২০ হাজার কোটি টাকার ম্যাচ!

পেপ গার্দিওলা আর পচেত্তিনোর দুই দলের মধ্যেই রয়েছে বিশ্বের সেরা সেরা কয়েকজন তারকা ফুটবলার। যাদের যে কোনো একজনের উপস্থিতিতেও ভক্ত-সমর্থকদের সব আলো কেড়ে নিতে যথেষ্ট। কারণ, দু’দলেই রয়েছে ট্রান্সফারে রেকর্ড সৃষ্টি করা একাধিক ফুটবলার। ফুটবলের ট্রান্সফার মার্কেট ডাটা তথ্য বলছে, পিএসজি স্কোয়াডের মূল্যই হচ্ছে ১ বিলিয়ন ইউরো (প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা) আর পিএসজির স্কোয়াডের মূল্য হচ্ছে ৯৯৭.২৫ মিলিয়ন ইউরো তথা (৯ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা)! দুই দলের একসঙ্গে মূল্য দাঁড়াচ্ছে ২ বিলিয়ন ইউরো অর্থাৎ প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা।

একটা ফুটবল ম্যাচে সর্বোচ্চ কত টাকার হতে পারে, এমন প্রশ্ন যদি কোন দর্শককে করা হয় তাহলে উত্তর দিতে তাকে রাজ্যের চিন্তায় পড়ে যেতে হবে। কেউ কেউ তো বলতেই পারেন, এ আবার কেমন প্রশ্ন। যেহেতু একটা ম্যাচ সর্বোচ্চ কত টাকার হতে পারে, সেটি আলোচনা শুরু হয়েছে তাই কোন ম্যাচ তা জানতে কৌতুহলী মানুষের নিশ্চয়ই অভাব হওয়ার কথা নয়।

উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে প্যারিস সেন্ট জার্মেই ও ম্যানচেষ্টার সিটির মধ্যকার ম্যাচটি নাকি ২০ হাজার কোটি টাকা মূল্যের ফুটবল ম্যাচ হয়েছে! ২-০ গোলে জিতে সবচেয়ে দামী ম্যাচ জয়ের তকমাটা এরই মধ্যে নিজেদের করে নিয়েছে ফরাসী জায়ান্টরা। এমনিতে প্যারিসকে বলা হয়ে থাকে ভালবাসার শহর। আর সেখানকার রাজকুমারী বলা হয় যাকে তার নাম পার্ক ডি প্রিন্সেস। এটি হচ্ছে বর্তমানে পিএসজি হোমভেন্যু।

এখানেই মাঠ মাতাতে আসেন বিশ্বের একঝাঁক নামি-দামি ফুটবলার। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ম্যান সিটিকে অভ্যর্থনা জানায় স্বাগতিক পিএসজি। মাঠের বাইরে যতই ভাব জমুক, একে অপরকে অভ্যর্থনা জানাক, কিন্তু মাঠের মধ্যে দু’দল পরস্পরের যে শত্রু সেটি আর বলার অপেক্ষা রাখেনা।

কে কাকে পেছনে ফেলে গোল আদায় করে নেবে আর জয় নিয়ে মাঠ ছাড়বে, সেই আলোচনাও কমবেশি হয়েছে ম্যাচ শুরু হওয়ার আগে। সে লক্ষ্যে মাঠের বাইরেও চলে তুমুল বাক যুদ্ধ। মাঠের মতো এখানেও কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলতে চাইবেনা। তবে পিএসজি-ম্যান সিটি ম্যাচটি মাঠে গড়ানোর আগেই দারুণ এক খেতাব জয় করে নিয়েছিল। বিশ্বের সবচেয়ে দামি ম্যাচ হয়েছে ইংলিশ আর ফ্রান্সের দুই জায়ান্ট দলের লড়াই।

পেপ গার্দিওলা আর পচেত্তিনোর দুই দলের মধ্যেই রয়েছে বিশ্বের সেরা সেরা কয়েকজন তারকা ফুটবলার। যাদের যে কোনো একজনের উপস্থিতিতেও ভক্ত-সমর্থকদের সব আলো কেড়ে নিতে যথেষ্ট। কারণ, দু’দলেই রয়েছে ট্রান্সফারে রেকর্ড সৃষ্টি করা একাধিক ফুটবলার। ফুটবলের ট্রান্সফার মার্কেট ডাটা তথ্য বলছে, পিএসজি স্কোয়াডের মূল্যই হচ্ছে ১ বিলিয়ন ইউরো (প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা) আর পিএসজির স্কোয়াডের মূল্য হচ্ছে ৯৯৭.২৫ মিলিয়ন ইউরো তথা (৯ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা)! দুই দলের একসঙ্গে মূল্য দাঁড়াচ্ছে ২ বিলিয়ন ইউরো অর্থাৎ প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা।

২০ হাজার কোটি টাকার ম্যাচটিই এখনও পর্যন্ত পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান ম্যাচ হিসেবে স্বীকৃতি আদায় করে নিয়েছে।
অনেক মিলের মধ্যে একটা জায়গা বেশি মিল রয়েছে, বিশ্বের সবচেয়ে দুটি দামি দল হলেও তাদের কেউই এখনও পর্যন্ত কোনো চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ট্রফি জিততে পারেনি। হতে পারেনি ইউরোপ সেরা ক্লাব। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ট্রফি জয়ের জন্য দু’দলই এবার বেশ কিছু নামী আর কার্যকরী খেলোয়াড় নিয়ে এসেছে নিজেদের দলে। এবারের মৌসুমে ম্যানসিটির সবচেয়ে দামি হিসেবে ট্রান্সফার ছিলেন জ্যাক গ্রেলিশ।

