‘৩৫০ এর বেশি না, কেমনে করবা জানি না’ – স্ট্যাম্প মাইকে লিটন দাসের কথাটা স্পষ্টই শোনা গেল। তখনও দু’টো উইকেট বাকি ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ৩৫০ রানের লিড থেকে মাত্র ২০ রান দূরে।
সেই লিডটা তাসকিন আহমেদ কেবল আর মাত্র তিন রান এগোতে দিলেন। ধন্যবাদ দিতে পারেন অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজকে। মিরাজের এক সুপারম্যান সুলভ ক্যাচেই তো অ্যান্টিগায় বাংলাদেশের নিজস্ব সুপারম্যান ছয় উইকেট নিতে পেরেছেন।
পুরো ম্যাচজুড়ে এখন তাঁর আটটা উইকেট। ফলাফল যাই হোক, টেস্টে এখন অবধি সুপারম্যান ওই তাসকিন আহমেদই। ইনিংস শেষ করে লাল ওই বলটা হাতে নিয়ে চুমু খেলেন, টিম ম্যানেজার ছবি তুললেন। হাস্যোজ্জ্বল এক মুহূর্ত।
অথচ, কত আক্ষেপের সাগর পেড়িয়ে এই দিনের দেখা পেয়েছেন তাসকিন আহমেদ। ২০২৩ সালের ঘটনা। আফগানিস্তানের বিপক্ষে দেশের মাটিতে একমাত্র টেস্টে চার উইকেট পেয়েছিলেন তাসকিন আহমেদ।
একটা ফুলটসে ব্যাটারকে বোল্ডও করেছিলেন, উল্লাস করেছিলেন, সিজদাহ করেছিলেন। তাসকিন পাঁচ উইকেট নিয়েছেন, কতকাল পর এক পেসারের পাঁচ উইকেট। কিন্তু, বল কোমড়ের ওপর ওঠায় ‘নো’ ডেকে দেন আম্পায়ার। তাসকিনের পাঁচ উইকেটের আশা আর পূরণ হয়নি।
কি বিরাট আক্ষেপ! এরপর সাদা পোশাক থেকে একটা বিরতিও নিয়েছিলেন তাসকিন। বিরতি নিয়ে ফিরেছেন এই গেল পাকিস্তান সফরেই। তখন থেকেই প্রতিটা দিন তিনি বুঝিয়েছেন, টেস্ট ক্রিকেটকে তিনি কতটা মিস করেছেন।
মিরপুরের সেই আক্ষেপ তাসকিন ঘুচালেন এবার অ্যান্টিগায়। প্রতিপক্ষের বুকে ছয়বার আঘাত হেনে বাংলাদেশকে স্বপ্ন দেখালেন। পরিপূর্ণ একজন ফাস্ট বোলারও টেস্টে বাংলাদেশকে স্বপ্ন দেখাতে পারেন – তাসকিনরা আছেন বলেই সেই স্বপ্ন দেখার সাহসটা করা যাচ্ছে।