লাকমলের রূপান্তর কাব্য

গত তিন বছরে তাঁর বোলিং গড় যথাক্রমে ২৩,১৫ ও ২৪। তাই তাঁর বোলিং নিয়ে কতটা কাজ করেছেন সেটা তাঁর পরিসংখ্যানই বলছে। এছাড়া গত তিন বছরের পারফর্মেন্স তাঁকে এই সময়ের সেরাদের কাতারে নিয়ে গিয়েছে। যদিও সেরাদের আলোচনায় কখনোই তাঁর নাম উঠে আসেনা। হয়তো উপমহাদেশের ওই ফাটা পিচে ক্যারিয়ারের অধিকাংশ সময় বল করতে হয় বলেই লাকমলরা বিশ্বসেরাদের একজন হন না। তবুও যেই দু-একবার ওই সিমিং কন্ডিশন গুলোতে খেলতে নামেন তখনই জানান দেন পেস বোলিংটা আমিও পারতাম।  

উপমহাদেশের কন্ডিশন এমনিতেই পেসারদের জন্য খুব একটা সুখকর নয়। তাছাড়া এখানকার দেশগুলোতে কিংবদন্তি সব স্পিনার জন্ম নেয়ায় পিচ ও তৈরি করা হতো স্পিনারদের জন্য।

এই ধারা যে এখন একেবারেই নেই তা বলা যায় না তবে এখন উপমহাদেশেও পেস বান্ধব উইকেট করা হয়। ফলে এখান থেকেও এখন উঠে আসছে আন্তর্জাতিক মানের পেসার। শ্রীলঙ্কার ক্ষেত্রে বিষয়টা প্রায় একইরকম। বিশেষ করে আরো প্রায় এক যুগ আগে শ্রীলঙ্কার টেস্ট দলে একজন পেসার কোনো গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র।

ব্যাটিংয়ে কুমার সাঙ্গাকারার, তিলকারত্নে দিলশানদের মত কিংবদন্তি কিংবা স্পিন বোলিংয়ে রঙ্গনা হেরাথদের মাঝে একজন পেসার কী করেই বা গুরুত্বপূর্ণ হবেন। তাছাড়া টেস্টে প্রথম দুই দিনের পর ওই ফাঁটা চৌচির স্পিনিং ট্র্যাকে একজন পেসারের ভূমিকাই বা কী?

এখানে পেসারদের অবস্থা এতটাই করুণ যে চামিন্দা ভাস ও নুয়ান কুলাসেকারা বাদে আর কোনো পেসারের টেস্ট বোলিং গড় ৩০ এর নিচে নেই (শ্রীলঙ্কায় অন্তত ২৫ টি টেস্ট উইকেট প্রাপ্তদের মধ্যে)। প্রায় এক যুগ আগে এভাবেই শুরু হয়েছিল সুরাঙ্গা লাকমলের টেস্ট ক্যারিয়ার।

প্রায় তিন বছর টেস্ট খেলার পর তাঁর বোলিং গড় ছিল ৬৫.৭৫। তবে ২০১৪ সালে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের বিপক্ষে পাঁচ টেস্টে মোট ১৯ টি উইকেট নিলে তাঁর ভাগ্য কিছুটা বদলায়। তবে এরপরেও ৪২ টেস্ট খেলার পর ২০১৭ সালে তাঁর বোলিং গড় ছিল ৪৪.৯৪। তবে ঘরের মাঠে তাঁর গড় তখনো ৬০-এর বেশি। তবে ২০১৮ সালের শুরু থেকেও তাঁর পারফরম্যান্স যেন পুরো বদলে যায়।

গত তিন বছরে খেলা ২২ টেস্টে তাঁর বোলিং গড় মাত্র ২৪.০৭। এই সময়ে শ্রীলঙ্কার হয়ে তিনি খেলেছেন অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও। দেশের বাইরে গত তিন বছরে তাঁর বোলিং এভারেজ মাত্র ২২.৩০। নিজের দেশের থেকে দেশের বাইরে কম বোলিং এভারেজ এমন পেসার ছিলেন শুধুমাত্র ভারতের জাসপ্রিত বুমরাহ। এখন এই তালিকায় যুক্ত হয়েছেন শ্রীলঙ্কার পেসার লাকমলও। দেশের বাইরে তাঁর বোলিং গড় ৩২.০৭ ও দেশের মাটিতে তা ৫০.৮৭। ফলে শ্রীলঙ্কার বাইরে তিনি কতটা কার্যকর তা বোঝাই যাচ্ছে।

যেখানে ক্যারিয়ারের প্রথম ৮ বছর তাঁর বোলিং গড় ছিল প্রায় ৪৫ এখন তা কমে হয়েছে ৩৬.৫৩। গত তিন বছরে তাঁর বোলিং গড় যথাক্রমে ২৩,১৫ ও ২৪। তাই তাঁর বোলিং নিয়ে কতটা কাজ করেছেন সেটা তাঁর পরিসংখ্যানই বলছে।

এছাড়া গত তিন বছরের পারফরম্যান্স তাঁকে এই সময়ের সেরাদের কাতারে নিয়ে গিয়েছে। যদিও সেরাদের আলোচনায় কখনোই তাঁর নাম উঠে আসেনা। হয়তো উপমহাদেশের ওই ফাটা পিচে ক্যারিয়ারের অধিকাংশ সময় বল করতে হয় বলেই লাকমলরা বিশ্বসেরাদের একজন হন না। তবুও যেই দু-একবার ওই সিমিং কন্ডিশন গুলোতে খেলতে নামেন তখনই জানান দেন পেস বোলিংটা আমিও পারতাম।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...