অ্যাস্টন ভিলা থেকে ইংল্যান্ডের ২৫ বছর বয়সী এই ফুটবলারকে ১১৭.৫ মিলিয়ন ইউরোয় কিনতে হয়েছে ম্যান সিটিকে। পিএসজির ট্রান্সফার তো ছিল ফুটবল দুনিয়ায় তোলপাড় করা। আশরাফ হাকিমি, সার্জিও রামোস, জিয়ানলুইজি ডোনারুমা, জর্জিনিও উইজনালডাম, এদের সবাইকে নিজেদের ডেরায় ভিড়িয়েছে ফ্রেঞ্চ ক্লাবটি। সর্বশেষ চমক হিসেবে এদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন ৬ বারের ব্যালন ডি অর জয়ী লিওনেল মেসি।

আগে থেকেই পিএসজিতে ছিলেন নেইমার, এমবাপ্পে, ডি মারিয়াদের মত নামী ফুটবলার। পরিসংখ্যান বলছে, পিএসজির আক্রমণভাগের মূল্যই হচ্ছে ৩৪০ মিলিয়ন ইউরো। কিলিয়ান এমবাপ্পের মূল্য যেখানে ১৬০ মিলিয়ন ইউরো, সেখানে নেইমারের ১০০ মিলিয়ন এবং মেসির মূল্য ৮০ মিলিয়ন ইউরো।

পিছিয়ে থাকছেনা পেপ গার্দিওলার দলও। ম্যানসিটির আক্রমণভাগের খেলোয়াড়দের মূল্য ২৭০ মিলিয়ন ইউরো। যেখানে কেভিড ডি ব্রæইনের মূল্য ১০০ মিলিয়ন, রাহিম স্টার্লিংয়ের মূল্য ৯০ মিলিয়ন আর ফিল ফোডেনের মূল্য ৮০ মিলিয়ন ইউরো মিলিয়ে এই অর্থ হয়েছে। আর তাই দুই দলের বাজার মূল্যকে এক করলে প্রায় ২০০ কোটি ইউরো দাঁড়ানোয় এই ম্যাচকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফুটবল ম্যাচ’ আখ্যা দেওয়াটাকে তাই বাড়াবাড়ি বলার কোন প্রকার সুযোগ নেই।

উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন দুই ক্লাবের মধ্যকার এই ম্যাচকে ইতোমধ্যে ‘বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফুটবল ম্যাচ’ বলে আখ্যা দিয়েছে আলোচিত স্প্যানিশ পত্রিকা মার্কা। যদিও অর্থকড়ির জন্য অনেক আগে থেকেই বিখ্যাত এই দুই ক্লাব। সাম্প্রতিক সময়ে সারা বিশ্বের তারকাদের সমন্বয়ে শক্তিশালী দুটি একাদশ গড়ে তুলতেও সক্ষম হয়েছে সময়ের আলোচিত এই দুই দল। তাই নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, এর আগে এতো এতো ’নামী-দামি’ খেলোয়াড়দের একসাথে ফুটবল মাঠে দেখেনি বিশ্ব।

তবে এই দুই দলের মূল্যমান এমনিতেই বাড়েনি। এ সময়ে এই দুই দলের কাছাকাছি অর্থ খরচও করেনি বিশ্বের অন্য কোনো ক্লাব। এই দুই দলের কল্যানে বাম্পার গ্রীষ্মকালীন দলবদল হয়েছে এবার। সাম্প্রতিক সময়েল মতো এই গ্রীষ্মেও দলবদলের বাজারে প্রচুর খরচ করেছে পিএসজি ও ম্যানসিটি। অ্যাস্টন ভিলা থেকে ১১.৭ কোটি ইউরোর বিনিময়ে জ্যাক গ্রিলিসকে দলে ভিড়িয়েছে সিটি দেখিয়েছে বড় চমক। এটি যেমন মৌসুমের সবচেয়ে দামী দলবদল তো বটেই, যেকোনো ইংলিশ ফুটবলারের জন্যই এটি সর্বোচ্চ ট্রান্সফার ফি। আর ওদিকে স্মরণকালের সবচেয়ে বাম্পার ট্রান্সফার উইন্ডো পার করেছে পিএসজি।

তবে টাকার ঝনঝনানিতে ’মেসি’ ছিলেন বড় ফ্যাক্টর। এসবকে ছাপিয়ে দামী ম্যাচের মূল কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেন মেসি। ম্যাচ নামা অনিশ্চিত হলেও গোল করে পিএসজি ম্যানেজার মাউরিসিও পচেত্তিনোর আস্থার ঠিকঠাক প্রতিদানও দিয়েছেন এই আর্জেন্টাইন সুপারষ্টার। পিএসজির জার্সিতে প্রথম গোলটিই হয়ে থাকল অনেক বেশি দামী। এদিকে মেসি, হাকিমি, দোন্নারুমা, রামোসদের দলে ভিড়িয়েও কিছুটা ছন্নছাড়া অবস্থায় রয়েছে পিএসজি।

কাড়ি কাড়ি অর্থ খরচ করে এই তারকাগুচ্ছকে আনলেও কোচ পচেত্তিনোর পরিকল্পনায় পুরোপুরি জায়গা করে নিতে পারেননি এখনো তারা। বরং পুরনো খেলোয়াড়দেরই এই মুহূর্তে ভরসা রাখছেন এই আর্জেন্টাইন। তবে ধীরে ধীরে হয়তো পরিস্থিতিটা আরও ভাল হবে। ম্যানসিটির বিপক্ষে ম্যাচেই প্রথম দেখিয়েছেন তারা।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...