রঙিন জার্সির লঙ্কান গ্রেট

চামিন্দা ভাস তখন দল থেকে ছিন্নপ্রায়! আর সেই জায়গাটা পুরোপুরি নিজের করে নিয়েছিলেন নুয়ান। লাসিথ মালিঙ্গার পেস, ইয়োর্কার আর কুলাসেকারার টাইট লাইন লেন্থ এবং স্যুইং সব মিলিয়ে লঙ্কানদের বোলিং বিভাগ তখন বেশ দুর্দান্ত। ২০০৮ সালে ২১ ম্যাচে ২০.৮৭ গড়ে ৩৩ উইকেট শিকার করেন নুয়ান। এরপর ২০০৯ এর মাঝামাঝি অবস্থায় আইসিসি ওয়ানডে বোলিং র‍্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বরে উঠে আসেন নুয়ান! তাঁর ধারাবাহিক আর ডিসিপ্লিন বোলিংই তাকে ওয়ানডেতে সফলতার শীর্ষে নিয়ে আসে।

৩১ জুলাই, ২০১৯। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজে বাংলাদেশের তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচ। আগের দুই ম্যাচ জিতে সিরিজ নিশ্চিত করে নিয়েছে লঙ্কানরা। শেষ ম্যাচে কলম্বোতে শ্রীলঙ্কার দেওয়া ২৯৫ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ২৫.৪ ওভারে বাংলাদেশের রান তখন ৬ উইকেটে ১১০।

হঠাৎ জায়ান্ট স্ক্রিনে ভেসে উঠলো গ্যালারিতে দাঁড়ানো কোট পড়া এক ভদ্রলোকের ছবি! পাশেই ওনার স্ত্রী আর লঙ্কান পেসার লাসিথ মালিঙ্গাও আছেন। ছবি স্ক্রিনে ভেসে ওঠা মাত্রই গ্যালারিতে দর্শকদের উল্লাসে পুরো প্রেমাদাসায় যেনো একটি নামই ভেসে আসছিলো! নুয়ান কুলাসেকারা। হ্যাঁ, এক সময়ের আইসিসি ওয়ানডে র‍্যাঙ্কিংয়ের সেরা বোলার হিসেবে খ্যাতনামা লঙ্কান পেসার নুয়ান কুলাসেকারা।

কিন্তু, দুই বছর ধরে দলের বাইরে থাকা তিনি আজ হঠাৎ পরিবার সমেত মাঠে। নিশ্চয়ই কোনো কারণ আছে! হঠাৎ একটু ফ্ল্যাশব্যাকে গিয়ে মনে করলাম এইতো গত দিন তিনি ঘোষণা দিয়েছেন ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর। শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট (এসএলসি) থেকে বিদায় সংবর্ধনা দেওয়ার জন্যই মূলত তাকে আমন্ত্রণ করা।

এই মাঠেই তো বল হাতে কত দাপিয়ে বেড়িয়েছেন তিনি! আর আজ গ্যালারিতে দাঁড়িয়ে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন মাঠ থেকে বিদায়ের। অবশ্য তাঁর সামনেই সেদিন লঙ্কান বোলাররা বাংলাদেশি ব্যাটিং লাইনআপ ধসিয়ে দিচ্ছিলেন। চোখের সামনে লঙ্কানদের আরেকটি বড় জয় দেখছিলেন নুয়ান। তাঁর সামনেই বাংলাদেশকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে ৩-০ তে হোয়াইটওয়াশ করে লঙ্কানরা। আর সেই জয়টা উৎসর্গ করা হয় লঙ্কান ক্রিকেটের পেস রত্ন নুয়ান কুলাসেকারাকে।

সেদিনও মনে হচ্ছিলো আরেকবার হয়তো বল হাতে লম্বা রানআপ নিয়ে দৌঁড় শুরু করবেন। ব্যাটসম্যানের চোখেমুখে  চিন্তার ছাপ। ইনস্যুইং নাকি আউটস্যুইং? দুই পাশেই বল মুভ করাতে বেশ দক্ষ ছিলেন বটে। তবে ইনস্যুইংটা অবশ্য তাঁর প্রতিভার অংশ ছিলো। কিন্তু আউটস্যুইংটা তিনি দীর্ঘ সময় সাধনা করে অর্জন করেছেন। আর নিখুঁত লাইন-লেন্থ বজায় রাখাটা তাঁর স্বভাবসুলভই ছিল।

এবার বিদায়ের পালা। যিনি দীর্ঘসময় ২২ গজ দাপিয়ে বেড়িয়েছেন! ওয়ানডে ক্রিকেটের সেরা বোলার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তাকে বিদায় দেওয়ার আগে একবার তাঁর ক্যারিয়ারের শুরুতে ফিরে যাই। সফট বল ক্রিকেট থেকে বিশ্বসেরা ওয়ানডে বোলারের সফরটা একটু দেখে আসি।

