বিশ্বাস হারাননি নেইমার

নেইমার যতক্ষণ মাঠে ছিলেন অধিকাংশ সময় বলের দখল নিজের করে নিয়েছিলেন। কিন্তু ডান পায়ের গোড়ালিতে ‘ডিরেক্ট ট্রমা’ নামক চোট নিয়েই ম্যাচের আশি মিনিটের মাথায় মাঠ ছাড়তে হয়েছিল এই ফুটবলারকে। ততক্ষণে অবশ্য ব্রাজিলের জয় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল।

খবরটা অবশ্য পুরোনো। ফুটবল বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে খেলা হবে না নেইমারের। সার্বিয়ার বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচে দারুণ খেলেছে নেইমারের ব্রাজিল। নেইমার নিজেও ছিলেন দুর্দান্ত। ক্লাব ফুটবলে দারুণ ছন্দে থাকা নেইমার যে বিশ্বকাপের আসরে নিজ দেশের জার্সিতেও অনবদ্য থাকবেন, সেটা জানাই ছিল।

নেইমার যতক্ষণ মাঠে ছিলেন অধিকাংশ সময় বলের দখল নিজের করে নিয়েছিলেন। কিন্তু ডান পায়ের গোড়ালিতে ‘ডিরেক্ট ট্রমা’ নামক চোট নিয়েই ম্যাচের আশি মিনিটের মাথায় মাঠ ছাড়তে হয়েছিল এই ফুটবলারকে। ততক্ষণে অবশ্য ব্রাজিলের জয় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল।

মাঠ হতে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে বেরিয়ে যাওয়া নেইমারকে দেখে সব ব্রাজিল সমর্থকরাই শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিলেন। কারণ চোটের সাথে নেইমারের যেন অন্যরকম সখ্যতা রয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছিল এই বুঝি তাঁর বিশ্বকাপ যাত্রার ইতি ঘটল। অবশ্য দলের কোচ তিতে আশ্বাস দিয়েছেন নেইমারকে বিশ্বকাপে পাওয়া যাবে। অর্থাৎ গ্রুপ পর্বে না পাওয়া গেলেও, নেইমার শীঘ্রই ফিরবেন।

ব্রাজিল এই টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেবারিট দল। দলটি অবশ্য এই মুহুর্তে চোট নিয়ে ঘাবড়ে যাচ্ছে না। ব্রাজিলের সহকারী ব্যবস্থাপক ক্লেবার জেভিয়ার বলেন, ‘আমরা রাশিয়া বিশ্বকাপের পরেই বুঝতে পেরেছিলাম যে আমাদের পরিবর্তন আনতে হবে। আমরা সেই টুর্নামেন্টের আগে দানি আলভেস এবং রেনাতো আউগস্টোকে হারিয়েছিলাম। এবং নেইমার নিজেও ইনজুরিতে ভুগছিলেন, তাই তিনিও ছিলেন না। তাই টুর্নামেন্টের সময় আমাদের একটি নতুন দল তৈরি করতে হয়েছিল। এবারের ব্যাপার সম্পূর্ণ আলাদা। এই বিশ্বকাপে আমরা একজন খেলোয়াড়কে হারালে, তবে আমরা পরিস্থিতিকে কিভাবে মোকাবেলা করতে পারি তা বেশ ভালোভাবে জানি। ২০১৮ সালে আমরা খেলোয়াড়দের জানার জন্য যথেষ্ট সময় পাইনি, কিন্তু এখন আমরা সেই সময়টি পেয়েছি।’

এদিকে স্বয়ং নেইমার তাঁর চোট বিষয়ে নীরবতা ভেঙ্গেছেন। ফেরার বার্তা দিয়েছেন উৎসুক কোটি কোটি ভক্তকে। ব্রাজিলের সুপারস্টার নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলেন, ‘ব্রাজিলের জার্সিটি পরে আমি যে গর্ব এবং ভালবাসা অনুভব করি তা বর্ণনাতীত। যদি ঈশ্বর আমাকে আবারও জন্মের জন্য একটি দেশ বেছে নেওয়ার সুযোগ দেন, তবে সেটি হবে ব্রাজিল। আমার জীবনে কোন প্রাপ্তিই সহজে আসেনি, আমাকে সব সময় আমার স্বপ্ন ও লক্ষ্যের পেছনে ছুটতে হয়েছে।’

নেইমার জুনিয়র আরও বলেন, ‘এটা আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে কঠিন মুহূর্তগুলির মধ্যে একটি হয়ে উঠেছে। এবং আবারও একটি বিশ্বকাপের মঞ্চেই আমি ইনজুরিগ্রস্ত হয়েছি। এটি বেশ বিরক্তিকর, এটি আমাকে কষ্ট দিচ্ছে। তবে আমি নিশ্চিত যে আমি আবারও ফিরে আসার সুযোগ পাব। কারণ আমি আমার দেশ, আমার সতীর্থদের এবং নিজেকে সাহায্য করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করব। প্রতিপক্ষের বিপক্ষে আমি এভাবে হার মানবো না। কখনোই না!’

তাছাড়া ব্রাজিলিয়ান এই স্ট্রাইকার নিজেকে ‘আই এম দ্য সন অব দ্য গড অব দ্য ইম্পসিবল’ বলে অভিহিত করেছেন। এবং বলেছেন, ‘নিজের ওপর আমার বিশ্বাস অফুরন্ত।’ অর্থাৎ সব অসম্ভব পরিস্থিতিকে মোকাবেলা করে ঠিকই ফিরবেন এই ফুটবলের বিস্ময়। অবশ্য নেইমারের ওপর গোটা পৃথিবীর ভক্ত-সমর্থকদেরও যে অফুরন্ত বিশ্বাস রয়েছে একথা বলার আর অপেক্ষা রাখে না।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...