ম্যাডম্যাক্সই হলেন ম্যাক্সওয়েল

সব সংশয় উড়িয়ে দিয়ে সমালোচনার জবাবটা ব্যাট হাতেই দিয়েছেন তিনি। চলতি আসরে ১৫ ম্যাচে ৪৩ গড়ে করেছেন ৫১৩ রান! ১৪৪ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করা ম্যাক্সওয়েল ফিফটি করেছেন ৬ ম্যাচে! একা হাতেই জিতিয়েছেন বেশ কয়েক ম্যাচ।

এলিমিনেটরে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে হেরে এবারের মতোন আইপিএল মিশন শেষ রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর (আরসিবি)। ব্যাঙ্গালুরুর প্রাপ্তির খাতায় এই মৌসুমে সবচেয়ে বড় নাম গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে ম্যাক্সওয়েলকে নিয়ে কম কথা হয়নি। নিলামে ১৪.২৫ কোটি রূপিতে ব্যাঙ্গালুরু কিনে নেওয়ার পর বেশ সমালোচনা হয়েছিলো তাঁকে নিয়ে। কারণ গত আসরে পাঞ্জাব কিংসের হয়ে তিনি যে ছিলেন একদম সাদামাটা।

গেলো আসরে মাত্র ১৫ গড়ে ১০৮ রান করেছিলেন তিনি। ফিফটি তো দূর! একটি ছক্কাও হাঁকাতে পারেননি এই অলরাউন্ডার। সাবেক ভারতীয় ওপেনার বীরেন্দ্র শেবাগ তো একপ্রকার হাসি-তামাশায় মেতেছিলেন তাঁকে নিয়ে।

গেল বার ব্যাট হাতে বার বার ব্যর্থ হবার পর শেবাগ বলেছিলেন, ‘আইপিএলে ম্যাক্সওয়েল ১০ কোটি রূপির চিয়ারলিডার। ‘ চলছিলো প্রচুর সমালোচনা। অবশ্য এবার মন্তব্য পাল্টেছেন শেবাগ। আরিসিবির হয়ে দুর্দান্ত পারফরমের পর শেবাগ বলেছিলেন, ‘ ম্যাক্সওয়েলের প্রতিভা ও সামর্থ্য দুটোই আছে। কিন্তু মাঝে মাঝে সে ঠিকভাবে ব্রেইনের ব্যবহার করে না। ‘

চলতি আসরে ব্যাঙ্গালুরুর হয়ে ম্যাক্সওয়েল ঠিক কতটা অবদান রাখতে পারবেন টুর্নামেন্ট শুরুর আগের তা নিয়েও ছিলো সংশয়!

তবে, সব সংশয় উড়িয়ে দিয়ে সমালোচনার জবাবটা ব্যাট হাতেই দিয়েছেন তিনি। চলতি আসরে ১৫ ম্যাচে ৪৩ গড়ে করেছেন ৫১৩ রান! ১৪৪ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করা ম্যাক্সওয়েল ফিফটি করেছেন ৬ ম্যাচে! একা হাতেই জিতিয়েছেন বেশ কয়েক ম্যাচ।

বল হাতেই দলের প্রয়োজনে এনে দিয়েছেন ব্রেক থ্রু। গত আসরের ঠিক উলটো চিত্রই যেনো দেখা গেছে এবারের আসরে। এবি ডি ভিলিয়ার্স, বিরাট কোহলিদের ব্যাট সেভাবে কথা না বললেও পুরো টুর্নামেন্টেই ম্যাক্সওয়েল ছিলেন উড়ন্ত ফর্মে।

পুরো টুর্নামেন্টেই নিজের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে ছিলেন অন্যতম সেরা পারফরমার। এর আগের কয়েক আসরে স্বরূপে দেখা না গেলেও এবছর তিনি ছিলেন দুর্দান্ত। চলতি বছর টি-টোয়েন্টিতে খেলেছেন ৫ ম্যাচ। যার মধ্যে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এক ৭০ রানের ইনিংস ছাড়া সেভাবে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি তিনি।

তবুও আইপিএলের নিলামে বিক্রি হয়েছিলেন চড়া দামে। এর প্রতিদান কতটা দিতে পারবেন সেটা নিয়ে ক্রিকেট বিশ্লেষকরাও ছিলেন সন্দিহান। অবশ্য সব সংশয়ের অবকাশ কাটিয়ে দুর্দান্ত এক টুর্নামেন্ট পার করলেন ম্যাক্সওয়েল।

এই আরব আমিরাতেই পর্দা উঠবে আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের। বিশ্বকাপের আগে ম্যাক্সওয়েলের এই ফর্ম অবশ্যই অস্ট্রেলিয়ার জন্য স্বস্তির নি:শ্বাস। আইপিএলের এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে পারবেন বিশ্বকাপেও। বিশ্বকাপের আগে ওয়েস্ট ও বাংলাদেশের বিপক্ষে একই ব্যবধানে ৪-১ এ সিরিজ হারে ব্যাকফুটে অজিরা। শন মার্শ বাদে ব্যাট হাতে কাউকেই সেভাবে ধারাবাহিক পারফরম করতে দেখা যায়নি। তবে, ম্যাক্সওয়েলের ফর্ম বিশ্বকাপে অজিদের জন্য নতুন করে সম্ভাবনা তৈরি করেছে।

কন্ডিশনের সাথে মানিয়ে নিয়ে আইপিএলের দ্বিতীয় অংশে আরব আমিরাতের তিন ভেন্যুতেই করেছেন নজরকাঁড়া পারফরম্যান্স। সবার প্রত্যাশা ছাপিয়ে ম্যাক্সওয়েল বনে গেছেন এবারের আসরের অন্যতম সেরা পারফরমার। শিরোপা জয়ের লক্ষ্য নিয়ে বিশ্বকাপ মিশনে আসা অজিদের জন্য তুরুপের তাস হতে পারেন ম্যাক্সওয়েল। আইপিএলের মতো বিশ্বকাপের মঞ্চেও জাতীয় দলের হয়ে নিজের সেরাটা দিয়েই দলের জয়ে অবদান রাখতে চাইবেন এই অলরাউন্ডার।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...