ফেরারি ফারুকের ফেরার ফর্মুলা
‘ফেরারি’ ফারুকি ফিরেই করলেন বাজিমাত। লঙ্কানদের দলীয় সংগ্রহ আড়াইশোর মধ্যেই বেঁধে রাখতে বল হাতে রাখলেন সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
পুনেতে পেস ধরে বেশি। লঙ্কান বধের জন্য আফগানদের জন্য ফর্মুলা তাই একটাই ছিল। স্পিন আক্রমণের পাশাপাশি একাদশে আগ্রাসী পেসার সংযুক্ত করা। তাই নূর আহমেদের জায়গায় এ দিন একাদশে ফিরেছিলেন ফজলহক ফারুকি। ‘ফেরারি’ ফারুকি ফিরেই করলেন বাজিমাত। লঙ্কানদের দলীয় সংগ্রহ আড়াইশোর মধ্যেই বেঁধে রাখতে বল হাতে রাখলেন সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
টসে জিতে এ দিন প্রথমে শ্রীলঙ্কাকে ব্যাটে পাঠিয়েছিল আফগানিস্তান। আফগানদের পরিকল্পনামাফিক শুরুতেই ব্রেক থ্রু এনে দেন ফারুকি। উইকেটে থিতু হওয়ার আগেই ফারুকি বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন দিমুথ করুণারত্নে। ফারুকির উড়ন্ত শুরু সেখান থেকেই। এরপরে লঙ্কান মিডল অর্ডারে যেমন আঘাত হেনেছেন, শেষদিকে ডেথ ওভারেও করেছেন আগুনঝরা বোলিং। আর ফারুকির সেই বোলিংয়ে ছত্রখান হয়েছে শ্রীলঙ্কার বড় সংগ্রহের রাস্তাও।
ধনঞ্জয়া ডি সিলভা আউট হয়ে যাওয়ার পর শ্রীলঙ্কার ইনিংসে এমনিতেই স্বল্প পুঁজির শঙ্কা দেখা দিয়েছিল । তারপরও চারিথ আসালাঙ্কা উইকেটে ছিলেন। ততক্ষণে লঙ্কান এ ব্যাটার নিজের ইনিংসকে নিয়ে গেছেন বিশের উপরে। উইকেটে থিতু হয়ে যাওয়ায় আফগানদের জন্য পথের কাঁটা হতেই পারতেন আসালাঙ্কা। তবে আফগানদের জন্য সেই বাঁধাটা হতে দেননি ফারুকি। নিজের দ্বিতীয় শিকার বানিয়ে আসালাঙ্কাকে ফেরান ২২ রানে।
এরপর নিজের ঝুলিতে আরো দুটি উইকেট যোগ করেছেন ফজল হক ফারুকি। প্রথমে মাহিশ ঠিকশানাকে বোল্ড করে, এরপরে ওভারে স্লোয়ারে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসকে পরাস্ত করেন আফগান এ বোলার। আর তাতেই একটি রেকর্ড গড়েন ফারুকি। ভেঙ্গে ৮ বছর আগে করা শাপুর জাদরানের বোলিং ফিগারের রেকর্ড।
২০১৫ বিশ্বকাপে ডানেডিনে স্কটল্যান্ডের ৩৮ রানে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন শাপুর জাদরান। এ ম্যাচের আগে সেটিই ছিল বিশ্বকাপে কোনো পেসারের সেরা বোলিং ফিগারের রেকর্ড। ৮ বছর বাদে, ৩৪ রানের ৪ উইকেট নিয়ে এবার সেই রেকর্ডটিই নিজের করে নিলেন ফজল হক ফারুকি।
ফারুকিদের বোলিংয়ে ২৪১ রানেই গুটিয়ে গেছে অস্ট্রেলিয়া। এই আগের ম্যাচেই পাকিস্তানের দেওয়ার ২৮২ রানের লক্ষ্য অনায়াসেই টপকে গিয়েছিল আফগানিস্তান। লঙ্কাদের দেওয়া এই লক্ষ্য তাই কঠিন হওয়ার কথা নয় আফগান ব্যাটারদের জন্য। তবে ম্যাচের ফলাফল যেটাই হোক, ম্যাচের প্রথম ভাগের ভাগ্যটা যে ফজলহক ফারুকিই নির্ধারণ করে দিয়েছেন, তাতে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই। তবে ফারুকি নিশ্চয়ই দিনশেষে এমন বোলিংয়ে দলের জয়েই সবচেয়ে বেশি তৃপ্ততা খুঁজে নিবেন।