কলকাতা থেকে আইসিসির মসনদে!

পশ্চিম বাংলার বহু ক্রিকেটার হয়ত অনেকেই খেলেছেন কিংবা খেলবেন। তবে এক কলকাতা ছাড়িয়ে পুরো ভারতবর্ষে দাদা হয়ত কারও হয়ে ওঠা হবে না। ক্যারিশম্যাটিক সত্ত্বা তো আর সবার থাকে না। সেটার ধারক একমাত্র সৌরভ গাঙ্গুলী। তিনি কেমন যেন এক অদ্ভুত মায়াতে বেঁধে ফেলতে জানেন সবাইকে। ক্রিকেট মাঠে দুর্দান্ত সব পারফরমেন্স করেই অবশ্য তিনি মন জয় করেছেন।

লর্ডস তখন আগ্নেয়গিরি। দেয়াল গুলো লাভায় মোড়ানো। সেই দেয়ালের সামনে দাঁড়িয়ে অভাবনীয় উদ্দ্যমে গগনবিদারি চিৎকার করছে এক খোলা চিবুক। আর কাল চুলের উপর অনবরত ঘুরছে এক আকাশ। ভারতের জার্সির রঙ তো সেটাই। লর্ডসের বারান্দায় সৌরভ গাঙ্গুলির সে বুনো উল্লাস কি কখনো ভোলা যাবে!

পশ্চিম বাংলার বহু ক্রিকেটার হয়ত অনেকেই খেলেছেন কিংবা খেলবেন। তবে এক কলকাতা ছাড়িয়ে পুরো ভারতবর্ষে দাদা হয়ত কারও হয়ে ওঠা হবে না। ক্যারিশম্যাটিক সত্ত্বা তো আর সবার থাকে না। সেটার ধারক একমাত্র সৌরভ গাঙ্গুলী। তিনি কেমন যেন এক অদ্ভুত মায়াতে বেঁধে ফেলতে জানেন সবাইকে। ক্রিকেট মাঠে দুর্দান্ত সব পারফরমেন্স করেই অবশ্য তিনি মন জয় করেছেন।

গোটা ক্রিকেট বিশ্ব তাঁকে আখ্যায়িত করেছে ‘প্রিন্স অব ক্যালকাটা’। তিনি যেন রাজার বেশেই নামতেন বাইশ গজে। দাপটের সাথে প্রতিপক্ষের বোলারদের উপর তরবারীরুপে চালাতেন ব্যাট। তাইতো ‘মহারাজা’ বলেও ডাকতো অনেকে। ক্রিকেট মাঠের মহারাজ হয়েছেন ক্রিকেট দপ্তরের মহারাজ। প্রথমে তিনি পশ্চিম বাংলার ক্রিকেট বোর্ড সভাপতি হন। এরপর তো গোটা ভারতে ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রণের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর ব্যক্তিতে পরিণত হয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন দুই দফা।

এখন একটা জোর গুঞ্জন বিশ্বক্রিকেট পাড়ায়। আইসিসির বোর্ড সভা চলছে ইংল্যান্ডে বার্মিংহ্যামে। সেখানেই গুঞ্জনের সূত্রপাত। ক্রিকেট নিয়ন্ত্রণের সর্বোচ্চ পদ আইসিসি চেয়ারম্যান পদের জন্যে তাঁকে নির্বাচন করতে চায় আইসিসির বহু সদস্যরা। আইসিসির বর্তমান সদস্য সংখ্যা ১৬টি। গুঞ্জনটা বেশ জোরালো। তবে এখনও কোন কিছুই চূড়ান্ত নয়।

বহুকাল আগে বেশ সফলতার সাথেই তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন ভারত জাতীয় ক্রিকেট দলের। তখন তো তিনি ছিলেন দলনেতা। দক্ষ হাতেই তিনি সামলেছেন। গড়ে দিয়েছেন বহু খেলোয়াড়দের ক্যারিয়ার। তিনি ভরসা রেখেছিলেন বলেই পরবর্তীতে বীরেন্দ্র শেবাগ আলো ছড়িয়েছেন। বিশ্ব নন্দিত একজন ব্যাটার হয়েছেন। সেই সাথে জিতে দেখেছেন ওয়ানডে বিশ্বকাপ। জহুরি হয়ে খাটি রত্ন ঠিকঠাক চিনতে পারেন তিনি।

খেলোয়াড় হিসেবেও তিনি ঠিক যতটা দক্ষ হাতে সামলেছেন মাঠের ক্রিকেট। ঠিক ততটাই দক্ষতা তিনি দেখিয়েছেন একজন সংগঠক হিসেবে। ভারতের পক্ষ থেকে পরবর্তী আইসিসি চেয়ারম্যান হিসেবে তাঁর নামটাই ওঠার সম্ভাবনা বেশি। তবে যদি কিন্তুর একটা সমীকরণ এখানে থেকে যাচ্ছে। ভারতের আদালতে মামলা চলছে। না আইসিসির চেয়ারম্যান পদ নিয়ে নয়।

মামলা চলছে মূলত বিসিসিআইয়ের একটি প্যানেলের মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে। এখানের অন্যতম চরিত্র সৌরভ গাঙ্গুলিসহ জয় শাহদের প্যানেল। দুই মেয়াদে তিন বছরের দায়িত্ব শেষ হবে আসছে সেপ্টেম্বরে। এর আগেই যদি মিলে যায় মোকদ্দমার ফলাফল তবে হয়ত আরেক মেয়াদে গাঙ্গুলি-শাহ জুটিকে দেখা যাবে বিসিসিআইয়ের শীর্ষ পদে।আর তেমনটা না হলে হয়ত আইসিসির চেয়ারম্যান পদে দেখা যেতে পারে সৌরভকে।

নিয়ম মাফিক এবারের চেয়ারম্যান পদটার দাবিদার ভারত। আর ভারত থেকে সৌরভকেই নির্বাচন করবার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। তবে পিছিয়ে নেই জয় শাহও। কিন্তু আইসিসির সদস্যদের পছন্দের তালিকায় উপরের দিকেই অবস্থান সৌরভ গাঙ্গুলির। সেদিক বিবেচনায় যদি বিসিসিআইয়ের সভাপতি পদ হারান সৌরভ তবে চেয়ারম্যান পদ একেবারে সুনিশ্চিত বলা চলে।

মহারাজা এবার করবেন বিশ্ব ক্রিকেটে রাজ। কলকাতা থেকে এবার তিনি বসবেন বিশ্ব ক্রিকেটের মসনদে!

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...