রানের পাহাড়ের সর্বোচ্চ চূড়া

রান বন্যায় ভাসিয়ে নিজের নাম লিখিয়েছেন সেরাদের কাতারে; গড়েছেন অনেক রেকর্ড। আইপিএল ইতিহাসে এক মৌসুমে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় আছেন বিশ্বের সেরা টি-টোয়েন্টি তারকারা।

মাইক হাসি, ক্রিস গেইল থেকে শুরু করে বিরাট কোহলি, জশ বাটলার – ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) শুরু থেকেই ব্যাট হাতে দাপট দেখিয়েছেন বহু তারকা। রান বন্যায় ভাসিয়ে নিজের নাম লিখিয়েছেন সেরাদের কাতারে; গড়েছেন অনেক রেকর্ড। আইপিএল ইতিহাসে এক মৌসুমে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় আছেন বিশ্বের সেরা টি-টোয়েন্টি তারকারা।

বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই ফ্র‍্যাঞ্চাইজি লিগে রানের পাহাড় গড়েছেন কারা? – তাঁদের নিয়েই আমাদের এবারের আয়োজন।

  • বিরাট কোহলি – ৯৭৩, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু – ২০১৬

২০১৬ সালটা স্বপ্নের মতই কেটেছিল বিরাটের। ছিলেন ক্যারিয়ারের সেরা ফর্মে। ব্যাট হাতে দাপট দেখাচ্ছিলেন প্রতিনিয়ত। গড়েছেন রানের পাহাড়; আইপিএল ইতিহাসে এক মৌসুমে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড।

১৬ ম্যাচে ৮১ গড়ে ১৫২ স্ট্রাইক রেটে করেছিলেন ৯৭৬ রান। সাত ফিফটি আর চার সেঞ্চুরিতে পুরো আসরটা যেন নিজের করে নিয়েছিলেন এই ভারতীয় তারকা।

বিরাটের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে সেবার ফাইনালে পা দেয় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু। প্রথমবারের মত আইপিএলের শিরোপা জয়ের হাতছানি; আগে দু’বার ফাইনালে গেলেও শিরোপা ছুঁতে পারেনি বিরাটবাহিনী। তাই বিরাটের ব্যাটে শিরোপা জয়ের অধরা স্বপ্নটা পূরণ করতে মরিয়া ব্যাঙ্গালুরু।

  • জশ বাটলার – ৮৬৩, রাজস্থান রয়্যালস – ২০২২

টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান, ছক্কা সবকিছুই বাটলারের দখলে; সর্বোচ্চ রানের মালিকও তিনি। ১৭ ম্যাচে ৫৭ গড় আর ১৪৯ স্ট্রাইক রেটে ৮৬৩ রান। ৪ ফিফটির পাশাপাশি আছে ৪ সেঞ্চুরিও। বিরাটের পর আইপিএল ইতিহাসে এক মৌসুমে গড়েছেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড।

মাঝে খারাপ সময় না কাটালে হয়ত ভেঙে ফেলতেন বিরাটের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটাও। পুরো আসর জুড়ে দাপট দেখানো বাটলারের হাসিটা ফিঁকে হয়ে গেল ফাইনালে দলের ব্যর্থতায়।

দুই ভিন্ন আসর, দুই ভিন্ন তারকা; দুই ফাইনাল, দু’টি ব্যর্থতা। ছয় বছরের ব্যবধানে ২৯মে রাতে আইপিএল সাক্ষী হল দুটি ফাইনালের; দুই ম্যাচে একদিকে শিরোপাজয়ীদের উল্লাস, আরেকদিকে দুই আক্ষেপ।

  • ডেভিড ওয়ার্নার – ৮৪৮, সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ – ২০১৬

বিরাটের মত ২০১৬ আইপিএলের আসরে ব্যাট হাতে উড়ন্ত ফর্মে ছিলেন সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ। ১৭ ইনিংসে ৬০ গড় আর ১৫১ স্ট্রাইক রেটে করেন ৮৬৩ রান; সেবার ব্যাট হাতে দেখা পেয়েছিলেন নয় ফিফটির।

