তাহলে কী মুমিনুল বাদ পড়বেন?

আর বাংলাদেশ দল যদি সত্যিই মুমিনুলকে বাদ দিতে চায় তাহলে তাঁকে একটা শেষ সুযোগ দেয়া উচিৎ। টেস্ট ক্রিকেটে মুমিনুল হক অন্তত এইটুকু সম্মান পেতেই পারেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে মাঠে নামার আগে মুমিনুলের সাথে খোলামেলা আলোচনাই হওয়া উচিৎ। মুমিনুল যদি সেই টেস্টে রানে ফিরতে পারেন তাহলে তো ভালো আর নাহয় সাকিবকে তো তাঁর কাজ করতেই হবে।

অ্যান্টিগা টেস্টের প্রথম দিন শেষে সাকিব আল হাসান জানিয়েছিলেন অধিনায়ক, কোচ কিংবা নির্বাচকদের কাজটা সহজ। কেউ পারফর্ম করছে না, তাঁকে বাদ দিয়ে দিন। সাকিবের এই কথায় একটা ব্যাপার স্পষ্ট ছিল। পারফর্ম করছে না এমন কাউকে সাকিব তাঁর দলে রাখবেন না। সেটা যেই হোক না কেন। অধিনায়ক সাকিবের কাজটা কী তাহলে আরো সহজ করে দিলেন মুমিনুল হক?

মুমিনুল অধিনায়ক থাকা অবস্থাতেও তাঁর ব্যাটিংটা নিয়ে কথা হচ্ছিল। অনেকদিন ধরেই বড় ইনিংসের দেখা পাচ্ছিলেন না এই টেস্ট অধিনায়ক। আসলে বড় ইনিংস বললে ভুল হবে। ইনিংসটা ঠিক করে শুরুই করতে পারছেন না তিনি। আর ব্যাট হাতে এই অফ ফর্মই তাঁর অধিনায়কত্ব হারানোর কারণ।

কেননা তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ এমন বাজে কোন পারফর্মেন্স করেনি যে তাঁকে সরিয়ে দেয়া হবে। বাংলাদেশ টেস্টে সবসময়ই এমন পারফর্মেন্সই করে থাকে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছিল অধিনায়ক নিজেই পারফর্ম করতে না পারায়। টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের অন্যতম সফল ব্যাটসম্যান তিনি।

ফলে তাঁকে রানে ফেরাতেই বিসিবি দ্রুত নতুন অধিনায়ক খোঁজার দায়িত্ব নেয়। মুমিনুল নিজেও জানিয়েছিলেন তিনি নিজের ব্যাটিংটায় আরো বেশি মনোযোগ দিতে চান। কিন্তু অধিনায়কত্ব ছেড়েও তেমন কোন লাভ হলো না সাবেক এই অধিনায়কের। সাকিবের নেতৃত্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্টেও মুমিনুল নিজের ব্যর্থতা অব্যাহত রাখলেন।

দুই ইনিংসেই একেবারে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছেন এই ব্যাটার। প্রথম ইনিংসে ডাকের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও করেছেন মাত্র চার রান। ব্যাট হাতে মুমিনুলে অবস্থা এতটাই করুণ যে শেষ নয় ইনিংসে একবারো দুই অংকের স্কোর করতে পারেননি। এমনকি সর্বশেষ দশ ইনিংসে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে মাত্র ৬৫ রান।

এছাড়া সর্বশেষ নয় টেস্টে তাঁর ব্যাট থেকে হাফ সেঞ্চুরি এসেছে মাত্র একবার। মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে ঐতিহাসিক সেই ম্যাচেই খেলেছিলেন ৮৮ রানের ইনিংস। এরপরেই আর কোন ভাবেই হাসছেনা মুমিনুলের ব্যাট। আর শেষ সেঞ্চুরির দেখাও পেয়েছিলেন এক বছরেরও বেশি সময় আগে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। ফলে ব্যাট হাতে এমন সময় কাটানো একজন ব্যাটসম্যানকে কোন অধিনায়কই তাঁর দলে চাইবেন না।

ব্যাটসম্যানটা মুমিনুল না হলে হয়তো আরো আগেই দলে তাঁর জায়গা নিয়ে প্রশ্ন উঠতো। কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের অন্যতম সফল এই ব্যাটসম্যানকে যথেষ্ট সময়ই দিতে চেয়েছে বাংলাদেশ। টপ অর্ডারে প্রায় এক দশক ধরে বাংলাদেশকে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

ফলে সাকিব অধিনায়ক হয়ে আসার পরেও অ্যান্টিগা টেস্টে দলে তাঁর থাকা নিয়ে কোন প্রশ্ন ছিল না। সবার আশা ছিল অধিনায়কত্বের বোঝা কাধ থেকে নেমে যাওয়ায় আবার রানে ফিরবেন মুমিনুল। তবে অ্যান্টিগা টেস্টের দুই ইনিংসেই ব্যর্থ হলেন তিনি।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে দশ ইনিংস ধরে ব্যর্থ হওয়া একজন ব্যাটসম্যানকে কী সাকিব তাঁর একাদশে রাখবেন? যেহেতু ব্যাটসম্যানটি মুমিনুল এবং টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের একমাত্র ব্যাটসম্যান তাই যেই সিদ্ধান্তই নেয়া হোক সেটা খুব ভেবে-চিন্তেই নেয়া উচিৎ। প্রয়োজন হলে মুমিনুলের সাথেও কথা বলা যেতে পারে।

আর বাংলাদেশ দল যদি সত্যিই মুমিনুলকে বাদ দিতে চায় তাহলে তাঁকে একটা শেষ সুযোগ দেয়া উচিৎ। টেস্ট ক্রিকেটে মুমিনুল হক অন্তত এইটুকু সম্মান পেতেই পারেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে মাঠে নামার আগে মুমিনুলের সাথে খোলামেলা আলোচনাই হওয়া উচিৎ। মুমিনুল যদি সেই টেস্টে রানে ফিরতে পারেন তাহলে তো ভালো আর নাহয় সাকিবকে তো তাঁর কাজ করতেই হবে।

 

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...