নাঈমের দারুণ ইনিংসের শেষেও রয়ে গেল খুঁত
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে তো রীতিমত নিজের মুন্সিয়ানা দেখালেন নাঈম। দারুণ সব বুদ্ধিদীপ্ত শটে এবারের আসরে নিজের দ্বিতীয় ফিফটির আদায় করে নেন তিনি।
‘এই ছেলেটার (নাঈম শেখ) মধ্যে এত সক্ষমতা আছে, ও নিজেও ওর ব্যাপারে বোঝে কিনা আমি নিজেও জানি না।’ কয়েকদিন আগে এমন আক্ষেপের সুর ঝড়েছিল দুর্দান্ত ঢাকার কোচ খালেদ মাহমুদ সুজনের কণ্ঠ থেকে। নাঈম সম্ভবত এরপরই নিজেকে নিয়ে ভেবেছেন। এরপরই কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে ফিফটি তুলে নেন দারুণ ভঙ্গিমায়। তবে দৃষ্টিকটুভাবে আউট হয়ে যেন সুজনের কথাই বলবৎ রাখলেন তিনি।
এই মুহূর্তে বিপিএলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক নাঈম শেখ। ২৫৬ রান নিয়ে বর্তমানে সবার উপরেই অবস্থান করছেন বা-হাতি এই ব্যাটার। এক লহমায় যেন বদলে গেল সবকিছু। নিজের মানসিকতার কি অসাধারণ পরিবর্তনই ঘটালেন তিনি। টানা দুই ম্যাচে ঢাকার হয়ে দুর্দান্ত দুই ইনিংস খেলে গেলেন নাঈম।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে তো রীতিমত নিজের মুন্সিয়ানা দেখালেন নাঈম। দারুণ সব বুদ্ধিদীপ্ত শটে এবারের আসরে নিজের দ্বিতীয় ফিফটির আদায় করে নেন তিনি। কুমিল্লার বোলারদের যেন অসহায় ঠেকতে শুরু করে তার সামনে। তাই নিজের উইকেটটি অদ্ভুতভাবেই বিলিয়ে দিয়ে এলেন নাঈম।
১৪২.২২ স্ট্রাইকরেটের একটা ঝকঝকে ইনিংস। গড়পড়তা বাংলাদেশী ব্যাটারদের তুলনায় বেশ প্রসংশনীয় এক ইনিংসই খেললেন তিনি। ৪৫ বলে ৬৪ রানের একটি ইনিংস উপহার দিয়ে যান তিনি। এই ইনিংস খেলার পথে ৯টি বাউন্ডারি ছাড়াও ১টি ছক্কা আদায় করে নিয়েছেন নাঈম শেখ। তাতে করে অবশ্য বড় রানের ভীত পেয়ে যায় ঢাকা।
সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে ম্যাচের পর এদিনও দারুণ একটি জুটি গড়েন তিনি সাইফ হাসানকে সঙ্গী করে। গত দিনের ৭৮ রানের পার্টনারশীপটা এদিন বরং বেড়েছেই। এই দু’জনের ১১৯ রানের জুটির কল্যাণেই বড় রানের স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছিল ঢাকার ডাগআউট। তবে তাদের বিদায়ের পর রানের গতি খানিকটা স্লথ হলেও অ্যালেক্স রসরা সংগ্রহ নিয়ে গেছেন ১৭৬ অবধি।
ডটের পর ডট দেওয়া, ধীর গতিতে রান করা। এমনটাই ছিল নাঈম শেখের পরিচিতির অংশবিশেষ। সেই নাঈম বরং খানিকটা নিজেকে পরিবর্তন করবার মিশনেই নেমেছেন। যদিও তার খেলা ডটবলের সংখ্যা একেবারেই কমে যায়নি। দারুণ এই ইনিংসেও ২৮ শতাংশ বলে কোন রান নিতে পারেননি নাঈম। সেটা অবশ্য তার ব্যাটিং টেকনিকের দূর্বলতার কারণ।
তবে উন্নতি তিনি করেছেন। খরচ করা বলের প্রেক্ষিতে রান পুষিয়ে অবশ্য দিচ্ছেন তিনি। সেটাই সম্ভবত সবচেয়ে ইতিবাচক দিক। তার মূল সমস্যার জায়গা সম্ভবত সেটাই ছিল। তিনি খরচ করা বলগুলো পরবর্তীতে রান দিয়ে পুষিয়ে দিতে পারতেন না। দলকে ভীষণ চাপে ফেলে আউট হয়ে যাওয়ার একটা প্রবণতা ছিল তার মধ্যে। সেটা বরং তিনি কাটিয়ে উঠতে শুরু করেছেন।
কিন্তু ওই যে মানসিকতার সমস্যা তার অবশ্য রয়েছে। দারুণ ইনিংসের শেষে ‘হিট উইকেট’ হওয়ার মত খুঁত রেখে গেলেন তিনি। এই ইনিংস বড় করতে না পারাটা মানসিক সমস্যাই বটে। নিজের এই দিকটার উন্নতি নিশ্চয়ই করতে চাইবেন নাঈম শেখ। তবেই তো আঁধার দিনের আলোর উৎস হয়ে উঠবেন তিনি।