আয়োজনেই তৃপ্ত না হোক বাংলাদেশ

২০১৮ সাল, ওমান। গ্রুপ পর্বে পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে বাংলাদেশ নারী দল জায়গা করে নিয়েছিল টি-টোয়েন্টি এশিয়া কাপের ফাইনালে। এরপর ভারতের বিপক্ষে শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে শেষ ওভারে নয় রানের সমীকরণ মিলিয়ে এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে সেদিন ইতিহাস গড়েছিল বাংলাদেশ।

২০১৮ সাল, ওমান। গ্রুপ পর্বে পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে বাংলাদেশ নারী দল জায়গা করে নিয়েছিল টি-টোয়েন্টি এশিয়া কাপের ফাইনালে। এরপর ভারতের বিপক্ষে শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে শেষ ওভারে নয় রানের সমীকরণ মিলিয়ে এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে সেদিন ইতিহাস গড়েছিল বাংলাদেশ।

২০২০ সালের যুব বিশ্বকাপ জয়ের গল্পটা বাদ দিলে বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রেক্ষাপটে এটিই সবচেয়ে বড় অর্জন। আর দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এই অর্জনের কারিগর বাংলাদেশ নারী দলের জন্য নতুন মাইলফলক ছোঁয়ার সুযোগ এসেছে। আগামী ২০২৪ সালে ঘরের মাঠে পরিচিত পরিবেশে বিশ্বকাপ খেলতে পারবে টাইগ্রেসরা। তবে, এবার আয়োজনে নয়, সাফল্য আসুক মাঠের লড়াইয়েও।

বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) গত ২৬শে জুলাই মঙ্গলবার সদস্য দেশগুলোর প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি সভা আয়োজন করে। এই সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, ২০২৪ সালের প্রমিলা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আয়োজক হবে বাংলাদেশ।

দশ দলের অংশগ্রহণে মোট ২৩টি ম্যাচ হবে এই টুর্নামেন্টে। বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে অনুষ্ঠিত হবে নারীদের এই বিশ্বকাপ।

এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ একযুগ পর আইসিসির কোন প্রমীলা টুর্নামেন্টের স্বাগতিক দেশ হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। লাল-সবুজের নারী দল প্রথম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট পা রাখে ২০০৭ সালে। থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে অভিষেক হয়েছিল নারী দলের। এরপর থেকে পনের বছর ধরে নিয়মিত ক্রিকেটীয় লড়াইয়ে নেমেছে প্রমীলা দল।

২০১১ সাল থেকে আইসিসির বৈশ্বিক টুর্নামেন্টগুলোর বাছাই পর্বে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা শুরু করে বাংলাদেশ নারী দল। তিন বছরের অপেক্ষা শেষে ২০১৪ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে চ্যাম্পিয়ন হয়ে মূল পর্বে খেলার সুযোগ পায় লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। আর এরই মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মত আইসিসির বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে অংশ নেয় বাংলার বাঘিনীরা।

এরপর থেকে অনুষ্ঠিত ২০১৪, ২০১৬, ২০১৮ এবং ২০২০ সালের নারী বিশ্বকাপে যোগ দিয়েছিলো বাংলাদেশ। এছাড়া ২০২১ সালে ইতিহাসে প্রথমবারের মত ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পায় নিগার সুলতানার দল। সেই আসরে পাকিস্তানকে হারিয়ে পুরো দেশকে আনন্দে ভাসিয়েছিল তারা।

বাংলাদেশ ছাড়াও সর্বশেষ সভায় ২০২৪ থেকে ২০২৭ সাল পর্যন্ত নারী ক্রিকেটের আগামী বিশ্ব আসরগুলোর স্বাগতিক দেশের নাম ঘোষণা করেছে আইসিসি। ২০২৫ মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ হবে ভারতে। পরের বছর টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হবে ইংল্যান্ডে। এবং ২০২৭ নারীদের টি-টোয়েন্টি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি হওয়ার কথা শ্রীলঙ্কাতে।

নারীদের বৈশ্বিক ইভেন্টের জন্য বাংলাদেশ, ভারত, ইংল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কাকে আয়োজক করতে পেরে খুশি আইসিসি। মহিলাদের খেলাধুলাকে ত্বরান্বিত করা তাদের কৌশলগত অগ্রাধিকারগুলোর একটি।

২০২৪ নারী বিশ্বকাপের আয়োজক স্বত্ব পেয়ে উচ্ছ্বসিত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এখন দেশে নারী ক্রিকেটের বিকাশ ঘটছে। আর এই সময়টাতে আইসিসি বাংলাদেশকে টুর্নামেন্ট আয়োজন করার সুযোগ দেয়ায় বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সুজন বাংলাদেশ ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে আইসিসিকে ধন্যবাদ দেন।

তবে বিশ্বকাপ আয়োজনে বাংলাদেশ মোটেই অনভিজ্ঞ নয়। এর আগে ২০১৪ সালে নারীদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। সেইবছর অবশ্য পুরুষ দলের টি-টোয়েন্টি বিশ্ব আসর-ও হয়েছিল এই দেশে।

যদিও আইসিসির টুর্নামেন্টের আয়োজক দল হিসেবে বাংলাদেশের অভিষেক হয় ২০১১ সালে। সেবার ভারত এবং শ্রীলঙ্কার সাথে যৌথভাবে ওয়ানডে বিশ্বকাপ আয়োজন করা হয়েছিল। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দিয়ে সেবার পুরো বিশ্বকে মুগ্ধ করেছিল বাংলাদেশ। ২০২৪ সালের পর আবার ২০৩১ সালে বাংলাদেশে হবে ওয়ানডে বিশ্বকাপ।

নারী ক্রিকেটের এই জাগরণের সময় বাংলাদেশ মহিলা ক্রিকেটের জন্য ইতিবাচক বার্তা দিবে ঘরের মাঠের বিশ্বকাপ। ছোট ছোট মেয়ে ও নারী ক্রিকেটারদের বড় স্বপ্ন দেখতে অনুপ্রাণিত করবে এই বিশ্ব আসর। বড় দলের সাথে বাংলাদেশ লড়তে পারে সেটি দেখানোর দারুণ এক মঞ্চ হতে যাচ্ছে ২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...