হঠাৎ কেন অশ্বিন!
মূলত স্পিনে অস্ত্র বাড়াতেই অশ্বিনকে স্কোয়াডে রেখেছে বিসিসিআইয়ের নির্বাচক প্যানেল। বিশ্বকাপ সংযুক্ত আরব আমিরাতে, যেখানে বিশ্বকাপের আগেই অনুষ্ঠিত হবে আইপিএল। ফলে উইকেটগুলো হবে ক্লান্ত। আর দুবাইয়ের উইকেট শারজাহ বা আবুধাবির তুলনায় একটু মন্থর। আর বিশ্বকাপ এগোনোর সাথে সাথে উইকেট আরো মন্থর হতে পারে। ফলে, পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতেই টিম কম্বিনেশনে হুট করে আসলেন অশ্বিন। অশ্বিন এই চ্যালেঞ্জ উৎরাতে পারবেন কি না - তাঁর জন্য সময়ের অপেক্ষা করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।
তিনি নি:সন্দেহে ভারতের ইতিহাসের সেরা স্পিনারদের একজন। টেস্টটা নিয়মিতই খেলেন, অন্তত দেশের মাটিতে খেলা হলে তাঁর কোনো বিকল্প নেই। তবে, সীমিত ওভারে তাঁর সাথে ভারত এক রকম সম্পর্কটা ছিন্নই করে ফেলেছিল বলা যায়। রঙিন পোশাকে ২০১৭ সালের সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের পর তিনি ব্রাত্যই ছিলেন। বোঝাই যাচ্ছিল, ভারতের ওয়ানডে বা টি-টোয়েন্টির পরিকল্পনায় তিনি নেই।
তবে, সব কিছু মিথ্যা প্রমাণিত হল যখন আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে সামনে রেখে ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করল বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই)। সেই দলে দীর্ঘ চার বছর পর চমক দেখিয়ে সুযোগ পেয়েছেন অফ স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন।
লাল বলে ভারতের স্পিন বিভাগের এই কান্ডারী এবার ভেলকি দেখানোর অপেক্ষায় সাদা বলে। সবাইকে চমকে দিয়েই ১৫ সদস্যের দলে জায়গা করে নেন অশ্বিন। অভিজ্ঞতা আর গত আসরে আমিরাতের মাটিতে ভালো পারফরম্যান্সই নির্বাচকদের বাধ্য করেছে তাকে দলে বিবেচনা করতে।
সবশেষ ২০১৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেন তিনি। ওই একই সফরেই জাতীয় দলের জার্সি গায়ে সবশেষ ওয়ানডে খেলেন তিনি। এরপর চার বছর আর রঙিন জার্সিতে দেখা যায়নি এই অফ স্পিনারকে। সাদা পোশাকে নিয়মিত মুখ হলেও ফিরতে পারেননি রঙিন পোশাকে। তরুন স্পিনারদের পারফরম্যান্স আর দলে এতো অপশন দেখার পর কখনো হয়তো নিজেকে পুনরায় রঙিন জার্সিতে দেখবেন সেটি হয়তো কল্পনাও করেননি অশ্বিন।
আরব আমিরাতের কন্ডিশন আর উইকেট বিবেচনায় স্কিলের সাথে সাথে প্রয়োজন অভিজ্ঞতারও। যার আপাদমস্তকটাই আছে অশ্বিনের মধ্যে। তাই তো চার বছর রঙিন পোশাকে দলের বাইরে থাকার পরেও সুযোগ পেয়ে গেলেন বিশ্বকাপের মঞ্চে।
২০২০ সালের ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) ১৫ ম্যাচে ৭.৬৭ ইকোনমিতে ১৩ উইকেট শিকার করেন অশ্বিন। চলতি বছর আইপিএলের প্রথম অংশে ৫ ম্যাচে ৭.৭৪ ইকোনমি রেটে শিকার করেন মাত্র এক উইকেট। ২০২০ আইপিএলে আরব আমিরাতে তার অনবদ্য বোলিং পারফরম্যান্স আর অভিজ্ঞতার মিশেলে বিশ্বকাপের দলে সুযোগ করে দেয় অশ্বিনকে।
ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টির পর দেশের বাইরের মাটিতে টেস্ট ফরম্যাটেও তিনি বেশ উপেক্ষিত। চলতি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে ৪ ম্যাচে এখনো পর্যন্ত এক ম্যাচেও সুযোগ পাননি তিনি। ক্যারিয়ারের প্রায় শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে হয়তো ভাবছিলেন প্রাপ্তির খাতায় অর্জনের পাল্লাটা আর কতটা ভারি করতে পারবেন। নাকি শেষ সময়টা বেঞ্চেই কাটাবেন বেশিরভাগ সময়।
এই ভাবনার মাঝেই সুযোগ পেয়ে গেলেন রঙিন পোশাকে জাতীয় দলে। তাও কিনা চার বছর বাদে সরাসরি আরব আমিরাতের মঞ্চেই দেখা যাবে এই তারকা অফস্পিনারকে। চলতি বছর আইপিএলের প্রথম পর্বে নিজের সেরা ছন্দে দেখা না গেলেও পরের পর্বে নিজের সেরাটা দিয়ে চাইবেন নজরকাঁড়া কিছু করতে। আর তা পারলেই মূল একাদশে জায়গা পাঁকা করতে খুব বেশি বেগ পেতে হবে না ভারতীয় ক্রিকেটের অভিজ্ঞ এই স্পিন অস্ত্রকে।
মূলত স্পিনে অস্ত্র বাড়াতেই অশ্বিনকে স্কোয়াডে রেখেছে বিসিসিআইয়ের নির্বাচক প্যানেল। বিশ্বকাপ সংযুক্ত আরব আমিরাতে, যেখানে বিশ্বকাপের আগেই অনুষ্ঠিত হবে আইপিএল। ফলে উইকেটগুলো হবে ক্লান্ত। আর দুবাইয়ের উইকেট শারজাহ বা আবুধাবির তুলনায় একটু মন্থর। আর বিশ্বকাপ এগোনোর সাথে সাথে উইকেট আরো মন্থর হতে পারে। ফলে, পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতেই টিম কম্বিনেশনে হুট করে আসলেন অশ্বিন। অশ্বিন এই চ্যালেঞ্জ উৎরাতে পারবেন কি না – তাঁর জন্য সময়ের অপেক্ষা করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।