অলরাউন্ডার জাদেজা জয়রথের আরও এক কাণ্ডারি
ব্যাট হাতে দারুণ এক কার্য্যকর এক ইনিংসের পর, বল হাতে ফাইফার। কার্য্যকারিতার এক উজ্জ্বল মূর্তিতে পরিণত হলেন রবীন্দ্র জাদেজা।
ব্যাট হাতে দারুণ এক কার্য্যকর এক ইনিংসের পর, বল হাতে ফাইফার। কার্য্যকারিতার এক উজ্জ্বল মূর্তিতে পরিণত হলেন রবীন্দ্র জাদেজা। দলের প্রয়োজনে যে ব্যাট চালানো থেকে শুরু করে বল হাতে ছড়ি ঘোরানো সবকিছুতে এখনও ক্ষুরধার জাদেজা। সেই দৃশ্যপটের মঞ্চায়ন হলো কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে।
জাদেজা ব্যাট হাতে যখন ক্রিজে এলেন ততক্ষণে দারুণ সংগ্রহের ভীত গড়া হয়ে গেছে। সেট ব্যাটার বিরাট কোহলি তাকে স্বাগত জানালেন বাইশ গজে। জাদেজার দায়িত্ব তখন দ্রুত কিছু রান তুলে দেওয়া। রবীন্দ্র জাদেজা অবশ্য সেই কাজটা ভাল করেই করতে জানেন। করলেনও তাই।
৩ চার ও ১ ছক্কায় ২৯ রান যুক্ত করলেন স্কোরবোর্ডে। ১৫ বলে খেলা সেই ইনিংসটিই শেষ অবধি ভারতকে ৩২০ রান টপকাতে সহয়তা করেছে তা বলাই চলে। শুরুর দশ ওভারের পর ইডেন গার্ডেন্সের উইকেট বলকে আকড়ে ধরতে শুরু করে। তাতে করে ব্যাটারদের ব্যাট চালাতে বেশ ধুকতেই হয়েছে। বিরাট কোহলির মত ইনফর্ম ব্যাটার বেশ রয়েসয়ে ব্যাটিং করেছেন।
তেমন এক উইকেটে এসে রবীন্দ্র জাদেজা গুরুত্বপূর্ণ কিছু রান তুলে দেন ভারতের পক্ষে। তবে তখনও তার কাজ শেষ হয় যায় না। সেটা বেশ ভাল করেই জানা জাদেজার। তাইতো বল হাতে তিনি দেখালেন ভেল্কি। গ্রিপ হওয়া উইকেটের সহয়তা নিয়ে কুপকাত করলেন প্রোটিয়াদের দানবীয় ব্যাটিং অর্ডারকে।
অবশ্য উইকেট শিকারের শুরুটা মোহাম্মদ সিরাজই করেছেন। ধুকতে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়কের চাপটা যেন কমানোর চেষ্টাই করলেন জাদেজা। তাকে আর বেশিক্ষণ টিকতে দিলেন না বাইশ গজে। দূর্দান্ত এক বলে পরাস্ত বোল্ড হয়ে ফেরেন টেম্বা বাভুমা। খানিকটা জোরের উপর করা বলটায় খানিকটা টার্ন করে আঘাত হানে অফ স্ট্যাম্পে।
বিরাট কোহলির ৪৯ তম সেঞ্চুরির ম্যাচটা হারতে দেওয়া যায় না। তাইতো জাদ্দু বেশ হিংস্র হয়ে উঠলেন। ক্ষুধার্ত এক শিকারি বনে গেলেন তিনি। এক এক করে এনরিখ ক্লাসেন, ডেভিড মিলার, কেশভ মহারাজ কাগিসো রাবাদাদের উইকেট তুলে নেন জাদেজা। ৫ উইকেট শিকারে তার খরচা মোটে ৩৩ রান।
ব্যাটে-বলে দূর্দান্ত পারফরম করেন বা-হাতি এই অলরাউন্ডার। দলের প্রয়োজনে দ্রুতগতির এক ক্যামিও ইনিংস খেলেছেন। এরপর আবার প্রতিপক্ষের অর্ধেক ব্যাটারকে পুরেছেন নিজের পকেটে। এমন একজন ইউটিলিটি ক্রিকেটার তো সব দলেরই প্রথম চাহিদা।
এবারের বিশ্বকাপে ভারতের এক ঝাঁক পারফর্মারদের ভীরে জাদেজার পারফরমেন্স ততটা নজর কাড়েনি। এবারের বিশ্বকাপে ব্যাট হাতে চার ম্যাচে মাঠেই নামেননি জাদেজা। টপ অর্ডারদের দূর্দান্ত ফর্মের কারণেই শেষের দিকে প্রয়োজন পড়ে না জাদেজাকে। তবুও যখনই সুযোগ পেয়েছেন ব্যাট হাতে অবদান রাখার চেষ্টা করেছেন।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৯ রানে অপরাজিত থেকেছেন। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩৫ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দ্রুতগতিতে তোলা ২৯ রান। যখনই দলের প্রয়োজন হয়েছে তাকে তিনি ব্যাট হাতে কার্য্যকর সব ইনিংস উপহার দিয়েছেন।
বল হাতেও টুকটাক উইকেট শিকার করেছেন জাদেজা। তবে মোহাম্মদ শামি, মোহাম্মদ সিরাজদের ভীষণ আগ্রাসনের সামনে তুচ্ছে ঠেকেছে সেসব। তবে তিনিও আর খোলসে বন্দী থাকতে চাননি। বল হাতে তাই নিজের সামর্থ্যের প্রমাণই রাখলেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। আরও একবার দলকে ভরসা দিলেন তার কার্য্যকর উপস্থিতি জানান দিয়ে।