যুব বিশ্বকাপের বড় তারকা

এই অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ বিশ্ব ক্রিকেটে বেশকিছু নানন্দিক এবং সুদক্ষ খেলোয়াড় উপহার দিয়েছে বিশ্ব ক্রিকেটকে। সেই ১৯৮৮ সালের উদ্বোধনী আসর থেকে শুরু করে এখন অবধি। যারা কিনা পরবর্তীতে ক্রিকেটের আকাশের উজ্জ্বলতম তারকা হয়ে শোভা বাড়িয়েছে। আজকে আলোচনা হবে ২০০৮ অবধি হওয়া সবগুলো আসর থেকে উঠে আসা তারকা ক্রিকেটারদের নিয়ে।

অনূর্ধ্ব- ১৯ বিশ্বকাপ, নতুন তারকারদের এক আগমনী মঞ্চে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ দলের উদাহরণই ধরা যাক। ২০২০ অনূর্ধ্ব বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য শরিফুল ইসলাম ও মাহমুদুল হাসান জয় আজকে বিদেশের মাটিতে দেশকে ঐতিহাসিক সব জয় এনে দিতে নিজেদের সর্বোচ্চ অবদানটুকু রেখে চলেছে। তাছাড়া এই অনূর্ধ্ব-১৯ থেকে উঠে আসা মেহেদি মিরাজ তো বাংলাদেশ জাতীয় দলের নিয়মিত মুখ।

এই অনূর্ধ্ব- ১৯ বিশ্বকাপ বিশ্ব ক্রিকেটে বেশকিছু নানন্দিক এবং সুদক্ষ খেলোয়াড় উপহার দিয়েছে বিশ্ব ক্রিকেটকে। সেই ১৯৮৮ সালের উদ্বোধনী আসর থেকে শুরু করে এখন অবধি। যারা কিনা পরবর্তীতে ক্রিকেটের আকাশের উজ্জ্বলতম তারকা হয়ে শোভা বাড়িয়েছে। আজকে আলোচনা  ২০০৮ অবধি হওয়া সবগুলো আসর থেকে উঠে আসা তারকা ক্রিকেটারদের নিয়ে।

  • ১৯৮৮  

অনূর্ধ্ব- ১৯ বিশ্বকাপের যাত্রা শুরুর বছর ১৯৮৮। সেই সময় যুব বিশ্বকাপ নামকরণে অস্ট্রেলিয়ায় বসে প্রথম আসর। উদ্বোধনী আসরে ঘরের মাঠ থেকে শিরোপা আর বাইরে যেতে দেয়নি অজি যুবারা। ফাইনালে পাকিস্তানকে হারিয়ে প্রথম যুব বিশ্বকাপ শিরোপা দিয়ে নিজেদের ট্রফি ক্যাবিনেটটা সুজজ্জিত করে অস্ট্রেলিয়ান অনূর্ধ্ব- ১৯ ক্রিকেটারেরা।

সেই বিশ্বকাপ পরবর্তী সময় ক্রিকেট বিশ্ব পেয়েছিল দুর্দান্ত কিছু খেলোয়াড়। পাকিস্তানের ইনজামাম-উল হক ফাইনালে দলের প্রয়োজনে ব্যাট হাতে গুরুত্বপূর্ণ ৩৭ রান করেছিলেন। যদিও তা তাঁদের পরাজয় এড়াতে পারেনি। অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ব্রেট উইলিয়ামন্স ফাইনালে সেঞ্চুরি করার পাশাপাশি ৪৭১ রান করে হয়েছিল টুর্নামেন্টের সেরা রান সংগ্রাহক।

মাইক আথারটন, ব্রায়ান লারা, সনাথ জয়াসুরিয়াদের মত তারকা ক্রিকেটাররা সেই ১৯৮৮ বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছিলেন যথাক্রমে ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও শ্রীলঙ্কার হয়ে। তারপরে তাঁদের কীর্তি তো সকলেরই জানা।

  • ১৯৯৮ 

প্রায় এক দশকের নির্বাসন কাটিয়ে ১৯৯৮ সালে আবার মাঠে গড়ায় যুব বিশ্বকাপ। এরপর থেকে যুব বিশ্বকাপ ধারাবাহিকতা মেনে প্রতি দুই বছর অন্তর অন্তর অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। ১৯৯৮ সালের যুব বিশ্বকাপের আসরটি বসেছিল দক্ষিণ আফ্রিকায়। সেবারই প্রথম যুব বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা, তাঁদের সাথে সেই টুর্নামেন্টেই অভিষেক ঘটে বাংলাদেশের।

১৯৯৮ সালে অনূর্ধ্ব- ১৯ বিশ্বকাপের শিরোপা নিজেদের করে নিয়েছিল ইংল্যান্ড। স্টিফেন পিটার্সের ১০৭ রানের উপর ভর করে নিউজিল্যান্ডের দেওয়া ২৪১ রানের টার্গেট টপকে যায় ইংল্যান্ড। সেই বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে পরবর্তীতে বিশ্ব ক্রিকেটকে মাতানো ক্রিস গেইল। ৩৬৪ রান করেছিলেন ক্রিস গেইল। তাছাড়া ভারতকে সুপার আট পর্যন্ত নিয়ে যেতে সহয়তা করেছিলেন বীরেন্দ্র শেবাগ ও হরভজন সিং।

