মিথালি পাহাড়ের চূড়া

হায়দ্রাবাদের সেই ছোট্ট মেয়েটি হতে চাইতো ভরতনাট্যম নৃত্যশিল্পী। কিন্তু, বয়স যখন ১০ বছর তখন থেকেই জীবনের গতিবিধিটা পাল্টে যায়। কারণ, ক্রিকেট খেলাটার সাথে পরিচিত হয়ে গেছেন। কিছুদিন পরই ভাইয়ের সাথে ক্রিকেট কোচিংয়েও যাওয়া শুরু করেন। এই একটি সিদ্ধান্তই পাল্টে দেয় সেই ছোট্ট মেয়েটির জীবন। কালক্রমে তিনি হয়ে ওঠেন দ্য গ্রেট মিথালি রাজ।

হায়দ্রাবাদের সেই ছোট্ট মেয়েটি হতে চাইতো ভরতনাট্যম নৃত্যশিল্পী। কিন্তু, বয়স যখন ১০ বছর তখন থেকেই জীবনের গতিবিধিটা পাল্টে যায়। কারণ, ক্রিকেট খেলাটার সাথে পরিচিত হয়ে গেছেন। কিছুদিন পরই ভাইয়ের সাথে ক্রিকেট কোচিংয়েও যাওয়া শুরু করেন।

এই একটি সিদ্ধান্তই পাল্টে দেয় সেই ছোট্ট মেয়েটির জীবন। কালক্রমে তিনি হয়ে ওঠেন দ্য গ্রেট মিথালি রাজ। তাঁকে না চেনার কোনো কারণ নেই! প্রথম ভারতীয় ও দ্বিতীয় নারী ক্রিকেটার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করে ফেলেছেন তিনি। নব্বইয়ের দশকের সেই একটা সিদ্ধান্তই পাল্টে দিয়েছে ভারতের নারী ক্রিকেট।

দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে তৃতীয় ওয়ানডেতে ব্যাটিংয়ের সময় এই মাইলফলকে পা দেন তিনি। বাউন্ডারি মেরেই ১০ হাজার রানের এলিট ক্লাবে প্রবেশ করেন এই ভারতীয় কিংবদন্তি।  অবশ্য পরের বলেই আউট হয়ে যান তিনি। যার জন্য আরেকটি মাইলফলক স্পর্শ করতে তাকে আরেকটু অপেক্ষা করতে হবে।

প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে নারী ওয়ানডেতে ৭ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করতে আর মাত্র ২৬ রান প্রয়োজন মিথালির। ইংল্যান্ডের সাবেক নারী ব্যাটসম্যান শার্লট এডওয়ার্ড ৫৯৯২ রান নিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ার শেষ করেন৷ শার্লট এখন অবস্থান করছে দুইয়ে, মিথালির অপেক্ষা মাত্র ২৬ রানের!

১৯৯৬-২০১৬, ২০ বছরের দীর্ঘ আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে মোট ১০,২৭৩ রান করেছেন শার্লোট এডওয়ার্ডস। মিথালির আগে তিনিই একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে ১০ হাজার রানের এলিট ক্লাবে প্রবেশ করেন৷

তবে মিথালির ক্যারিয়ার তার চেয়েও দীর্ঘ, মোট ২২ বছরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারে ১০ টেস্ট, ২১২ ওয়ানডে ও ৮৯টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন মিথালি। ১৯৯৯ সালে ভারতের জার্সি গায়ে অভিষেক হয় এই প্রমিলা কিংবদন্তির। ৫১ গড়ে ৬৬৩ টেস্ট রান, ওয়ানডেতে প্রায় ৫১ গড়ে ৬৯৭৪ রান ও টি-টোয়েন্টিতে আছেন প্রায় ৩৮ গড়ে ২৩৬৪ রান!

বড় ক্রিকেটার যে তিনি হবেনই সেটা বোঝা গিয়েছিল একদম গোড়াতেই। ১৯৯৭ সালে বয়স যখন মাত্র ১৪ – তখনই নারী বিশ্বকাপের প্রাথমিক দলে ছিলেন। সেই সময় থেকে ভারতীয় দলে অনেক উত্থান পতন এসেছে। কিন্তু, মিথালি ঠায় টিকে ছিলেন।

মিথালি বলেন, ‘যখন আপনি লম্বা সময়ের জন্য খেলেন, তখন অবশ্যই বেশ কিছু লক্ষ্যে নিয়েই এগোবেন। আর এই মাইলফলকটা সেগুলোর একটি। আমি মনে করি আমার জন্য মূল মন্ত্র নিয়মিত পারফম করা৷ আমি যখনই ব্যাট করতে নামি আমার মূল লক্ষ্য রান করা, এটা ঘরোয়া হোক কিংবা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সেটা আমার কাছে ম্যাটার করে না।’

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সব ফরম্যাট মিলিয়ে সর্বোচ্চ রানের মালিক শচীন টেন্ডুলকার এক টুইট বার্তায় মিতালিকে শুভেচ্ছা জানিয়ে লিখেন, ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০ হাজার রান করার জন্য মিতালিকে অনেক শুভেচ্ছা, অসাধারণ কৃতিত্ব৷ এরকম শক্তিশালী হয়েই এগিয়ে চলো৷’

ওয়ানডে ক্রিকেটে মিতালি সাতটি সেঞ্চুরি এবং ৫৪ টি হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। ১৯৯৯ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় তার। ২০১৯ সালে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে অবসর নেন তিনি। টি-টোয়েন্টিতেও আছে ১৭ টি হাফ সেঞ্চুরি।

মিতালির অনন্য এই অর্জনে ওপেনার স্মৃতি মান্ধানা বলেন, ‘১০ হাজার রান বা তার বেশি কিছু করা এটা বিশাল ব্যাপার। সে প্রথম ভারতীয় হিসেবে এই কৃর্তী করেছে, তাই আমি মনে করি এটা প্রমাণ করে যে পুরো ক্যারিয়ার জুড়ে সে কতটা ধারাবাহিক ছিলো। আমরা তাকে দেখে পুরো দলই গর্ব বোধ করি।’

মিথালি এখন আছেন যৌথ ভূমিকাতে। তিনি একই সাথে দলের ব্যাটিং পরামর্শকও। হয়তো ক্যারিয়ার শেষে কোচিং ক্যারিয়ারেই থিতু হবেন, তাঁর জন্য আগাম শুভকামনা।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...