আরো শক্ত হয়ে ফিরতে চায় ভারত

নিজেদের চেনা কন্ডিশনে এমন পরাজয়ের পর বোলারদের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলি। কোহলি কোনো অজুহাত দিলেন না, বরং আরো শক্ত হয়ে ফেরার আশাবাদ জানালেন।

কিছু দিন আগেই অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ইতিহাস গড়ে এসেছে ভারত। আজ নিজেদের মাটিতেও ভারতের সামনে সুযোগ ছিলো বিশ্ব রেকর্ড গড়ার। কিন্তু সিরিজের প্রথম ম্যাচে ২২৭ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরেছে স্বাগতিকরা।

ঘরের মাঠে সর্বশেষ ১৪ টেস্ট ধরে অপরাজিত ছিলো ভারত। আরো একটু পিছনে ফিরে তাকালে দেখা যাচ্ছে ২০১২ সালের পর নিজেদের মাঠে মাত্র একটি টেস্টে হেরেছে ভারত; সেটিও প্রায় চার বছর আগে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। এই পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে ঘরের মাঠে কেমন অপ্রতিরোধ্য ছিলো ভারতীয় দল।

ভারতের মাটিতে এর আগের সিরিজ গুলোতেও খুব সুবিধা করতে পারেনি ইংল্যান্ড। ২০১২ সালে সিরিজ হারের পর ২০১৬ সালে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে চারটিতেই হেরেছিলো ইংলিশরা; প্রাপ্তি ছিলো একটি মাত্র ড্র। গত নয় বছরে ভারতের মাটিতে টেস্ট জিততে পারেনি ব্রিটিশরা। আর সেই তাঁরাই কিনা আজ সকল প্রতিরোধ ভেঙে জয় তুলে নিলেন ভারতীয় দূর্গে।

নিজেদের চেনা কন্ডিশনে এমন পরাজয়ের পর বোলারদের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলি। কোহলি কোনো অজুহাত দিলেন না, বরং আরো শক্ত হয়ে ফেরার আশাবাদ জানালেন। তিনি বলেন, ‘ভারত এমন কোনো দল নয় যে হারের পর অজুহাত দেবে। আমরা জিততে পারিনি নিজেদের ভুলে। আর আমি এটাও জানি, এই খারাপ সময় ভেঙে বের হয়ে আসার সামর্থ্য আমাদের আছে। আমরা আরো শক্তিশালী হয়ে ফিরবো।’

প্রথম ইনিংসে কোন চাপই তৈরি করতে পারেনি ভারতীয় বোলাররা। ম্যাচ শেষে কোহলি জানিয়েছেন দ্বিতীয় ইনিংসে চাপ সৃষ্টি করলেও জয়ের জন্য যথেষ্ঠ ছিলো না তা।

কোহলি বলেন, ‘আমি মনে করি বোলাররা চাপ তৈরি করতে পারেনি। আমাদের দেহের ভাষা ও তীব্রতা এতো ছিলো না। সম্মিলিতভাবে, বোলিং ইউনিট হিসাবে শুধু প্রথম ইনিংসে পেস বোলররা ও অশ্বিন বেশ ভালো বল করেছে। তবে আমাদের আরো কিছু রান আটকানো উচিত ছিলো। রান আটকাতে বোলারদের চাপ তৈরি করা উচিত ছিল।’

ভারতীয় অধিনায়ক আরো বলেন, ‘এটি খুব মন্থর উইকেট ছিলো । কিন্তু প্রথম দুই দিনে খুব বেশি প্রভাব ফেলেনি। ব্যাটসম্যানদের জন্য কাজটা সহজই ছিলো। প্রতিপক্ষের উপর চাপ তৈরি করতে বোলিং ইউনিটকে ভালো করতে হয়। আমরা বুঝতে পারছি এই ম্যাচে এটা করতে পারিনি। দ্বিতীয় ইনিংসে আমরা ওদের উপর যথেষ্ঠ চাপ সৃষ্টি করেছিলাম। কিন্তু একটা টেস্ট ম্যাচ জিততে এটা যথেষ্ঠ ছিল না।’

নিজেদের বোলারদের ব্যর্থতা দেখলেও সফরকারীদের কৃতিত্ব দিতে ভুল করেননি বিরাট কোহলি। এই কন্ডিশনে এতো সময় ব্যাট করার জন্য ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের প্রশংসাও করেছেন ভারতীয় অধিনায়ক।

তিনি বলেন, ‘ইংল্যান্ডের প্রশংসা করতে হয়। তাঁরা স্কোর বোর্ডে অনেক রান তুলেছিলো। এই কন্ডিশনে উইকেটে ওরা অনেক সময় কাটিয়েছে; যেটা সহজ নয়। দ্বিতীয় ইনিংসে আমরা ব্যাটে বলে ভালো করেছি। কিন্তু প্রথম ইনিংসে বোলার এবং প্রথম সারির ব্যাটসম্যানরা খারাপ করেছে। হ্যা, আমাদের বুঝতে হবে যে এই ম্যাচে আমরা যেটা করতে পারিনি সেগুলো নিয়ে কাজ করে উন্নতি করতে হবে। এই ম্যাচে ইংল্যান্ড অনেক পেশাদার ছিলো এবং আমাদের থেকেও ধারাবাহিক ছিল।’

এই ম্যাচের ভুল গুলো বিশ্লেষণ করে উন্নতি করার চেস্টা করবে ভারত। কোহলি বলেন, ‘আমরা ব্যাটসম্যান হিসাবে যে ধরণের শট খেলেছি ও সিদ্বান্ত নিয়েছি তা বিশ্লেষণ করবো। আমরা সর্বদা একটা দল হিসাবে শিখছি। টেস্ট ক্রিকেট সব সময় কঠিন এবং ইংল্যান্ড এটার জন্য আমাদের থেকেও বেশী প্রস্তুত ছিলো।

প্রথম ইনিংসে ৯১ রানের দারুণ ইনিংস খেলেছিলেন ঋষভ পান্ত। দ্বিতীয় ইনিংসেও বড় রান তাড়া করতে নেমে এই ব্যাটসম্যানের দিকে তাকিয়ে ছিলো ভারত। তবে ব্যাট হাতে ব্যর্থ ছিলেন পান্ত। কিন্তু উইকেটের পিছনে সব সময় প্রাণবন্ত দেখা যায় পন্তকে। কোহলি জানিয়েছেন পান্তের এরকম ব্যক্তিত্ব দলের জন্যও সহায়ক।

কোহলি বলেন, ‘ও মাঠে মজা করতে পছন্দ করে। এটিই তাঁর ব্যক্তিত্ব। আমরা চাই পান্ত এটি চালিয়ে যাক। কারণ এটি সবাইকে বিনোদন দেয়। যখন পরিস্তিতি অনুকূলে থাকে না তখন ওর কথা গুলো খুব সহায়ক হয়। ওর ব্যক্তিত্ব দলের জন্য অনেক সহায়ক ও শক্তি এনে দেয়। আমরা এভাবেই চালিয়ে যেতে চাই।’

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...