২২ জুলাই, ১৯৮২। শ্রীলঙ্কার নিত্তম্বুয়া শহরে জন্ম নেন নুয়ান কুলাসেকারা। ছোট বেলা থেকে সফট-বল ক্রিকেট খেলে বড় হয়েছেন তিনি। তিনি কখনো ভাবতেও পারেননি এতোদূর পথ পাড়ি দিবেন ক্রিকেটে। পেসার হিসেবেও কখনো নিজেকে ভাবনায় নেননি তিনি। স্কুলের গন্ডি পেরোনোর পর প্রথমবার ক্রিকেট বল হাতে নেন তিনি। এরপর চার বছর নিউগগোডা ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে খেলেন তিনি। সেখান থেকেই ২০০২ সালে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে গল ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে অভিষিক্ত হন নুয়ান।

শ্রীলঙ্কার হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলবেন তখনও এমন কিছু চিন্তায়ও আনেননি। কিন্তু তাঁর চোখ ধাঁধাঁনো পারফরম্যান্সে দ্রুত উন্নতি করতে থাকেন তিনি। এরপর ২০০২-০৩ মৌসুমে গল ক্রিকেট ক্লাবের সিনিয়র দলে অভিষিক্ত হন তিনি। তাঁর অভিষেক মৌসুমেই ২১.০৬ গড়ে ১৫ ম্যাচে ৬১ উইকেট শিকার করেন তিনি!

এর মধ্যে তিনবার পাঁচ উইকেট আর একবার শিকার করেন দশ উইকেট! নির্বাচকরা নুয়ানে মুগ্ধ হয়ে তাকে ২০০৩ সালে অনূর্দ্ধ-২৩ দলে জায়গা করে দেন। পরবর্তীতে সেখান থেকেই ভারত-পাকিস্তানের সাথে ত্রিদেশীয় সিরিজে শ্রীলঙ্কার ইমার্জিং দলে জায়গা পান নুয়ান। এরপর আরেকটি ত্রিদেশীয় সিরিজের জন্য শ্রীলঙ্কা এ দলের হয়ে ভারত সফরে যান নুয়ান। সিনিয়র দলের হয়ে অভিষেকের মাত্র এক বছরের মাথায়ই নুয়ানের ক্যারিয়ারের এতো পরিবর্তন!

২০০৩ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে ডাক পান তিনি। বৃষ্টিবিঘ্নিত সেই সিরিজে মাত্র এক ম্যাচ খেলা হয়। যেখানে দিনুশা ফার্নান্দোর সাথে প্রথম ওয়ানডেতে অভিষিক্ত হন নুয়ান। নিজের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচে দুই ইংলিশ ব্যাটসম্যানকে নিজের শিকার বানান তিনি! অপরদিকে ইংলিশরা মাত্র ৮৮ রানেই গুড়িয়ে যায়!

দুই লঙ্কান ওপেনার সনাথ জয়াসুরিয়া ও রমেশ কালুভিতারানার ব্যাটে সহজ জয় পায় লঙ্কানরা। ক্যারিয়ারের শুরুটা খুব অসাধারণ কিছু না করতে পারলেও যতই দিন গড়িয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজেকে মেলে ধরেছেন নুয়ান।

তখন লঙ্কানদের পেস বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন দিলহারা ফার্নান্দো। ২০০৪ সালে পেসার লাসিথ মালিঙ্গা আর অলরাউন্ডার পারভেজ মাহারুফকে দলে ভিড়িয়ে দল ভারী করে লঙ্কানরা। এই দুইজনের অভিষেকে দলে জায়গা পেতে কিছুটা পিছিয়ে যান কুলাসেকারা। এরপর দলে নিজের জায়গা পাঁকা করতে অপেক্ষার প্রহর গুনতে থাকেন তিনি। তবে সেটিতে ব্যর্থ হন নুয়ান। ২০০৪ সালে পাঁচ ওয়ানডেতে মাত্র ১ উইকেট পাবার পর এক বছর আর দলে সুযোগই পাননি তিনি।

এপ্রিল ২০০৫। নেপিয়ারে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে অভিষিক্ত হন নুয়ান। ব্যাটিং উইকেটে ল্যু ভিনসেন্টকে প্রথম ইনিংসে নিজের একমাত্র শিকার বানান তিনি। অনেকটা সাদামাটা বোলিংয়ের পরই দল থেকে বাদ পড়লেন! পরবর্তীতে একবছর পর ২০০৬ সালে ওয়ানডে দলে সুযোগ পেয়েই দাপুটে পারফরম্যান্স দেখান।

খুব বেশি উইকেট নিতে না পারলেও তাঁর ইকোনমিক বোলিংয়ে সবাইকে মুগ্ধ করেন তিনি। এরপর ওই বছরের শেষে আবারো টেস্ট দলে ডাক পান তিনি। সেখানে বল হাতে আহামরি তেমন কিছুই করতে পারেননি এই পেসার।

তবে, ব্যাট হাতে তিনি ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ইনিংস উপহার দেন নুয়ান। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লর্ডস টেস্টে ফলোয়ান এড়াতে একা লড়ছিলেন লঙ্কান অধিনায়ক মাহেলা জয়াবর্ধনে। একপ্রান্তে মাটি আঁকড়ে পড়ে থেকে জয়াবর্ধনের সাথে সেই টেস্ট ড্র করেন নুয়ান!

