আইপিএলের ‘দুর্ভাগা’ ম্যাচ উইনার

যেকোন ক্রিকেটারের জন্যে নির্বাচকদের নজর কাড়ার মোক্ষম মঞ্চ এই আইপিএল। কিন্তু আইপিএলে ম্যাচ উইনার হয়েও জাতীয় দলে জায়গা পোক্ত হওয়া তো দূরের কথা, জাতীয় দলে ডাকই পাননি - এমন উদাহরণও কিন্তু অনেক আছে।

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আসর। এই আসরে পারফর্ম করে ক্রিকেটাররা জাতীয় দলে নিজেদের জায়গা নিশ্চিত করে থাকে। যেকোন ক্রিকেটারের জন্যে নির্বাচকদের নজর কাড়ার মোক্ষম মঞ্চ এই আইপিএল। কিন্তু আইপিএলে ম্যাচ উইনার হয়েও জাতীয় দলে জায়গা পোক্ত হওয়া তো দূরের কথা, জাতীয় দলে ডাকই পাননি- এমন উদাহরণও কিন্তু অনেক আছে।

  • ইকবাল আবদুল্লাহ

কার্যকরী বাঁহাতি স্পিনের সাথে টি-টোয়েন্টির উপযোগী ব্যাটিং। ইকবাল আবদুল্লাহর পরিচয় এটাই। আইপিএলে ইকবালের অভিষেকও হয়েছিল কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে। এরপর তিনি খেলেছেন রাজস্থান রয়্যালসে আর আইপিএল ভ্রমণের রথ শেষ করেছেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুতে।

তিন ফ্রাঞ্চাইজির হয়ে মোট ৪৯ আইপিএল ম্যাচে অংশ নিয়ে ২৭.৭৩ গড়ে উইকেট নিয়েছেন ৪০ উইকেট, ইকোনমিটাও নেহায়েৎ মন্দ নয়- ৭.২৩! কলকাতা ২০১২ তে যেবার আইপিএল শিরোপা জিতল সে দলেও গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন ইকবাল।

  • সিদ্ধার্থ ত্রিবেদি

অভিষেক হয়েছিল ২০০৮ সালে, সে আসরেই ১৩ উইকেট নিয়ে রীতিমত হইচই ফেলে দিয়েছিলেন। এরপর সিদ্ধার্থ আর ঘর পাল্টাননি, আইপিএলে নিজের খেলা ছয় মৌসুমের ছয়টিই খেলেছেন রাজস্থান রয়্যালসে। ত্রিবেদী চাইলে নিজের সুখস্মৃতি মনে করতে পারেন বেশ কয়েকটাই।

 

২০১২ এর আসরে একইসাথে কোহলি আর ভিলিয়ার্সের উইকেট নেওয়া, একা হাতে ফেভারিটদের হারিয়ে দেওয়া- এমন উদাহরণ আরো অনেক আছে। কিন্তু  তা হলে কি হবে, ২০১৩ এর মুম্বাই ম্যাচ দিয়েই আইপিএলে বন্ধ হয়ে গেছে ত্রিবেদীর আইপিএল ভ্রমণ। ছয় আসরে ৭৬ ম্যাচ খেলে তিনি নিয়েছেন ৬৫ উইকেট!

  • স্বপ্নীল আস্নোদকার

একদম শুরু থেকে যদি আপনি আইপিএল দেখে থাকেন, তাহলে স্বপ্নীলকে আপনার চোখে পড়বেই। একেবারে প্রথম মৌসুমের কথাই ধরা যাক, রাজস্থান রয়্যালসের এই খেলোয়াড় পুরো আসরে করেছিলেন ৩১১ রান। চিরাচরিতভাবে তিনি খেলতেন টপ অর্ডারে কিন্তু সেই ২০০৮ এর সময়েই তিনি ছিলেন ড্যাশিং ব্যাটসম্যান।

বেশিরভাগ ম্যাচেই তাঁর স্ট্রাইক রেটের পাল্লা চলে যেত ১০০ এর উপরে। সে আসরসহ আইপিএলে মোট ২০ ম্যাচ খেলেছেন স্বপ্নীল, রান করেছেন ৪২১। আসলে প্রথম আসরের পর আর ব্যাট হাতে খুব বেশি জ্বলে উঠতে পারেনিনি তিনি। তবুও প্রথগম আসরেই যেটুকু দেখিয়েছেন, ‘মেন ইন ব্লু’ তে ডাক পেলে সেটা খুব বেশি বিচিত্র ব্যাপার হত না।

  • মানবিন্দর বিসলা

২০১২ এর আইপিএল কলকাতা নাইট রাইডার্স সমর্থকদের মনে রাখার কথা। কলকাতার শিরোপা জয়ের এই আসরে দুর্দান্ত পারফর্ম করেছিলেন মানবিন্দর বিসলা। উইকেটরক্ষক এই ব্যাটসম্যান টপ অর্ডারে সেই আসরে কলকাতার বেশিরভাগ ম্যাচেই জয়ের ভিত গড়ে দিতেন।

এই আসর ছাড়াও সব মিলিয়ে আইপিএলে তিনি খেলেছেন ৩৯ ম্যাচ, রান করেছেন ৭৯৮ ! কিন্তু এই ভাল শুরু এনে দেওয়ার ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও কখনই ভারতীয় দলে ডাক পাননি বিসলা! অবশ্য নিজের যে রোল, তাতে সে সময় ধোনি, কার্তিককে পাল্লা দিয়ে দলে ডাক পাওয়া একটু কঠিনই ছিল বিসলার জন্যে।

  • রজত ভাটিয়া

একজন ভাল টি-টোয়েন্টি বোলার হওয়ার সব ধরণের গুণাবলিই রজতের মধ্যে ছিল। তিনি স্লোয়ার দিতে পারতেন, লাইন ঠিক রেখে লেগ কাটার করতে পারতেন, বোলিং অ্যাকশনেও বৈচিত্র্য ছিল – তবুও এই বোলারটি ঝরে গেছেন অকালে।

আইপিএলেও যে রজতের পারফরম্যান্স খুব খারাপ ছিল এমনটা বলা যাবেনা, মোট ৯৫ ম্যাচ খেলে এই টুর্নামেন্টে তিনি নিয়েছেন ৭১ উইকেট। টি-টোয়েন্টিতে ৭.৪১ ইকোনমিটাও খুব ভাল কিছুরই ইঙ্গিত দেয়। ২০১২ সালে যে মৌসুমে কলকাতা শিরোপা জিতল, সেই মৌসুমেও ২৪.৫৪ গড়ে তিনি নিয়েছিলেন ১৩ উইকেট!

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...