এশীয় ফুটবল পটে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। নেপথ্যে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া ফুটবল দল। ১০ অক্টবরে ১২৯ র্যাংকে থাকা ইন্দোনেশিয়ার ৭৬ র্যাংকধারী বাহারাইন দলের সাথে ১-১ ড্রয়ের পর এ নিয়ে কোনো সংশয় থাকার কথা না।
দক্ষিণ কোরিয়ান কোচ শিন টে ইয়ংয়ের দলের এ জেগে ওঠার শুরুটা ২১ সাল থেকে। ২০২০ সালে টে ইয়ং ইন্দোনেশিয়ার দায়িত্ব নেন। তখন তাদের র্যাংক ছিল ১৭৩। তলানিতে থাকা এই দল ২১ সাল শেষ করে ১৬৪ এ থেকে।
এরপর থেকে পিছে ফিরে তাকাতে হয়নি তাদের। ২২ সাল শেষে তারা বিশ্বের ১৫১ তম দল হিসেবে ইতি টানে। ২৩ এ যা গিয়ে দাঁড়ায় ১৪৬ এ। বর্তমানে তাদের র্যাংক ১২৯।
এই এগিয়ে যাবার পিছে এক শক্তিশালী প্রভাবক তাদের ন্যাচারালাইজড খেলোয়াড়েরা। অর্থাৎ ইন্দোনেশিয়ান বংশোদ্ভূত বিভিন্ন তারকাদের নাগরিকত্ব দিয়ে দেশের জার্সিতে খেলানো।
বর্তমানে জাতীয় দলে দশ জনেরও অধিক এমন খেলোয়াড় রয়েছে। যাদের একাংশ খেলে নেদারল্যান্ডসে। এছাড়াও ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের লিগে খেলছে ইন্দোনেশীয় ফুটবলাররা। মূল দল ছাড়ায় বয়স ভিত্তিক বিভিন্ন দলেও নেয়া হচ্ছে ন্যাচারালাইজড খেলোয়াড়দের।
এর ফলাফলও আসছে হাতে নাতে। স্বাধীন ইন্দোনেশিয়া প্রথম বারের মতো পেরিয়েছে ২৬ ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইয়ের দ্বিতীয় রাউন্ড। তৃতীয় রাউন্ডে বাহরাইনের সাথে ড্র করার আগে তারা সৌদি আরবের সাথেও ড্র করেছে।
মনে করিয়ে দেই গত দুই বিশ্বকাপে খেলা দল সৌদি আরব। যারা গত বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন দল আর্জেন্টিনাকে গ্রুপ পর্বে পরাজিত করে।
এছাড়াও ২০২৩ সালে এএফসি এশিয়া কাপেও তারা বেশ ভাল খেলে। গ্রুপ পর্ব পেরিয়ে রাউন্ড অব সিক্সটিনে সেবার তাদের ইতি টানে। জেনে রাখা ভাল, শেষ ২০০৭ এ তাদের এশিয় মাহাত্ম্যের এ টুর্নামেন্টে দেখা গেছে।
বয়স ভিত্তিক ফুটবলেও ইন্দোনেশিয়া চমৎকার ভাবে এগোচ্ছে। তাদের অনূর্ধ্ব ২৩ দল এপ্রিলে প্রথমবারের মতো অনূর্ধ্ব-২৩ এশিয়া কাপে খেলে। সেখানেও তারা চতুর্থ হয়। এই দল গত বছর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ান গেমসেও স্বর্ণ জেতে। পাশাপাশি ঐ বছরের ডিসেম্বর মাসেই তারা আবার অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপও আয়োজন করে।
কেবল এশিয়ানই নয় বিশ্ব ফুটবল পটেও বৈপ্লবিক আচড় কেটেছে ইন্দোনেশিয়া ফুটবল দল। যার নেপথ্যে রয়েছে দক্ষ কোচিং, ন্যাচারালাইজড খেলোয়াড় সাথে খেলার ও গঠনগত মানোন্নয়ন। এই ধারা অব্যাহত রাখলে কেবল বিশ্বের সেরা ১০০ দলেই নয়। সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে ২৬ বিশ্বকাপে খেলারও।