মুস্তাফিজ ভাল মানুষই বা হতে পারছেন কোথায়!

পারফরম্যান্স ভালো করুক আর খারাপ করুক, আইপিএল এ যে তিনি নিয়মিত সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যান সেটা সব সময়ই বোঝা যায়। কিন্তু, বাংলাদেশের খেলায় তাঁর বোলিংয়ে আপনি শেষ কবে সেই চেষ্টাটা দেখেছেন? বাংলাদেশি ব্রডকাস্টের কথা বাদ এশিয়া কাপে বা বিশ্বকাপে কখনো তাঁর একটা বল বিশ্লেষণ করতে দেখেছেন কোন ধারাভাষ্যকারকে গত কয়েক বছরে?

বোলিংয়ে কোন নিবেদন নেই, জাতীয় দলের হয়ে খেলতে আসলে অনেকদিন ধরেই দৌড়ে এসে কেবল বলটা ছুঁড়ে দেন। তিনি মুস্তাফিজুর রহমান।

আরও পড়ুন

অথচ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) সময় দেখবেন তাঁর বোলিং নিয়ে গবেষণা হয়। তাঁর কব্জি কতটা ফ্লেক্সিবল। একেকটা বল করবার সময় সেই কব্জি কতটা বাঁকে, সে কীভাবে শ্রীলঙ্কার মুত্তিয়া মুরালিধরনের মত পেসের মধ্যে স্পিন করতে চায়, কাটার দেবার সময় তাঁর কাঁধ কীভাবে নড়ে, পেস কীভাবে স্লো হয়ে যায় ইত্যাদি নানা রকমের ভ্যারিয়েশন- ক্যামেরায় ক্লোজআপে দেখায়। ধারাভাষ্যকাররা বিশ্লেষণ করে।

পারফরম্যান্স ভাল করুক আর খারাপ করুক, আইপিএল এ যে তিনি নিয়মিত সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যান সেটা সব সময়ই বোঝা যায়। কিন্তু, বাংলাদেশের খেলায় তাঁর বোলিংয়ে আপনি শেষ কবে সেই চেষ্টাটা দেখেছেন? বাংলাদেশি ব্রডকাস্টের কথা বাদ এশিয়া কাপে বা বিশ্বকাপে কখনো তাঁর একটা বল বিশ্লেষণ করতে দেখেছেন কোন ধারাভাষ্যকারকে গত কয়েক বছরে?

ধারাভাষ্যকাররা নাসিম শাহ কীভাবে হাত ঘুরান তা নিয়ে কথা বলেন, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার গ্রিপের পার্থক্য নিয়ে বিশ্লেষণ করেন, শাহীন আফ্রিদি আর জাসপ্রিত বুমরাহকে তো কেটে ফেলেন! এইবার এশিয়া কাপে এমনকি এক ম্যাচেই এবাদত হোসেনের রানআপ আর বোলিং অ্যাকশন নিয়ে ওয়াসিম আকরাম অনেকক্ষণ কথা বলেছেন।

কিন্তু, কেউ তাঁর বোলিং নিয়ে কথা বলেন না। তাঁর বোলিং সেভাবে বিশ্লেষণের কিছু নাই! দৌড়ে এসে বল ছেড়ে দেয়। মাঝে মাঝে কয়েকটা স্লোয়ার আর বাউন্সার। এইতো! জাতীয় দলের হয়ে বোলিংয়ে তাঁর অন্য কোন চেষ্টা মনে করতে পারি না! ওহ, মাঝখানে কয়েকটা বলে ইনস্যুইং দেবার চেষ্টা করেছিলেন। এইতো! কারণ বাংলাদেশের হয়ে খেলায় সে ভাল মানুষ হতে চায়, কব্জি বা কাঁধে কোন এক্সট্রা প্রেশার দেয় না৷

যদি ইনজুরিতে পড়েন তাহলে? ইনজুরিতে পড়লে তো সে শারীরিকভাবেও ‘ভালো মানুষ’ থাকতে পারবে না! একটা থ্রো করার সময়ও জোর দেয় না। জোরে থ্রো করলে আরব আমিরাতের বিপক্ষেও হয়তো একটা রান আউট করা যেত!

সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত অসাধারণ প্রতিভাবান মুস্তাফিজুর রহমান সব সময়ই অটোচয়েজ। সেই প্রতিভার জোরে হয়তো মাঝে মাঝে কিছু ম্যাচ জিতিয়েও দিবেন। কিন্তু তাঁর চেয়ে তুলনামূলকভাবে অনেক কম প্রতিভাবান কিন্তু জাতীয় দলের প্রতি বেশি নিবেদন আছে এমন বাইরে থাকা পেসারেরা, কামরুল ইসলাম রাব্বি বা খালেদ আহমেদ বা আবু জায়েদ রাহীদের নাম এখন তাঁর চেয়ে আগে আসা উচিত!

ভাল বোলার বাদ দেন, ‘ভাল মানুষ’-ই বা সে কীভাবে হচ্ছে? যেই লোক বিদেশি ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগে টাকার জন্য সর্বোচ্চ এফোর্ট দেয় কিন্তু নিজ দেশের হয়ে মাঠে নামলে চেষ্টা করে না, সে কীভাবে ‘ভালো মানুষ’?

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...