  • ২০০০ 

লঙ্কান দ্বীপপুঞ্জে ২০০০ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের আয়োজন হয়েছিল ২০০০ সালে। প্রথম আসরের অস্ট্রেলিয়ার মতো নিজেদের ঘরেই শিরোপা রেখে দেওয়ার প্রত্যয় নিয়ে ফাইনাল অবধি উঠেছিল শ্রীলঙ্কা। তবে ভারতে কাছে হেরে যেতে হয়েছিল সেবার। প্রথমবারের মতো শিরোপা দখল করে নেয় ভারত।

দক্ষিণ আফ্রিকা জাতীয় দলের কিংবদন্তি অধিনায়ক গ্রায়েম স্মিথ সেই আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়েছিলেন ৩৪৮ রান করে। অপরদিকে, পাকিস্তানের জাহিদ সাইদ ১৫ উইকেট নিয়ে হয়েছিলেন টুর্নামেন্ট সেরা উইকেট শিকারি। নিউজিল্যান্ডের দুই সহোদর ক্রিকেটার ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ও ন্যাথান ম্যাককালাম অংশ নিয়েছিলেন সেই বিশ্বকাপে। ১৭ বছর বয়সের পাকিস্তানের শোয়েব মালিক দ্বিতীয়বার অনূর্ধ্ব- ১৯ বিশ্বকাপের জন্যে পাকিস্তান দলে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিলেন।

  • ২০০২ 

নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হওয়া ২০০২ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো দ্বিতীয় দফা শিরোপা জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। এই টুর্নামেন্টে প্রথমবারের মতো ফাইনালে ওঠা দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে দ্বিতীয় শিরোপা নিজেদের ঘরে তোলে অজি যুবারা।

পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে জাতীয় দলকে নেতৃত্ব দেওয়া ক্যামেরন হোয়াইট ৪২৩ রান করে রান সংগ্রাহকদের তালিকার শীর্ষে ছিলেন। সেমিফাইনালে ৬৪ রানের এক অনবদ্য ইনিংস খেলেছিলেন ওয়াইট ডোয়েন ব্রাভো লেন্ডন সিমন্সের ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।

  • ২০০৪ 

ভারত জাতীয় দলের ওয়ানডেতে নিকট অতীতের নিয়মিত মুখ শিখর ধাওয়ান এক আসরে সর্বোচ্চ রান করার রেকর্ড গড়ার পাশাপাশি বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হওয়া আসরের সর্বাধিক রান সংগ্রাহকও তিনিই ছিলেন। ধাওয়ান ৫০৫ রান করে নতুন যুবাদের জন্য একটা লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে দিয়েছিলেন।

অন্যদিকে, প্রথমবারের মতো কোন বাংলাদেশি খেলোয়াড় ২২ উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্ট সেরা বোলারের খেতাব জিতেছিলেন। তিনি হলেন এনামুল ইসলাম জুনিয়র। তবে সেই আসরের চ্যাম্পিয়ন দল ছিলো পাকিস্তান। ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার দলটি শিরোপা নিজের ঘরে তোলে।

  • ২০০৬ 

ইতিহাসের প্রথম ও এখন অবধি শেষ বারের মতো নিজের শিরোপা ডিফেন্ড করার কৃতিত্ব রয়েছে পাকিস্তানের। শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত হওয়া সেই আসরের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত-পাকিস্তান। ফাইনালে কেবল মাত্র ১০৯ রান করার পরও পাকিস্তান শিরোপা জিতেছিল ৩৮ রানে।

সেই টুর্নামেন্টকে বেশকিছু বর্তমান তারকা খেলোয়াড়ের উত্থানের টুর্নামেন্ট হিসেবেও আখ্যায়িত করা যায়। কেননা সেই টুর্নামেন্ট অংশ নিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, রোহিত শর্মা, ডেভিড ওয়ার্নার, ইয়ন মরগ্যানদের মত বর্তমান তারকারা।

  • ২০০৮

অস্ট্রেলিয়া ও পাকিস্তানের পর ভারত তৃতীয় দল হিসেবে দ্বিতীয় দফা শিরোপার স্বাদ পায়। ২০০৮ সালে মালয়শিয়াতে বসেছিল সেবারের যুব বিশ্বকাপের আসর। ফাইনালে ভারত বৃষ্টি আইনে ১২ রানে হারিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকাকে। দ্বিতীয় দফা প্রোটিয়া যুবাদের স্বপ্নভঙ্গ হয়।

ভারতের বর্তমান সময়ে অন্যতম সেরা ব্যাটার বিরাট কোহলি ছিলেন সেই বিশ্বকাপের অংশ। এছাড়াও বর্তমানে নিউজিল্যান্ড জাতীয় দলকে প্রতিনিধিত্ব করা কেইন উইলিয়ামসন, ট্রেন্ট বোল্ট ও টিম সাউদিরাও ছিলেন সেই টুর্নামেন্টে। এমনকি টিম সাউদি হয়েছিলেন টুর্নামেন্ট সেরা।

 

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...