ক্রিকেট, কমেডি ও ক্রাইম

এইত মাসখানেক আগেই হেরেছেন নির্বাচন। রাজ্য নির্বাচনে হেরে যান তিনি। এরপর পাঞ্জাব কংগ্রেসের প্রধানের পদ থেকে সরে দাঁড়ান সিধু। রাজনীতির মাঠে নির্বাচনে হেরে যাওয়াটা যেকোনো নেতার জন্য বিরাট ধাক্কা। সেই ধাক্কা সামলে না উঠতেই এবার বিপদের মুখে সিধু।

২২ গজ মাতিয়েছেন লম্বা সময়। ওপেনিংয়ে ভারতের অন্যতম ভরসা ছিলেন একটা সময়। ক্রিকেট ছাড়ার পর কমেডি শোয়ে বিচারক হিসেবে কাজ করলেন। দর্শকদের কাছে অকারণে হাসতে পারা আর অদ্ভুত সব শায়েরি বানিয়ে ফেলা এক সেলিব্রিটি তিনি। ধারাভাষ্যকার হিসেবেও লাভ করেছিলেন জনপ্রিয়তা। সব ছাপিয়ে শেষ পর্যন্ত যোগ দেন রাজনীতিতে। এবার রাজনীতির ময়দান থেকে যেতে হচ্ছে জেলে!

২০০৬ সালে আগের এক সড়ক দুর্ঘটনাতে ৬৫ বছরের এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। সড়ক দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল ১৯৮৮ সালে; যার সাথে সম্পর্ক আছে সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার নভজ্যোৎ সিং সিধু। সেই ঘটনার পেরিয়ে গেছে ৩৪ বছর। দীর্ঘ সময় পর ওই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার ও কংগ্রেস নেতা সিধুকে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে।

এইত মাসখানেক আগেই হেরেছেন নির্বাচন। রাজ্য নির্বাচনে হেরে যান তিনি। এরপর পাঞ্জাব কংগ্রেসের প্রধানের পদ থেকে সরে দাঁড়ান সিধু। রাজনীতির মাঠে নির্বাচনে হেরে যাওয়াটা যেকোনো নেতার জন্য বিরাট ধাক্কা। সেই ধাক্কা সামলে না উঠতেই এবার বিপদের মুখে সিধু।

অবশ্য বিতর্কের মুখে এবারই প্রথম নয় সাবেক এই ভারতীয় ক্রিকেটার।

  • পাক সেনাপ্রধানকে আলিঙ্গন

২০১৮ সালে পাকিস্তানের সাবেক প্রধাণমন্ত্রী ইমরান খানের শপথ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নভজ্যোৎ সিং সিধু। ওই অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়াকে আলিঙ্গন করেন সিধু। আর এতেই জন্ম দেন বিতর্কের। ক্ষমতাসীন দল বিজেপি থেকে শুরু করে কংগ্রেসের নেতাকর্মীরাও সমালোচনার ঝড় তুলেন।

  • ১৯৯৬ ইংল্যান্ড সফর

১৯৯৬ সালে ইংল্যান্ড সফরের মাঝপথেই দল ছেড়ে বাড়ি ফিরে যান সিধু। বছর কয়েক বাদে জানা যায় তৎকালীন ভারতীয় অধিনায়ক মোহাম্মদ আজহারউদ্দীন তাকে নিয়ে কটূক্তি করায় টিম ম্যানেজমেন্টের অনুমতি না দিয়েই দেশে ফিরে আসেন সাবেক এই ভারতীয় ওপেনার।

  • নভজ্যোৎ সিং-অমরিন্দর সিং বিতর্ক

পাঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং ও সাবেক পাঞ্জাব কংগ্রেসের প্রধান নভজ্যোৎ সিধুর বিরোধটা লম্বা সময় ধরেই। রাজনৈতিক মাঠে একজন আরেকজনের চোখের বিষ। নেতৃত্ব দেওয়া নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যেই বিরোধ শুরু থেকে।

  • পুলওয়ামা হামলায় সিধুর মন্তব্য

পুলওয়ামা জঙ্গি হামলা নিয়ে মতামত জানিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েন সিধু। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাতকারে হামলার তীব্র নিন্দা জানান তিনি। তবে হামলার পর থেকে যে ভাবে পাকিস্তানের প্রতি বিদ্বেষের আবহ তৈরি হয়েছে দেশজুড়ে, তার বিরোধিতা করে তিনি বলেছিলেন, ‘কাপুরুষের মতো হামলা চালানো হয়েছে পুলওয়ামায়। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি আমি। পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, নাশকতা করা সবসময়ই নিন্দনীয়। দোষীদের কড়া শাস্তি হওয়া উচিত। কিন্তু হাতে গোনা কয়েক জনের অপরাধের দায় একটা গোটা দেশ বা সেখানকার সাধারণ মানুষের উপর চাপিয়ে দেওয়া যায় কি?’

২৭ ডিসেম্বর, ১৯৮৮। এক পার্কিংয়ে পাতিয়ালার বাসিন্দা গুরনাম সিং’য়ের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় সিধুর। এক পর্যায়ে গুরনামকে গাড়ি থেকে বের করে মারতে থাকে সিধু ও তাঁর বন্ধুরা। পরবর্তীতে মারা যান গুরনাম। সেসময় ভারতীয় ক্রিকেটের নিয়মিত এক মুখ ছিলেন সিধু।

এরপর বেশ কয়েকবার আদালতে সাক্ষ্য-প্রমাণের অভাবে খালাস পেয়ে যান সিধু। ১৯৯৯ সালে প্রথমবার খালাস পাওয়ার পর ২০০৬ সালে রাষ্ট্রপক্ষ আবার আপিল করলে হাইকোর্টের রায়ে দোষী সাব্যস্ত হন সিধু। এরপর ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট থেকে খুনের দায়ে মুক্তি পেলেও গুরনামের পরিবার পুনরায় রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে সুপ্রিম কোর্ট নতুন করে এক বছরের কারাদণ্ড দেয় সিধুকে।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...