Social Media

Light
Dark

ক্যান্ডি ২০০০, ক্লুজনার-রানাতুঙ্গা দ্বৈরথ

২০০০ সালের ঐতিহাসিক ক্যান্ডি টেস্ট। ঐতিহাসিক কেন বলছি? তার কারণ এটাই ছিল শ্রীলঙ্কার মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম টেস্ট জয়। আর সেই জয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকান কিংবদন্তি ল্যান্স ক্লুজনার ওরফে জুলু।

ক্যান্ডির আসগিরিয়া স্টেডিয়ামের উইকেট ছিল র‍্যাংক টার্নার। প্রথম দিন থেকেই ধুলো উড়ছিল! যথারীতি শ্রীলঙ্কা নেমেছিল তিন বিশেষজ্ঞ স্পিনার আর এক স্পিন অলরাউন্ডার নিয়ে। স্পিন গ্রেট মুত্তিয়া মুরালিধরণ তখন ক্যারিয়ারের পিক ফর্মে, সাথে ছিলেন এখন আম্পায়ার বনে যাওয়া কুমার ধর্মসেনা, উপল চন্দনা আর সনাথ জয়সুরিয়া।

মুরালি-ধর্মসেনাদের বোলিং তোপে প্রথম ইনিংসে মাত্র ৩৪ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। তারপর বাউচারের রেজিলিয়েন্স আর ক্লুজনারের কাউন্টার অ্যাটাকে ঘুরে দাঁড়ায় দলটি। বাউচারের লড়াকু ৬০ আর ক্লুজনারের বিধ্বংসী ১১৮ রানের সৌজন্যে দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ২৫৩। দশ উইকেটের ৮টাই নেন স্পিনাররা।

ওপেনার মারভান আতাপাত্তুর সেঞ্চুরি (১২০) আর অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গার হাফ সেঞ্চুরিতে প্রথম ইনিংসে ৫৫ রানের হেলদি লিড পায় শ্রীলঙ্কা। লক্ষণীয় ব্যাপার, দুই স্পিনার নিকি বোয়ে আর বিচিত্র বোলিং অ্যাকশনের পল অ্যাডামস মিলে ৩০ ওভার বল করেও ছিলেন উইকেটশূন্য!

দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। অলরাউন্ডার জ্যাক ক্যালিস লড়াকু হাফ সেঞ্চুরি পাওয়ার পরও ২৩১ রানের বেশি করতে পারেনি দলটি।

ম্যাচের চতুর্থ ইনিংসে জয়ের জন্য শ্রীলঙ্কার টার্গেট ১৭৭ রান। জবাব দিতে নেমে শন পোলকের প্রথম বলেই এলবিডব্লু হয়ে ফিরে যান আতাপাত্তু (০)। রানের খাতা খুলতে ব্যর্থ আরেক ওপেনার সনাথ জয়সুরিয়াও, ডানহাতি পেসার ন্যান্টি হেওয়ার্ডের বলে তিনিও ধরা দেন লেগ বিফোরের ফাঁদে। তবে রানাতুঙ্গার অনবদ্য ৮৮ আর রাসেল আরনল্ডের সংগ্রামী ৪০ রানের সুবাদে শ্রীলঙ্কা প্রায় জিতেই গিয়েছিল।

এই ইনিংসে অবশ্য দুর্দান্ত বোলিং করেন অভিজ্ঞ বাঁ-হাতি স্পিনার নিকি বোয়ে (৩/২৪)। রানাতুঙ্গা, আরনল্ড দুজনকেই প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান তিনি। তবে জয়ের পথে কাঁটা হয়ে থাকা ‘নাম্বার সেভেন’ ধর্মসেনা, ‘নাম্বার এইট’ উপল চন্দনা, ‘নাম্বার নাইন’ চামিন্দা ভাসকে ফিরিয়ে স্বাগতিকদের কফিনে শেষ পেরেকটা ঠুকেছিলেন ল্যান্স ক্লুজনার।

শ্রীলঙ্কা অলআউট ১৬৯ রানে! স্নায়ুক্ষয়ী ম্যাচে মাত্র ৭ রানের অবিশ্বাস্য জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে শন পোলকের দল। যৌথভাবে ম্যাচ সেরার পুরস্কার পান ল্যান্স ক্লুজনার আর অর্জুনা রানাতুঙ্গা। অর্জুনা নিশ্চয়ই এই পুরস্কারের চেয়ে জয়টাই বেশি চাচ্ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link