জয়াবর্ধনের সাথে তাঁর দুর্দান্ত ৬৪ রানের লড়াকু ইনিংস দলের পরাজয় এড়ায়। বল হাতে আশার আলো দেখাতে না পারলেও ব্যাট হাতে তাঁর সেই ম্যাচ বাঁচানো ইনিংস লঙ্কান ক্রিকেটভক্তরা সবসময়ই মনে রাখবে। ব্যাটিংয়ে কিছুটা সামর্থ্য দেখালেও নিজের মূল অস্ত্র বোলিংয়ে ছিলেন ফিঁকে। বল হাতে ব্যর্থতার পর আবারো বাদ পড়েন তিনি। এরপর ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো করে ২০০৭ বিশ্বকাপে আবারো দলে ফেরেন তিনি। নিখুঁত লাইন-লেন্থ আর ইনস্যুইংয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করে নিজেকে সেরা হিসেবেই প্রমাণ করছিলেন তিনি। এরপর হতাশাজনক পারফরম্যান্স করে আবারও দলের বাইরে!

সেখান থেকে ২০০৮ সালে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত এক ত্রিদেশীয় সিরিজে ওয়ানডেতে পুনরায় কামব্যাক করেন নুয়ান। একই বছর ওয়ানডে সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তাঁর দুর্দান্ত পারফরম্যান্স তাকে দলে জায়গা পেতে আরও সহজ করে দেয়।

ত্রিনিদাদের কুইন্স পার্ক ওভালে দুই ম্যাচে ৪৩ রানে এবং ২৮ রানে ৩ টি করে উইকেট শিকার করেন তিনি। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। দলে নিজের জায়গা পাঁকা করে ফেলেন নুয়ান। একই বছর অক্টোবরে টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে অভিষিক্ত হন তিনি। ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে নজরকাঁড়তে পারলেও সাদা পোশাকে তিনি ছিলেন ব্যর্থ।

২০০৮ এবং ২০০৯ এই দুই বছর রঙিন পোশাকে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখান তিনি। চামিন্দা ভাস তখন দল থেকে ছিন্নপ্রায়! আর সেই জায়গাটা পুরোপুরি নিজের করে নিয়েছিলেন নুয়ান। লাসিথ মালিঙ্গার পেস, ইয়োর্কার আর কুলাসেকারার টাইট লাইন লেন্থ এবং স্যুইং সব মিলিয়ে লঙ্কানদের বোলিং বিভাগ তখন বেশ দুর্দান্ত।

২০০৮ সালে ২১ ম্যাচে ২০.৮৭ গড়ে ৩৩ উইকেট শিকার করেন নুয়ান। এরপর ২০০৯ এর মাঝামাঝি অবস্থায় আইসিসি ওয়ানডে বোলিং র‍্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বরে উঠে আসেন নুয়ান! তাঁর ধারাবাহিক আর ডিসিপ্লিন বোলিংই তাকে ওয়ানডেতে সফলতার শীর্ষে নিয়ে আসে।

২০১০ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে নুয়ান ও সানাকা ওয়েলাগেদারার বোলিংয়ে মাত্র ৬০ রানেই পাঁচ উইকেট হারায় ভারত। ২০১৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ কুলাসেকারার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা স্মৃতি।

ব্রিসবেনে তাঁর দাপুটে বোলিংয়ে অজিরা মাত্র ৭৪ রানেই গুড়িয়ে যায়! ২২ রানে ৫ উইকেট নিয়ে অজিদের একাই ধসিয়ে দেন তিনি। এক পর্যায়ে মাত্র ৩০ রানে ৬ উইকেট ছিল অজিদের। যার পাঁচটাই শিকার করেন কুলাসেকারা। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ওই একবারই তিনি পাঁচ উইকেট শিকার করতে সক্ষম হন!

