ম্যাচ খোয়ানো দুই ফিফটি!

দুই ম্যাচেই তামিম ফিফটি করেছেন। সে জন্য অবশ্যই তার ধারাবাহিকতার প্রশংসা করতে হবে। কিন্তু এটাও সত্যি যে, এই ফিফটি দুটো করতে গিয়ে তিনি এতোগুলো বল নষ্ট করেছেন যে, বড় রান করার সম্ভাবনা ওখানেই শেষ হয়ে গেছে।

কাগজে কলমে এবার বিপিএলের সবচেয়ে তারকাবহুল দল নিশ্চয়ই মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকা। গুনে গুনে তিন জন সাবেক বর্তমান জাতীয় দলের অধিনায়ক আছেন এই দলে। এ ছাড়াও বোলিং-ব্যাটিংয়ে সব তারকা নাম। এই দলটাই কি না এবারের বিপিএল শুরু করলো টানা দুই পরাজয় দিয়ে।

ঠিক কোন জায়গাটায় ঢাকা এই দুটো ম্যাচ হেরে গেলো?

দৃশ্যত প্রথম ম্যাচ বোলারদের ব্যর্থতায় এবং দ্বিতীয় ম্যাচ ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় হেরেছে ঢাকা। কিন্তু একটু নজর করে যদি দেখেন, দুটো ম্যাচেই পরাজয়ের মূল কারণ উইকেট অনুযায়ী স্কোর করতে না পারা। একটু নির্দয় ভাবে বললে বলতে হয়, এই দুটো ম্যাচই ঢাকা হেরে গেছে তামিম ইকবালের ধীরগতির ব্যাটিংয়ের কারণে।

দুই ম্যাচেই তামিম ফিফটি করেছেন। সে জন্য অবশ্যই তার ধারাবাহিকতার প্রশংসা করতে হবে। কিন্তু এটাও সত্যি যে, এই ফিফটি দুটো করতে গিয়ে তিনি এতোগুলো বল নষ্ট করেছেন যে, বড় রান করার সম্ভাবনা ওখানেই শেষ হয়ে গেছে।

প্রথম ম্যাচের কথাই ধরুন। ৮ ওভারে ৬৯ রানের উদ্বোধনী জুটি হয়েছিলো। এর মধ্যে ২৭ বলে ৪২ রান করেছিলেন মোহাম্মদ শেহজাদ। অন্য দিকে তামিম ঠিক ৫০ রান করতে ৪২ বল খরচ করে ফেলেছিলেন। ১২০ বলের খেলায় একজন যদি ৪২ বল খরচ করেন, ৫০ রান করতে, তখন বাকীদের জন্য বেশি বল অবশিষ্ট থাকে না। তামিমের এই ইনিংসের ফলেই দুই শ পার করার সম্ভব উইকেটে ঢাকা ১৮৩ রান করতে পারে। যা অনায়াসে টপকে যায় খুলনা।

দ্বিতীয় ম্যাচে ঢাকার সামনে লক্ষ্য ছিলো মাত্র ১৬২ রান। তামিম আবার ফিফটি করলেন। এবার তিনি ৪৫ বল খরচ করে ফেললেন। মানে সেই রানরেট কমে গেলো। ফলে এই রানও টপকাতে পারলো না দল।

একজন ওপেনার এরকম ইনিংস খেলার দুটো সমস্যা। প্রথমত তিনি এতে পাওয়ার প্লে টা নষ্ট করছেন। পাওয়ার প্লেতে দলগুলো দুই শ এর বেশি স্ট্রাইক রেটে রান আশা করে। সেখানে তিনি এক শ এর সামান্য ওপরে স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করছেন। মানে রান তোলার মূল সময়টাই নষ্ট করে আসছেন।

আরেকটা বড় সমস্যা হলো, ওপেনার এরকম ইনিংস খেললে ইনিংসের একটা নেতিবাচক সুর তৈরি হয়ে যায়। পরের দিকের ব্যাটসম্যানরা ওই স্ট্রাইকরেটকে আদর্শ ধরে এগোতে থাকেন। ফলে মোট রানে দারুন নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

ফিফটি করেও এভাবে দলের হারার কারণ হওয়া যায়।

তামিমের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে ৮টি ফিফটি বা তার চেয়ে বড় ইনিংস আছে। সেখানেও আমরা তিন বার দেখেছি, তার ফিফটির পরও দল হেরেছে। সব ফরম্যাট হিসাব করলে তামিম ৫২ শতাংশ সময়ই ফিফটি বা সেঞ্চুরি করে দলকে ম্যাচ জেতাতে পারেননি। ফলে এই ঘটনাটা তার জন্য নতুন কিছু নয়।

এখন তামিম নাকি বলেছেন, তিনি আর টি-টোয়েন্টি জাতীয় দলে ফিরতে চান না। কিন্তু ঘরোয়া ক্রিকেটে এই মানের বোলিংয়ে অন্তত তামিম একটু দ্রুত ইনিংস খেলবেন, এমনটা আশা করা যায়?

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...