফগানিস্তান – অনেক দলই অনুশীলন শুরু করেছে। নিজেদের প্রস্তুত করছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিবি)।
ক্রিকেটারদের বরণ করে নিতে দেশের সবগুলো স্টেডিয়াম এখন প্রস্তুত। ক্রিকেটাররাও ব্যক্তিগত অনুশীলনের জন্য মাঠে নামার জন্য মুখিয়ে আছে।
মুশফিকুর রহমানের মত কিছু শীর্ষ ক্রিকেটার বিসিবির কাছে ‘হোম অব ক্রিকেট’ খ্যাত মিরপুরের শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামসহ অন্যান্য স্টেডিয়ামে অনুশীলনের অনুমতি চেয়েছিলেন।
দ্বিধা-দ্বন্দ্বে থাকা বিসিবি প্রথমে অবশ্য বিষয়টি নাকচ করে দিয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে একক অনুশীলনের অনুমতি দিয়েছে বোর্ড। এ ক্ষেত্রে ক্রিকেটের আইসিসির গাইডলাইন অনুসরণ করছে বাংলাদেশের ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রন সংস্থাটি।
তবে সবার আগে বিসিবির প্রধান কাজ ছিল ভেন্যুগুলোকে জীবানু মুক্ত করা। যেটি তারা ইতোমধ্যে শেষ করেছে। বিসিবির গ্রাউন্ড কমিটির ম্যানেজার সৈয়দ আবদুল বাতেন বলেন,‘ দেশের সবগুলো ক্রিকেট ভেন্যু এখন সম্পূর্ণভাবে জীবানু মুক্ত এবং অনুশীলনের জন্য প্রস্তুত। মাঠকে জীবানু মুক্ত করার বিষটি হচ্ছে একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া। এমনকি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের আগেও মাঠ নিয়মিত ভাবে জীবানুমুক্ত করা হতো। তবে পার্থক্য হচ্ছে এখন আমরা আরো বেশী সতর্কতার সঙ্গে মাঠকে জীবানুমুক্ত করার কাজটি করছি।’
কক্সবাজার ছাড়া বাকি ভেন্যুগুলো ক্রিকেটারদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত রয়েছে উল্লেখ করে বাতেন বলেন, ‘কক্সবাজার এখন লকডাউনে রয়েছে। তাই এই মুহুর্তে সেখানকার ভেন্যু ব্যবহার করা যাবে না। তবে আমরা সেখানেও নিয়মিত জীবানু দূর করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি ২০ জুন লকডাউন তুলে নেয়ার পর থেকে সেখানে ক্রিকেটাররা অনুশীলন করতে পারবে।’
এদিকে আগামী ২৫ জুন থেকে মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম খেলোয়াড়দের অনুশীলনের জন্য খুলে দেয়ার পরিকল্পনা করছে বিসিবি। তবে একই সময় শুধুমাত্র একজন ক্রিকেটার দুইজন ক্রিকেট স্টাফকে সঙ্গে নিয়ে অনুশীলন করতে পারবে। এজন্য একেক জন খেলোয়াড়ের জন্য সর্বমোট সময় বরাদ্দ সময় এক ঘণ্টা।
একক অনুশীলন পরিচালনা করার পর ধাপে ধাপে দলগত অনুশীলন শুরু করবে বিসিবি। প্রথম ধাপে একত্রে তিন জনের বেশী ক্রিকেটার একই ভেুন্যতে একত্রে অনুশীলন করতে পারবে না। ৩৭ জন খেলোয়াড় নিয়ে একটি পুল গঠন করেছে বোর্ড। তারাই কেবল মাত্র শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুশীলনের সুযোগ পাবে।
প্রস্তুত রয়েছে বিসিবির চিকিৎসা বিভাগও। প্রধান চিকিৎসক ডাক্তার দেবাশীষ চৌধুরী জানিয়েছেন, অনুশীলনের জন্য তিনটি আলাদা মডিউল তৈরি করেছেন তারা। প্রথম ধাপে ক্রিকেটাররা একা অনুশীলন করবেন, দ্বিতীয় ধাপে আসবে দলগত অনুশীলন। আরেকটা পর্যায় রাখা হয়েছে বোলারদের জন্য।
জানিয়ে রাখা ভাল, কোভিড-১৯ এর মাহামারির কারণে গত ১৬ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে দেশের সব ধরনের ক্রিকেটীয় কর্মকান্ড। মাত্র এক রাউন্ড শেষেই বন্ধ হয়ে গেছে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল)। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাসের কারণে বাংলাদেশ বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে ওয়ানডে ও টেস্ট ক্রিকেটের পাকিস্তান সফর সুচি। সেই সঙ্গে অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্থগিত হয়ে গেছে আয়ারল্যান্ড ও ইংল্যান্ড সফর সুচি। এমনকি জুন-জুলাইয়ের পুর্ব নির্ধারিত শ্রীলঙ্কা সফল সুচিও হুমকিতে পড়েছে।