বোলিংয়ে দুর্দান্ত হলেও ব্যাটিংয়েও তিনি যথেষ্ট দক্ষ ছিলেন।২০০৬ সালে লর্ডসে তাঁর ব্যাটিং সামর্থ্য টিম ম্যানেজমেন্ট অবশ্য ভোলেনি। তার পিঞ্চ হিটিং অ্যাবিলিটির কারণে ২০১১ বিশ্বকাপের ফাইনালে থিসারা পেরেরার আগে তাকে ব্যাটিংয়ে পাঠানো হয়! স্লগে নেমে ৩২ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলে দলকে একটা শক্তিশালী সংগ্রহ পেতে সাহায্য করেন তিনি।

২০১৩ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২৯৪ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নামে লঙ্কানরা। ১৮৭ রানে তখন লঙ্কানদের তিন উইকেট! এমন অবস্থায় সাঙ্গারকারার সাথে ব্যাট করতে পাঠানো হয় কুলাসেকারাকে! অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস, দীনেশ চান্দিমাল, লাহিরু থিরিমান্নের আগে ব্যাটিংয়ে পাঠানো হয় তাকে! ব্যাটিংয়ে নেমেই চার-ছক্কার ঝড় তোলেন নুয়ান। সাঙ্গাকারার সেঞ্চুরি আর কুলাসেকারার ৩৮ বলে অপরাজিত ৫৫ রানে ৭ উইকেটের জয় পায় লঙ্কানরা! ২০১৪ সালে লঙ্কানদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি।

কুলাসেকারার লক্ষ্য ছিলো সাদা পোশাকে দলে জায়গা পাঁকা করা। তবে সেটি পারেননি তিনি। অবশ্য সাদা পোশাকে তাঁর মতো ক্যালিবারের একজন বোলারের বেশ প্রয়োজন ছিলো লঙ্কানদের। তখন বয়স ৩১! ছিলেন নিজের সেরা ফর্মে। কিন্তু সাদা পোশাকে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি তিনি। তাই ২১ টেস্টেই সাদা পোশাকের জার্নিটার ইতি টানতে হয় নুয়ানকে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে শেষ টেস্ট খেলেন! এরপর রঙিন পোশাকে খেলা চালিয়ে গেলেও নিজের সীমাবদ্ধতা জেনেই টেস্টকে বিদায় জানান তিনি।

২০০৭ বিশ্বকাপের ফাইনাল, ২০০৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল, ২০১১ বিশ্বকাপের ফাইনাল এবং ২০১২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলা লঙ্কানদের অন্যতম সদস্য ছিলেন নুয়ান। তবে এই চারবারের একবারও শিরোপা জিততে পারেনি লঙ্কানরা। অবশেষে ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে লঙ্কানদের জয়ে শিরোপা উঁচিয়ে ধরেন কুলাসেকারা।

ওয়ানডেতে সাত নম্বরে ব্যাটিং করে করেন নিজের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহ ৭৩ রান।। তিনি একমাত্র লঙ্কান ক্রিকেটার যিনি এক নম্বর র‍্যাঙ্কিংয়ে ছিলেন। টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে সবচেয়ে ইকোনমিক্যাল বোলিংয়ের রেকর্ড নিজের নামে করেন নুয়ান (০.০)! ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে লঙ্কানদের বিপক্ষে মাত্র ৩৯ রানেই গুড়িয়ে যায় ডাচরা।

সেই ম্যাচে ২ ওভারে কোনো রান না দিয়ে ১ উইকেট শিকার করেন নুয়ান। একমাত্র বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে ০.০ ইকোনমিতে বল করার কীর্তি গড়েন তিনি। টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি মেইডেন ওভার করার তালিকার দুইয়ে আছেন নুয়ান। ৬ বার তিনি মেইডেন ওভার করেন টি-টোয়েন্টিতে!

টেস্টে ২১ ম্যাচে ৪৮ উইকেট শিকার করেছেন নুয়ান, সর্বোচ্চ নিয়েছেন ৪ উইকেট। ১৮৪ ওয়ানডেতে ৪.৯০ ইকোনমিতে ১৯৯ উইকেট শিকার করেন তিনি। পাঁচ উইকেট নিয়েছেন একবার। এছাড়া ৫৮ টি-টোয়েন্টিতে শিকার করেন ৬৬ উইকেট। ঘরোয়া ক্রিকেটে ৪৮৫ ম্যাচে শিকার করেছেন ৭৫১ উইকেট। পাঁচ উইকেট ১১ বার আর ১০ উইকেট নিয়েছেন ১ বার। ব্যাট হাতে ব্যাট হাতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে চার ফিফটিতে করেছেন ১৯৩৬ রান!

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব ছাড়াও খেলেছেন চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও রংপুর রাইডার্সের হয়ে খেলেন তিনি। এছাড়াও পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) এবং টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টেও খেলেছেন তিনি। রঙিন পোশাকে নিয়মিত খেললেও তরুনদের সুযোগ দিতে ২০১৭ সালে দলে জায়গা হারাতে হয় তাকে। এরপর অপেক্ষার প্রহর কাটালেও আর জায়গা মেলেনি দলে!

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...