এক আসরে সর্বোচ্চ ফিফটির রেকর্ড গড়েন এই তারকা। বিরাটের সাথে রানের দৌড়ে হেরে গেলেও ফাইনালের মঞ্চে বিরাটকে হারিয়ে শিরোপা ঠিক জিতে নেন ওয়ার্নার। দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে সেবার প্রথমবারের মত দলকে শিরোপা এনে দেন এই অজি তারকা। ওয়ার্নারের দাপটের দিনে স্বপ্নভঙ্গ হয় বিরাট বাহিনীর।

  • কেন উইলিয়ামসন – ৭৩৫, সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ – ২০১৮

সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের জার্সি গায়ে শম্বুকগতির ব্যাটিংয়ের কারণে আইপিএলে সমালোচনার বৃত্তে নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সাথে তাঁর ব্যাটিং টেকনিকটা মোটেও মানানসই না।

তবে, ২০১৮ সালে হায়দ্রাবাদের জার্সি গায়ে তিনি পার করেছিলেন অবিশ্বাস্য এক মৌসুম। ছিলেন উড়ন্ত ফর্মে; সমালোচনার বিন্দু পরিমাণ জায়গা রাখেননি তিনি। ১৭ ম্যাচে ৪২ গড় আর ১৫১ স্ট্রাইক রেটে করেছিলেন ৭৩৫ রান। আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন উইলিয়ামসন। সেঞ্চুরির দেখা না পেলেও আট ফিফটি করেন এই ব্ল্যাকক্যাপস তারকা।

  • ক্রিস গেইল – ৭৩৩, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু – ২০১২

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় তারকা হিসেবে খ্যাতিনামা ক্যারিবীয় তারকা ক্রিস গেইলের। আইপিএলের ইতিহাসের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার তিনি। ব্যাট কত তাণ্ডব চালিয়েছেন তার ইয়ত্তা নেই।

২০১২ সালে ব্যাট হাতে ছিলেন বিধ্বংসী রূপে। ১৪ ম্যাচে সেবার ৬১ গড় আর প্রায় ১৬১ স্ট্রাইক রেটে ৭৩৩ রান করেন এই ক্যারিবিয়ান দানব। ১ সেঞ্চুরির পাশাপাশি ছিল ৭ ফিফটিও।

  • মাইক হাসি – ৭৩৩, চেন্নাই সুপার কিংস – ২০১৩

ত্রিশ বছর বয়সে জাতীয় দলে এসেছিলেন। সেখান থেকে বনে গেছেন বিশ্বসেরা; নামের পাশে আখ্যা পেয়েছেন মি. ক্রিকেট। আইপিএলের মঞ্চেও নিজের শ্রেষ্ঠত্বের ছাপ রাখেন এই অজি তারকা।

চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে খেলেছেন কয়েক মৌসুম। ২০১৩ সালটা ব্যাট হাতে দুর্দান্ত সময় পার করেছেন হাসি। ১৭ ম্যাচে ৫২ গড় আর ১২৯ স্ট্রাইক রেটে ৭৩৩ রান করেন এই তারকা ব্যাটার; সেবার সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন হাসি।

  • ক্রিস গেইল – ৭০৪, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু – ২০১৩

২০১২-১৩ দুই আসরে বিধ্বংসী ফর্মে ছিলেন ক্রিস গেইল। ২০১২ সালে ব্যাট হাতে আইপিএলে পুরো আসরজুড়ে তাণ্ডব চালানোর পর ২০১৩ মৌসুমেও ছিলেন উড়ন্ত ফর্মে। ১৬ ম্যাচে ৫৯ গড় আর ১৫৬ স্ট্রাইক রেটে ৭০৪ রান করেন এই ক্যারিবিয়ান তারকা।

১ সেঞ্চুরি আর ৪ ফিফটি ছিল গেইলের নামের পাশে। ওই আসরে পুনে ওয়ারিয়র্স ইন্ডিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১৭৫ রানের ইনিংস খেলেন এই ক্যারিবিয়ান দানব। টানা দুই আসরেই আইপিএলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন গেইল।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...