অভিষেকেই ভারতের আলো

২০০৭ সালে প্রথম টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জিতে সবাইকে চমকে দিয়েছিল ভারত। এরপরের দেড় দশকে দুর্দান্ত সব ক্রিকেটার খেলে গিয়েছেন ভারতের জার্সিতে।

২০০৭ সালে প্রথম টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জিতে সবাইকে চমকে দিয়েছিল ভারত। এরপরের দেড় দশকে দুর্দান্ত সব ক্রিকেটার খেলে গিয়েছেন ভারতের জার্সিতে। আসুন দেখে নেয়া যাক টি টোয়েন্টি অভিষেকে সেরা বোলিং করা ভারতীয় বোলারদের।

  • নবদ্বীপ সাইনি – ৩/১৭, বিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ

দিল্লীর পেসার নবদ্বীপ সাইনিকে ভাবা হয় ভারতের সবচেয়ে গতিশীল পেসারদের একজন। সুদূর আমেরিকার ফ্লোরিডাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অভিষেক হয় তাঁর। ফ্লোরিডার সেদিনের পিচে ঘাস ছিল আর সাইনিও পিচের সম্পূর্ণ সুবিধা নিয়েছিলেন। তাঁর দুরন্ত গতির কোনো জবাব ছিল না ক্যারিবীয় ব্যাটারদের কাছে।

চার ওভারের স্পেলে তিনি তুলে নেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং লাইন আপের তিন স্তম্ভ নিকোলাস পুরান, কাইরেন পোলার্ড এবং শিমরান হেটমায়ারের উইকেট। এক মেডেন ওভারের পাশাপাশি মাত্র ১৭ রানের বিনিমিয়ে পান তিন উইকেট।

ভারত সেদিন ম্যাচ জিতেছিল চার উইকেট এবং সাইনি ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন। জাতীয় দলের হয়ে ১১ টি টোয়েন্টি খেলে ৭.১৫ ইকোনমিতে তুলে নিয়েছেন ১৩ উইকেট। ২০২১ সালে শ্রীলংকার বিপক্ষে ইনজুরির কারণে বাদ পড়ার পর আর জাতীয় দলে ফিরতে পারেননি এই পেসার।

  • ভূবনেশ্বর কুমার – ৩/৯, বিপক্ষ পাকিস্তান

গত এক দশকে ভারতের অন্যতম সেরা পেসারের নাম ভুবনেশ্বর কুমার। নতুন বলে দুইদিকেই সুইং করানোর ক্ষমতা তাঁকে করে তুলেছে টি টোয়েন্টিতে বিশ্বসেরা পেসারদের একজন। ভারতকে বহু ম্যাচ জেতানোর দাবিদার ডানহাতি এই পেসার।

টি টোয়েন্টিতে ভারতের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি ভুবনেশ্বর আলো ছড়িয়েছিলেন নিজের অভিষেক ম্যাচেই। ২০১২ সালে বেঙ্গালুরুতে তাঁর সেই স্পেল আজো পাকিস্তানি ব্যাটারদের দু:স্বপ্নে হানা দেয়।

চার ওভারে মাত্র নয় রান দিয়ে তুলে নিয়েছিলেন টপ অর্ডারের তিন উইকেট। নাসির জামশেদ, আহমেদ শেহজাদ এবং উমর আকমলকে আউট করে গুঁড়িয়ে দেন পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপ।
দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাঁর দুরন্ত বোলিং সত্ত্বেও সেদিন পাঁচ উইকেটে হেরে গিয়েছিল ভারত।

  • শিভাম মাভি – ৪/২২, বিপক্ষ শ্রীলঙ্কা

এই তালিকার সর্বশেষ সংযোজন উত্তরপ্রদেশ থেকে উঠে আসা তরুণ পেসার শিভাম মাভি। ২০২৩ সালে ভারতের প্রথম টি টোয়েন্টিতে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে লঙ্কানদের বিপক্ষে অভিষেক হয় মাভির। ঘরোয়া ক্রিকেটে দুরন্ত পারফরম্যান্সের সুবাদেই সুযোগ মেলে জাতীয় দলে খেলার। এর আগে ২০১৮ সালে অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় দলের অংশ ছিলেন তিনি।

২৪ বছর বয়সী মাভি অভিষেক ম্যাচেই তুলে নেন চার উইকেট। একে একে পাথুম নিশাংকা, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা এবং মহেশ থিকসানাকে সাজঘরে ফেরত পাঠান তিনি। রান দেয়াতেও ছিলেন বেশ কৃপন, ডেথ ওভারে বল করেও চার ওভারে হজম করেন মোটে ২২ রান।

  • প্রজ্ঞান ওঝা – ২২/৪, বিপক্ষ বাংলাদেশ

বাঁ-হাতি স্পিনার প্রজ্ঞান ওঝা নিজের অভিষেক ম্যাচেই আলো ছড়িয়েছিলেন জাতীয় দলের হয়ে। টি টোয়েন্টিতে ভারতীয় স্পিনারদের পক্ষে সেরা বোলিং ফিগারের রেকর্ড সেটি। বিশ্বকাপের ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে সেদিন ২২ রানে চার উইকেট নেন ওঝা।

ওঝার বোলিংয়েই সেদিন বাংলাদেশকে হেসেখেলে হারিয়েছিল ভারত। জুনায়েদ সিদ্দিকি, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং মাশরাফি বিন মর্তুজাকে ফিরিয়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন আপকে দাঁড়াতেই দেননি। ২৫ রানে ম্যাচ জিতে নেয় ভারত এবং অনুমিতভাবেই ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন ওঝা।

এমন ঝলমলে অভিষেকের পরও টি টোয়েন্টি ক্যারিয়ারটা দীর্ঘায়িত হয়নি তাঁর। এরপর মাত্র পাঁচটি টি টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার সুযোগ পান তিনি।

  • বারিন্দর স্রান – ৪/১০, বিপক্ষ জিম্বাবুয়ে

টি টোয়েন্টি অভিষেকে ভারতের হয়ে সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড পাঞ্জাবের পেসার বারিন্দর স্রানের দখলে। ২০১৬ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে অভিষেক ঘটে তাঁর।

সেদিন নিজের চার ওভারে মোটে ১০ রান দিয়ে স্রান শিকার করেন চার উইকেট। চামু চিবাবা, হ্যামিল্টন মাসাকাদজা, সিকান্দার রাজা এবং মুতুম্বুজিকে আউট করে দলের লক্ষ্যমাত্রা রাখেন সাধ্যের মধ্যেই। তাঁর বোলিংয়ে ভর করেই দশ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয়।

দুর্দান্ত শুরুর পরও জাতীয় দলে ক্যারিয়ারটা দীর্ঘায়িত হয়নি তাঁর। এখনো পর্যন্ত জাতীয় দলের হয়ে মোটে দুইটি টি টোয়েন্টিতে মাঠে নেমেছেন তিনি।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...